অপ্রতিদ্বন্দ্বী এফ কবীর চৌধুরী
ফোক-ফ্যান্টাসি ও অ্যাকশন চলচ্চিত্রে এক সময়ে দেশের অপ্রতিদ্বন্দ্বী প্রযোজক-পরিচালক ছিলেন এফ কবীর চৌধুরী। দর্শকের মন বোঝার ভীষণ ক্ষমতা ছিল তার, সঙ্গে ছিল কাহিনীর বৈচিত্র্য ও গ্ল্যামারের ব্যবহার। তার নির্মিত প্রায় সব চলচ্চিত্রই হয়েছে জনপ্রিয় ও ব্যবসাসফল।
নাচ- গান-অ্যাকশান-কৌতুক-ফ্যান্টাসি, সাধারণ সিনেমাদর্শকদের জন্য সব ধরণের আয়োজন থাকতো কবীরের চলচ্চিত্রে।
টাঙ্গাইলে জন্ম নেয়া এফ কবীর চৌধুরী সহকারী পরিচালক ও চিত্রসাংবাদিক হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন। তার পরিচালনার প্রথম চলচ্চিত্র ‘অনেক দিন আগে’ মুক্তি পায় ১৯৭৪ সালে। অন্যান্য ছবিগুলো প্রেম তুই সর্বনাশী, রাজমহল, রাজনন্দিনী, বুলবুল এ বাগদাদ, শীষনাগ, রাজকন্যা, আলিফ লায়লা, সুলতানা ডাকু, সওদাগর, রাজ সিংহাসন, তিন বাহাদুর, আবে হায়াত, পদ্মাবতী, পর্বত, নরম গরম, জালিম, মর্জিনা, তালাচাবি, বাহাদুর মেয়ে, পয়সা পয়সা, এক দুই তিন, নীল দরিয়া, পরমা সুন্দরী প্রভৃতি।
এফ কবীর চৌধুরী পরিচালিত বেশীরভাগ ছবিতেই থাকতো জমজমাট নাচ-গান। তার চলচ্চিত্রের জনপ্রিয় কিছু গান- আরে লাল গোলাপী অঙ্গ আমার, কথা দাও সাথী হবে (রাজনন্দিনী), একটি রাতের গল্প তুমি (মর্জিনা), একদিন সবারই মনে, আনার কলি সেলিমের প্রেম কাহিনী (তালাচাবি), পদ্মাবতী বেদেনী হবে নাকি ঘরনী, নয়ন জুড়ে আছে স্বপন (পদ্মাবতী), মনেরই ছোট্র ঘরে আগুন লেগেছে হায়রে (সওদাগর), চোখে চোখ রেখে যাও (রাজ সিংহাসন), চাকবুম চাকবুম চাঁদনী রাতে, পিরিতের কলসী পেলে হায়রে (আবেহায়াত), এই বৃষ্টি ভেজা রাতে তুমি চলে যেও না, ওরে ও বাঁশিওয়ালা, এই নিশি রাইতে, জলসা ঘরের মাতাল হাওয়ায় তুফান জেগেছে (নরম গরম) প্রভৃতি। এসব গানের মধ্যে কিছু সর্বকালের সেরা সিনেমার গান হিসবে বিবেচিত। এ সব জনপ্রিয় ও হিট-সুপারহিট গানগুলোর সুর-সংগীতের দায়িত্বে ছিলেন প্রয়াত সুবল দাস। এফ কবীর চৌধুরীর প্রথম থেকে শেষ চলচ্চিত্র পর্যন্ত সুরকার হিসেবে ছিলেন এ গুণীজন।
এফ কবীর চৌধুরী ১৯৯২ সালের ১০ মার্চ ঢাকায় মারা যান।
ছবি ও তথ্য: আজাদ আবুল কাশেম