![অনুদান পাওয়ার সাত বছর পর মুক্তি পাচ্ছে ‘আজব কারখানা’](https://i0.wp.com/bmdb.co/wp-content/uploads/2024/06/ajob_karkhana1_bmdb_image.jpg?resize=150%2C150&ssl=1)
১০৪ বছরের পুরোনো আইনে বন্ধ ‘গলুই’ প্রদর্শনী
এস এ হক অলিক পরিচালিত এবং শাকিব খান ও পূজা চেরি অভিনীত ‘গলুই’ প্রেক্ষাগৃহের পাশাপাশি জামালপুরের কয়েকটি অডিটোরিয়ামে মুক্তি পেয়েছে। কিন্তু মুক্তির এক সপ্তাহের মাথায় ১০৪ বছরের পুরোনো ব্রিটিশ আইনে প্রদর্শনী বন্ধ করে দিয়েছেন স্থানীয় জেলা প্রশাসক।
![](https://i0.wp.com/bmdb.co/wp-content/uploads/2022/05/golui_shakib_puja_bmdb_image.webp?resize=858%2C571&ssl=1)
সরকারি অনুদানের সিনেমাটির শুটিং হয়েছিল জামালপুরের বিভিন্ন এলাকায়। শুটিং দেখতে ভিড় জমিয়েছিলেন লাখো মানুষ। স্বাভাবিকভাবেই সিনেমাটি দেখার জন্য উদ্গ্রীব ছিলেন জামালপুরের সিনেমাপ্রেমীরা।
জানা যায়, জামালপুরের মেলান্দহ উপজেলার আশা সিনেমা হল ব্যতীত অন্য কোথাও কোনো হল না থাকায় পরিচালক এস এ হক অলিক বিভিন্ন অডিটোরিয়ামে ছবিটি প্রদর্শনের ব্যবস্থা করেন। এর মধ্যে ছিল জামালপুর শিল্পকলা একাডেমির নতুন অডিটোরিয়াম, জামালপুরের মাদারগঞ্জে নুরুন্নাহার মাল্টিপারপাস অডিটোরিয়াম ও ইসলামপুরের ফরিদুল হক খান দুলাল অডিটোরিয়াম।
এ অডিটরিয়ামগুলোতে ছবিটির প্রদর্শনী বন্ধের নির্দেশনা দিয়েছেন জামালপুরের ডিসি মোরশেদা জামান। গত তিন দিন ধরেই বন্ধ রয়েছে ইসলামপুরের ফরিদুল হক খান দুলাল অডিটোরিয়ামে ছবিটির প্রদর্শনী। অপরদিকে মাদারগঞ্জের নুরুন্নাহার মাল্টিপারপাস অডিটোরিয়ামে আজকের (৯ মে) পর থেকে আর ছবিটি চলবে না। যেকোনো মুহূর্তে বন্ধ হয়ে যেতে পারে জামালপুর শিল্পকলা একাডেমি একাডেমির অডিটোরিয়ামের প্রদর্শনীও।
কেন বন্ধ করা হচ্ছে ছবিটির প্রদর্শনী? উত্তরে এস এ হক অলিক বলেন, ১৯১৮ সালের একটি পুরোনো আইনের দোহাই দিয়ে জামালপুরের ডিসি সিনেমাটির প্রদর্শনী বন্ধ করেছেন।
ওই আইনে আছে, সিনেমা হল ব্যতীত অন্য কোথাও বাণিজ্যিকভাবে সিনেমা প্রদর্শন করা যাবে না। একমাত্র মেলান্দহ ছাড়া জামালপুরের আর কোথাও কোনো সিনেমা হল নেই। সিনেমাটি দেখানোর বিকল্প পথ হিসেবে আমরা অডিটরিয়ামগুলোকে বেছে নিয়েছিলাম। যেখানে প্রধানমন্ত্রী পর্যন্ত সিনেমা শিল্পকে সহায়তা করতে বলেছেন সেখানে জামালপুরের ডিসির এমন নির্দেশনায় আমরা সত্যিই হতবাক হয়েছি। ডিসির এমন অসহযোগিতা কাম্য নয়।
ইতিমধ্যে এ পদক্ষেপের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়েছেন অনেকে। চলচ্চিত্র গবেষক মীর শামসুল আলম বাবু বলেন, ‘চলচ্চিত্র কি শিল্পকলার মধ্যে পরে না? শিল্পকলা একাডেমীতে একটি চলচ্চিত্র বিভাগ আছে, সেটি কার জন্য? শিল্পকলা একাডেমী কার জন্য? একটা সেন্সর পাওয়া চলচ্চিত্রকে কেন শত বছরের পুরাতন আইন দিয়ে প্রদর্শণী বন্ধ করে দিতে হবে?’
প্রতিবাদ করে চলচ্চিত্র নির্মাতা অপূর্ব রানা বলেন, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের অনুদানপ্রাপ্ত চলচ্চিত্র ‘গলুই’-এর প্রদর্শনী বন্ধ করেছে জামালপুরের ডিসি মহোদয়! করতেই পারেন সেটা তার নীতিমালার মধ্যে পড়লে। আমার ব্যক্তিগত কথা হলো—ঈদের চলচ্চিত্রগুলো যেখানে এই দুঃসময় কাটিয়ে চলচ্চিত্র শিল্প বাঁচানোর চেষ্টা করছে সেখানে এই সামান্য অজুহাতে (শিল্পকলা একাডেমিতে সিনেমা প্রদর্শনী করা যাবে না) প্রদর্শনী বন্ধ করা উচিত হয়েছে? এর তীব্র প্রতিবাদ জানাই।
প্রশ্ন রেখে তিনি বলেন, আমি যতটুকু জানি শিল্পকলা একাডেমির অনুমতি নিয়েই চলচ্চিত্রটির প্রদর্শনের আয়োজন করেছিল প্রযোজনা সংস্থা। শিল্পকলা একাডেমি কার জন্য? বিনোদন শিল্পের সর্বোচ্চ শিল্প যেখানে চলচ্চিত্র সেখানে একটি সরকারি অনুদান পাওয়া সম্পূর্ণ পারিবারিক চলচ্চিত্র ‘গলুই’-এর রানিং শো বন্ধ করে দেয়া কতটা যৌক্তিক? আমার মনে হয় চলচ্চিত্র প্রেমী সকল মানুষের এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানানো উচিত।
পরিচালক মোস্তাফিজুর রহমান মানিক লেখেন, হল সংকট এর এই সময়ে, ’সিনেমা হল ব্যতীত অন্য কোথাও বাণিজ্যিকভাবে সিনেমা প্রদর্শন করা যাবে না’- এই আইন রহিত করা হোক। জামালপুরের অডিটোরিয়াম গুলোতে, গলুই প্রদর্শন বন্ধ করার প্রতিবাদ জানাই।
গ্রামীণ প্রেক্ষাপটে নির্মিত হয়েছে ‘গলুই। এতে শাকিব অভিনয় করেছেন লালু চরিত্রে, আর পূজা আছেন মালার ভূমিকায়। তাদের সঙ্গে আরও অভিনয় করেছেন আজিজুল হাকিম, সুচরিতা, আলী রাজ, সমু চৌধুরী প্রমুখ। সরকারি অনুদানের পাশাপাশি সিনেমাটির সহ-প্রযোজনায় আছেন খোরশেদ আলম খসরু।