Select Page

আটকে আছে চাকমা ভাষার ‘আমার বাইসাইকেল’, কারণ জানেন না নির্মাতা

আটকে আছে চাকমা ভাষার ‘আমার বাইসাইকেল’, কারণ জানেন না নির্মাতা

২০১২ সালে তৈরি হয় চাকমা ভাষায় প্রথম চলচ্চিত্র ‘মর থেঙ্গারি’ বা ‘আমার বাইসাইকেল’। সাত বছর ধরে সেন্সর বোর্ডে আটকে থাকলেও জটিলতার কারণ জানেন না নির্মাতা। খবর প্রতিদিনের বাংলাদেশ।

পরিচালক অং রাখাইন বলেন, ‘সিনেমাটি নিয়ে অনেকের কাছেই গিয়েছি কিন্তু কোনো সমাধান পাইনি। বলতে গেলে এক প্রকার আশা ছেড়ে দেওয়ার মতো অবস্থায় আছি আমি। অনেক গণমাধ্যমের সঙ্গে আমার কথা হয়েছে। সবাই শুধু আমার কাছে মুক্তি না পাওয়ার কারণ জানতে চায়। আমি কীভাবে কারণ বলব! সেটা সেন্সর দেখবে।’

তবে সেন্সর বোর্ডের তখনকার ভাইস চেয়ারম্যান জাকির হোসেইন বলেছিলেন, ‘মর থেঙ্গারি সেন্সরের জন্য সূচিভুক্ত হওয়ার অপেক্ষায় আছে, অচিরেই এটির সেন্সর করা হবে। তবে চলচ্চিত্রটি নিয়ে একটি অভিযোগ রয়েছে যে, সেন্সরবিহীন অবস্থায় জাতীয় জাদুঘরে ছবিটির প্রদর্শনী করা হয়েছে। তদন্তে সেই অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে।’

ছবিটির কোনো বিষয় নিয়ে আপত্তি প্রসঙ্গে পরিচালককে চিঠি দেওয়া হয়েছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘যখন সেন্সর হবে, তখন সেন্সর বোর্ডের সদস্যরাই দেখবেন চলচ্চিত্রটিতে কী আছে না আছে।’

বিষয়টি নিয়ে মন্তব্য করেছেন বেশ কয়েকজন নির্মাতা। এর মধ্যে নিজেকে শান্তিপ্রিয় উল্লেখ করে গিয়াস উদ্দিন সেলিম বলেন, সিনেমাটি কেন মুক্তি পাচ্ছে না তা সেন্সরের জানানো উচিত। এ ছাড়া আমি এই সেকেলে সেন্সরের পক্ষে কখনও ছিলাম না, এখনও নেই। সেন্সর কখনও এভাবে সিনেমা আটকাতে পারে না।

মেজবাউর রহমান সুমন বলেন, যদি মুক্তি না দেওয়ার বিষয়ে সেন্সরের কোনো সিদ্ধান্ত থাকে, তাহলে সেটা অবশ্যই নির্মাতাকে জানাতে হবে। আমি ‘বাইসাইকেল’ সিনেমার বিষয়ে অনেক আগে থেকেই জানি। সেন্সরকে জানাতে হবে কেন তারা সিনেমাটি মুক্তি দিচ্ছে না। আমি যতটুকু জানি, সিনেমার গল্পে কোনো সমস্যা নেই। যদি সমস্যা থাকেও, সেটি নির্মাতাকে জানিয়ে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব সিনেমাটি মুক্তি দেওয়া হোক।

অন্যদিকে দেশপ্রেমের বিষয়টি নিয়ে আসলেন সানী সানোয়ার। তিনি বলেন, বাংলাদেশের সাধারণ মানুষ ভীষণ সেনসেটিভ। আমাদের দেশের প্রেক্ষাপট অন্য দেশের মতো নয়। আমাদের দেশের কনটেন্ট এখনকার অবস্থার বিবেচনায় হতে হবে। অন্য দেশে সিনেমায় অনেক কিছু তুলে ধরে। যেহেতু তাদের মূল্যবোধ, দেশপ্রেম সবকিছু আমাদের চাইতে আলাদা। দেশের কথা মাথায় রেখে সিনেমা বানানো উচিত। এসব বিষয় মাথায় রেখে সিনেমা বানালে কোনো ধরনের সমস্যা হওয়ার কথা নয়।

অং রাখাইন বাংলাদেশের সংখ্যালঘু রাখাইন গোষ্ঠীর সদস্য। ২০১২ সালে তিনি ছবির নির্মাণ শেষ করেন। এরপর ২০১৪ সালের ডিসেম্বরে ঢাকার একটি চলচ্চিত্র উৎসবে প্রথমবারের এটি প্রদর্শন করেন। পরে ঢাকার বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও ফিল্ম ক্লাবগুলোয় ঘরোয়াভাবে ছবিটি প্রদর্শন করেছিলেন তিনি।

পার্বত্য অঞ্চলে চাকমা জনগোষ্ঠীর জীবনযাত্রা নিয়ে মর থেঙ্গারির গল্প। যেখানে একটি বাইসাইকেল কেন্দ্র করে কাহিনি আবর্তিত হয়েছে। ৬৪ মিনিটের এ চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন চাকমা সম্প্রদায়ের সদস্যরা।

বর্তমানে দ্বিতীয় সিনেমা নিয়ে ব্যস্ত অং। যার শুটিং ইতোমধ্যে শুরু করেছেন। এটাও আদিবাসী শিল্পীদের নিয়ে বানানো হচ্ছে। ‘ম্রু’ শিরোনামের সিনেমাটি ২০২৬ সালে মুক্তি দেওয়ার ইচ্ছা আছে তার।


Leave a reply