অনুদানের ১০ বছর পর মুক্তি পাচ্ছে ‘হডসনের বন্দুক’!
২০১২-১৩ অর্থবছরে সরকারি অনুদান পেয়েছিল ‘হডসনের বন্দুক’, কেন্দ্রীয় চরিত্রে অভিনয় করেছেন লুৎফর রহমান জর্জ ও মৌসুমী হামিদ। প্রশান্ত অধিকারী পরিচালিত ছবিটি মুক্তি পাচ্ছে ২ ডিসেম্বর।
চলচ্চিত্র অনুদান নীতিমালা অনুসারে, প্রথম চেক প্রাপ্তির নয় মাসের মধ্যে সিনেমা নির্মাণ সম্পন্ন করতে হয়। সেক্ষেত্রে ‘হডসনের বন্দুক’ মুক্তির মিছিলে আসতে এত বিলম্ব কেন? বিষয়টি জানতে নির্মাতা প্রশান্ত অধিকারীর সঙ্গে যোগাযোগ করে বাংলাট্রিবিউন।
তিনি বললেন, ‘আমি তো মূলত চিত্রশিল্পী। নিজের প্রথম সিনেমা, ইচ্ছে ছিল অনেক বড় ক্যানভাসে এটা বানাবো। যখন চিত্রনাট্য লিখেছিলাম, তখন ভাবনায় ছিলেন প্রয়াত হুমায়ুন ফরীদি। কিন্তু তিনি মারা গেলেন। এরপর আমি ভারতের নাসিরুদ্দিন শাহ, সব্যসাচী চক্রবর্তী, অঞ্জন দত্ত অনেকের কাছে গেছি। দীর্ঘ সময় আমি কাস্টিংয়ের পেছনে দৌড়েছি। এরপর মিশা সওদাগরকে নিয়েছিলাম। দিন পাঁচেক শুটিংও করেছি তাকে নিয়ে। কিন্তু তার অপেশাদার আচরণের ফলে আর কাজ করা সম্ভব হয়নি।’
‘এসব কাজের জন্য কিন্তু প্রচুর সময় চলে যাচ্ছিল। একেকটা প্রক্রিয়া থেকে বের হয়ে আরেকটা শুরু করা, সেটাতে সময় দেওয়া। আবার সরকারের কাছ থেকে সব মিলে টাকা পেলাম ৩০ লাখ। তাও সেটা দেয় তিন-চার কিস্তিতে। সিনেমার শুটিং শুরু করতে গেলেই পাঁচ দিনের জন্য মোটামুটি ১৫ লাখ টাকা লাগে। তো সেজন্য নিজে কিছু দিন পেইন্টিং করি, টাকা জমাই, এরপর কাজ করি। এভাবে করে করে সময় লেগে গেছে’- বললেন প্রশান্ত অধিকারী।
এরমধ্যে আবার পরপর দুই বছরে নিজের বাবা-মাকেও হারিয়েছেন এই নির্মাতা। ফলে ব্যক্তিগত জীবন নিয়েও ছিলেন নানা সমস্যা-সংকটে।
সবকিছু ছাপিয়ে বছর তিনেক আগেই ‘হডসনের বন্দুক’ নির্মাণ শেষ করেন এবং সেন্সর বোর্ড থেকে ছাড়পত্র পান। কিন্তু আবার হানা দেয় মহামারি করোনাভাইরাস। সে কারণে ফের আটকে যায় ছবিটির অগ্রযাত্রা।
বাজেট, প্রযুক্তি নানা কারণে সময়ের তুলনায় কিছুটা পিছিয়ে ছিল ‘হডসনের বন্দুক’র নির্মাণশৈলি। তাই পুনরায় ছবিটির সংশোধন, সংস্কার করছেন প্রশান্ত অধিকারী। এর জন্য অতিরিক্ত আরও লাখ পাঁচেক টাকা খরচ হচ্ছে বলে জানালেন তিনি।
ঢাকা, মুন্সীগঞ্জ, মৌলভীবাজার, সিলেট, শ্রীমঙ্গল, জাফলংসহ বিভিন্ন স্থানে শুটিং হয়েছে এ সিনেমার।
সব্যসাচী লেখক সৈয়দ শামসুল হকের গল্প অবলম্বনে নির্মিত হয়েছে ‘হডসনের বন্দুক’। এতে আরও অভিনয় করেছেন মাজিদ শিখালিভ (রাশিয়া), এস এম মহসিন, কাজী উজ্জল, অর্নব অন্তু প্রমুখ। দেশের পাশাপাশি বিদেশেও ছবিটি মুক্তি দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে নির্মাতার।