আজ সাহারার বিয়ে
বছর খানেক আগে মুক্তি পায় সাহারা অভিনীত শেষ চলচ্চিত্র ‘তোকে ভালোবাসতেই হবে’। এরপর তাকে আরা মিডিয়ায় দেখা যায়নি। সংবাদপত্র ও অনলাইনে কিছু লেখা চোখে পড়লেও খোদ সাহারাই অনুপস্থিত। গুজব উঠে সিনেমার প্রযোজককে বিয়ে করে সংসারী। তাই সিনেমা থেকে দূরে সরে গেছেন। গুজবটাই যেন সত্য হলো। হুট করে জানা গেল সাহারা বিয়ে করছেন। আজ ৮ মে। আজ সাহারার বিয়ে।
সাহারা বছর খানেক চলচ্চিত্র থেকে দূরে থাকলেও বিয়ের খবরটা জানাতে ভুলেননি। সাহারার বর ‘ঢাকা টু বোম্বে’ ছবির প্রযোজক মাহবুবুর রহমান মনি। প্রায় তিন বছর আগে তাদের পরিচয় হয়। তারপর ভালোলাগা থেকে প্রেম। শুরুতে সাহারা ও মনিরের এ প্রেম দুপরিবারের কেউই মেনে নিতে রাজি ছিলেন না। তবে এখন পারিবারিক সিদ্ধান্তেই বিয়ে হচ্ছে তাদের। রাজধানীর মহাখালীর এক কনভেনশন সেন্টারে বেশ আয়োজনের মধ্য দিয়েই বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন হবে।
এ প্রসঙ্গে সংবাদমাধ্যমকে সাহারা বলেন, ‘সবসময়ই বলেছি বিয়ে আল্লাহর হাতে। যখন বিয়ে করব, সবাইকে জানিয়ে করব। নতুন জীবনে পা রাখতে যাচ্ছি। সবাই আমার জন্য দোয়া করবেন যেন সংসার জীবনে সুখী হতে পারি।’
বুধবার সাহারার গায়ে হলুদ হয়। শাবনূর ও অমিত হাসান গায়ে হলুদের অনুষ্ঠানে উপস্থিত থেকে তাকে আশীর্বাদ করেন। এ সময় সাহারার আবিষ্কারক নৃত্য পরিচালক আজিজ রেজা ও চলচ্চিত্র পরিচালক শাহাদৎ হোসেন লিটনসহ আরও বেশ কয়েকজন চলচ্চিত্র সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিত্ব উপস্থিত ছিলেন।
সাহারা তার পর্দা নাম। পরিবারের সবাই ডাকে রুনা নামে। খুব ছোটবেলা থেকেই সাহারার স্বপ্ন ছিল বড় হয়ে নায়িকা হবেন। সে স্বপ্নের সঙ্গে একাত্ম হয়েছিলেন তার মা। ২০০৩ সালে বাংলা চলচ্চিত্রে সাহারার অভিষেক হয়। অনেক পরিশ্রম করে ঢাকার চলচ্চিত্রে নিজেকে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেন এই অভিনেত্রী। অনেক তারকার সঙ্গে জুটি বাঁধলে তার সফল চলচ্চিত্রগুলোর নায়ক শাকিব খান।
২০০৪ সালে ‘রুখে দাঁড়াও’ সিনেমার মাধ্যমে বড় পর্দায় সাহারার যাত্রা। তার বিপরীতে ছিলেন শাকিব খান। প্রথম চলচ্চিত্র শেষ হওয়া মাত্র ‘ভাড়াটে খুনী’ চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন। কিন্তু দুটো চলচ্চিত্রই বক্স অফিসে ব্যর্থ হয়। ফলে সাহারাকে টিকে থাকার অন্যরকম লড়াইয়ে নামতে হয়।
অশ্লীল যুগ নামে পরিচিত সেইসময়কার কম বাজেটের কিছু চলচ্চিত্রে সাহারা অভিনয় করেন। অল্প কিছুদিনের মধ্যে নিজের অবস্থান শক্ত করে ফেলেন। পোশাক নিয়ে তখন বেশ সমালোচিত হলেও একটা ট্রেন্ড সৃষ্টি করতে সক্ষম হন। জুনিয়র অনেক নায়িকা পরর্বর্তীতে তাকে অনুসরণ করেন। সে সময়ের আলোচিত চলচ্চিত্রের মধ্যে জাদরেল, লালু কসাই, বিষাক্ত চোখ, লাকি সেভেন, চক্কর, ভণ্ড নায়ক, শান্ত কেন অশান্ত অন্যতম।
২০০৮ সালের দিকে বাংলা চলচ্চিত্রের অবস্থা পাল্টাতে থাকে। সময়ের সঙ্গে সাহারা নিজেকে পাল্টে নেন। সাহারা সম্ভবত একমাত্র নায়িকা যিনি অশ্লীল যুগের পর আবার নিজের ইমেজ উদ্ধার করেছেন। আবারও প্রথম সিনেমার নায়ক শাকিবের সঙ্গে বাণিজ্যিকভাবে সফল অনেকগুলো চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন।
সে সময়ের আলোচিত চলচ্চিত্রের মধ্যে আমাদের ছোট সাহেব, সন্তান আমার অহংকার, সাহেব নামের গোলাম, প্রেম কয়েদী, ভালোবেসে মরতে পারি, বস নাম্বার ওয়ান, ডন নাম্বার ওয়ান, খোদার পরে মা, মাই নেম ইজ সুলতান, সন্তানের মত সন্তান, আমার চ্যালেঞ্জ, ঢাকা টু বোম্বে, নিষ্পাপ মুন্না, জোর করে ভালোবাসা হয়না অন্যতম।
সব মিলিয়ে সাহারা ৫০টির মতো চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন। বদিউল আলম খোকন পরিচালিত ‘প্রিয়া আমার প্রিয়া’ তার অভিনীত সবচেয়ে আলোচিত চলচ্চিত্র। এতেও তার বিপরীতে ছিলেন শাকিব খান।
নতুন জীবনে প্রবেশে সাহারার প্রতি অভিনন্দন ও শুভেচ্ছা।