‘অঙ্গার’ ভালো, কিন্তু কতোটা ভালো?
অঙ্গার দেখলাম।
কেমন- সেটা বলার আগে খানিকটা ঘুরেফিরে আসা যাক। ওমের অভিনয় সম্ভবত এটাই আমি প্রথম দেখেছি। আগে দেখলেও ওইভাবে আয়োজন করে মনে নেই। ভীষণ ক্রেজি। তার সবচেয়ে বড় যোগ্যতা, অঙ্গার দেখে যেটা মনে হলো, সে গলে গলে পড়ে না। সে রোমান্টিক সিনে হোক, অথবা অ্যাকশনে, অথবা বিরহে। আবেগকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে। স্বাভাবিক থাকে। ফলে যেটা হয়, বাস্তবতার আশপাশ দিয়ে চলে ওম, তার অভিনয়।
জলি বেশ সাবলিল। মানে, এর আগে জাজ যাদেরকে নিয়ে এসেছিলো- মাহি, ফারিয়া- তাদের চেয়ে জলির শুরুটা কয়েকগুণ ভালো। সম্ভাবনাময়। তবে রোমান্টিক সিনে ভীষণ কাঁচা!
গত কয়েকমাসে হলে গিয়ে যতোগুলো ছবি দেখেছি, এক ধরণের লজ্জা লজ্জা লাগে। নিজেই লজ্জায় মুখ ঘুরিয়ে নিতে হয়- এক্সপ্রেশন দেখে, অভিনয় দেখে। অঙ্গার ওই সুযোগটা দেয়নি।
গল্প যে আহামরি ভালো, ওটা নয়। তবে এই গল্পকেই ভীষণ পরিচর্যা করে, যেখানে যতোখানি ফোকাস করা দরকার, কাজের কাজটি করে, গল্পকে একটা জায়গায় দাঁড় করিয়ে দিয়েছে অঙ্গার টিম। ফলে ক্রুটি চোখে পড়ে খুব কম।
আমি বলবো, ছবির নায়ক একজন নয়, তিনজন- ওম, আশীষ বিদ্যার্থী, আর রজতাভ দত্ত। তারাই গল্পকে টেনে ধরেছেন। দর্শককে। খরাজ মুখার্জী বরাবরের মতো দূর্দান্ত এখানেও।
আরেকটা নায়কের কথা বলা হয়নি। ছবির সেট। এফডিসিকে এইমাত্রায় প্রেজেন্ট করতে পেরেছে বলেই, আউটডোরের অতোটা দরকার পড়েনি। অ্যারেঞ্জমেন্ট অতোটা ছিলো না, কিন্তু নিখুঁত সেটের কারণেই অঙ্গার উৎরে গেছে বিষয়টিতে।
ওহ, নায়ক তো আরও একটা আছে। ব্যাকগ্রাউন্ড স্কোর। ভীষণ ভালো করেছেন ইমন সাহা।
মনে থাকবে শিরিন বকুলকে। একেবারে শেষে তার সংলাপটা, ‘রান্নাঘরে আর থাকতে পারলাম না!’ মনে থাকবে তার লুক, বলার ভঙ্গি, সাবলিলতা।
তবে টুইস্টগুলো খুব মুখস্ত। ভীষণ প্রিডেক্টেবল। টুইস্টের কাছাকাছি গল্প দাঁড়ালেই, বুঝে ফেলা যায়- এবার হাঁটবে কোন দিকে! মনোযোগ দেওয়া উচিত ছিলো এখানে।
সবমিলিয়ে, কমার্শিয়াল সিনেমা যেহেতু, অতো যুক্তিতে না গেলে, শিল্পের দিকে না গেলে, অঙ্গার ভালোই। তবে ‘বিগত ১০ বছরের রেকর্ড ভাঙবে’ প্রচারণায় এতো ভাঙ্গাচোরার আশ্রয় না নিলেও ‘অঙ্গার’ চলতো। এটা বেশ বাড়াবাড়ি হয়ে গেছে।
Script is not good as direction.