২০২১: ওয়েব ও টিভি নাটকের গানগুলো
কিছু কিছু বাংলা নাটক দেখলে মনে হয় গানের জন্যই বানানো হয়েছে। গানের এতো গুরুত্ব! অনেক সময় আরোপিত হয়ে উঠে, নাটকের গভীরতা হারিয়ে যায়। আবার কিছু কিছু গান নাটকটিকে অন্য মাত্রায় নিয়ে যায়, পাশাপাশি জনপ্রিয় হলে গানের সঙ্গে সঙ্গে নাটক পেয়ে যায় দর্শকপ্রিয়তা। এখন ওয়েব ফিল্ম বা সিরিজেও গান পাচ্ছে বিশেষ গুরুত্ব।
২০২১ সালে টিভি ও ওয়েব মিলিয়ে অন্যতম সেরা দশ গান নিয়ে এই আয়োজন—
১. রূপকথার জগতে: ‘নেটওয়ার্কের বাইরে’ ওয়েব ফিল্মের গান। ফিল্মের মতো গানটিও জনপ্রিয়তায় এক নম্বরে। বরাবরের মতো মিজানুর রহমান আরিয়ানের নির্মাণে সোমেশ্বর অলির লেখা আর সাজিদ সরকারের সুরে গানটা রোমান্টিকতায় অন্য মাত্রা এনে দেয়। রেহান রসুল ও অবন্তী সিঁথির কণ্ঠে গানটি শুনতে দারুণ লাগে।
২. অভিমান: ভালোবাসা দিবসের ‘ব্রেস্ট ফ্রেন্ড থ্রি’ নাটকের গান। বছরের শুরুতেই প্রচুর জনপ্রিয়তা পেয়েছিল। একেবারে প্রান্তিক পর্যায়েও। এই গান নাটকটির জনপ্রিয়তার অন্যতম কারণ। ‘অভিযোগ’ টিমের কুশলীরাই এই গানের কারিগর। তানভীর ইমানের কথা, সুরে ও কণ্ঠে সংগীত আয়োজন করেছিলেন পিরান খান।
৩. সময় হেরে গেছে: ‘পুনর্জন্ম ২’ এর গান। ক্ল্যাসিকের সঙ্গে আধুনিক ধারার মিশেলে এক দারুণ গান। আরও ভালো লাগার ব্যাপার হলো, নাটকের আবহের সঙ্গে গানটা দারুণভাবে মিলে যায়। মাহমুদ হায়াৎ অর্পণের কথা ও সুরে এই গানের গায়ক শুদ্ধ সংগীতের চর্চাকারী অজয় রায়। বিশেষ ধন্যবাদ দিতে হয় কোরাস টিমকে, তারা এই গানকে অন্য মাত্রায় নিয়ে গেছে।
৪. রিমঝিম বৃষ্টি ঝরে যায়: ‘চিরকাল আজ’ নাটকের গান। মাহমুদ হায়াৎ অর্পণ এই বছর একাধিক ভালো ভালো গান সৃষ্টি করেছেন, এটি তার মধ্যে বেশি আলোচিত। দৃশ্যায়নও দারুণ ছিল। ডুয়েট এই গানে কণ্ঠ দিয়েছেন অজয় রায় ও জারিন তাসনিম রাত্রি। দুজনই ভালো গেয়েছেন।
৫. বহুকাল তারে আমি দেখিনা: ‘যদি কোনো দিন’ নাটকের গান, শুনলে মন ভারাক্রান্ত হয়ে ওঠে। তরুণ মুন্সীর কথা ও সুরে খুবই ভালো গেয়েছিলেন অয়ন চাকলাদার। খুব জনপ্রিয় না হলেও মোটামুটি সমাদৃত হয়েছে।
৬. দ্রোহে জ্বলে পুড়ে: ‘পুনর্জন্ম’ নাটকের গান। অর্পণ-অজয় জুটি এই বছর কিছু দারুণ গান দিয়েছেন। এই গান দিয়েই শুরু হয়েছিল। নাটকে এই গান যখন বেজেছিল, তখন পুরো মনোযোগ কেড়ে নিয়েছিল।
৭. বলি: ‘বলি’ ওয়েব সিরিজের সূচনা সংগীত। শুরুতেই এই গান আগ্রহ ধরবার জন্য যথেষ্ট। ক্ষমতার মোহ নিয়ে এই গানের কথা লিখেছেন রাজিব আশরাফ। তানজির তুহিনের গান পাওয়া শ্রোতা হিসেবে আনন্দের, তিনি গেয়েছেনও দারুণ। সুর করেছেন ইমন চৌধুরী।
৮. পরজীবী শহরের গান: ‘লেডিজ অ্যান্ড জেন্টেলম্যান’ ওয়েব সিরিজের গান। গল্পের সঙ্গেই মিল রেখে এই গানের কথা লিখেছেন স্বয়ং মোস্তফা সরয়ার ফারুকী। পাভেল অরিনের সংগীতে দারুণ গেয়েছেন মাশা ইসলামের মতো নবীন শিল্পী।
৯. তোমাকে চাই: ক্লোজআপ কাছে আসার গল্পের ‘অথবা প্রেমের গল্প’র গান। তারুণ্যপূর্ণ এই গানে গীতিকার পুলক অনিলের পাশাপাশি সুর দিয়েছেন জাহিদ নীরব। কণ্ঠে জাহিদ নীরবের সঙ্গে অনেক দিন বাদে ন্যানসিকেও পাওয়া গেল বেশ ভালোভাবেই। গানটাও গল্পের সঙ্গে ভালোভাবে মিলে গিয়েছিল।
১০. দৃষ্টি থমকে যায়: ‘চরের মাস্টার’ টেলিফিল্মের গান। গীতিকার ও সুরকার মাহমুদ হায়াৎ অর্পণ, কণ্ঠ দিয়েছেন মাহাদী হাসান।
এ ছাড়া বছর জুড়ে মাতম তুলেছে ‘বুক চিন চিন করছে হায়’, যদিও এটা মৌলিক গান নয়। আভরাল সাহিরের সঙ্গীতায়োজনে জাহিদ পারভেজ পাভেলের কভারে নতুন আঙ্গিকে সিনেমার এই গান খুবই জনপ্রিয়তা পেয়েছে।
অন্যান্য গানের মধ্যে হারিয়ে ফেলে যদি (শূন্য থেকে শুরু), কাছে আসার গান (একদিন বৃষ্টিতে বিকেলে), ও মা (মায়ের ডাক), সুখ লিখেছি (যত্ন), সঙ্গী হয়ে তোমার (হ্যালো শুনছেন), বাবা (আপন), যখন (ইউটিউমার), চল বন্ধু চল ও এই গান পথের গান (নেটওয়ার্কের বাইরে), একটুখানি (একটুখানি) অন্যতম।