আফরান নিশো কোনো মিথ ভাঙেননি, তার হামবড়া ভাব অহেতুক
দর্শক টাকা খরচ করে টেলিভিশনের অভিনেতাদের সিনেমা দেখতে আসবেন না- এমন একটি মিথ ভাঙার দাবি করেছেন আফরান নিশো; তা কতটা সত্য? সম্প্রতি তার ‘হিরোর বউ-বাচ্চা’ বিষয়ক বিতর্ক লেবু চিপে তেতো হওয়ার পরিস্থিতিতে গড়িয়েছে। এর মাঝে নতুন এই দাবি নিয়ে আসলেন তিনি।
ঠিক কী বলেছেন নিশো? আনন্দবাজার পত্রিকাকে দেয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, “যা কিছু চলতি নিয়ম রয়েছে, সেটা আমি ভাঙতে চাই। আমায় এক সময় শুনতে হয়েছিল, মডেলরা অভিনয় করতে পারেন না। আমাকে শুনতে হয়, দর্শক টাকা খরচ করে নাটকের অভিনেতাদের বড় পর্দায় দেখতে আসবেন না। সেই মিথ আমি ভেঙেছি। আবার এখন আমাকে বলা হয়, ‘পর্দায় নায়ক হয়ে দর্শকের এত কাছাকাছি যেয়ো না, একটু এক্সক্লুসিভ থাকো’। সেই মিথও ভাঙব আশা করছি। আমি এত আলাদা হতে চাই না। অন্য কাউকে ছোট না করেই বলছি, এটা আমার জীবনের দর্শন।”
কিন্তু নিশোর এই দাবি কতটা সত্য? যতটা না সত্য তারচেয়ে ‘হামবড়া’ ভাব বেশি। যদি অভিনেতা অর্থে ধরা হয় তবে গত দেড় দশকে বাংলাদেশের সিনেমার সবচেয়ে বড় মুখ চঞ্চল চৌধুরী। হিট বা স্টারডমের বিচারে শাকিব খানের ধারে-কাছে তিনি নেই, এটা ঠিক। কিন্তু তার হিট সিনেমাগুলো ইন্ডাস্ট্রির মাইলফলক নির্মাণ হিসেবে ধরা হয়। এ তালিকায় আছে মনপুরা, আয়নাবাজি, দেবী ও হাওয়া। এ সিনেমাগুলো বরাবরই ভিন্ন ধারায় হেঁটে প্রমাণ করেছে প্রচলিত ধারণার বাইরে গিয়েও সিনেমা ভালো করতে পারে। এর মধ্যে দুটি ছবির আনুষ্ঠানিক রিমেক হয়েছে ভারতে। এই ক্ষেত্রে মারদাঙ্গা সিনেমা ‘সুড়ঙ্গ’-এর নিশো আসলে কী জবাব দেবেন।
হয়তো কেউ কেউ বলবেন চঞ্চল তো মডেলিং থেকে আসেননি। সেখানে ভালো উদাহরণ সিয়াম আহমেদ। ‘পোড়ামন ২’সহ একাধিক হিট সিনেমা আছে তার ঝুলিতে। এমনকি অভিনয়েও তিনি প্রশংসিত। নিশোর মতো উচ্চকিত বা একঘেয়ে নন। তাহলে ফাঁকা চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দেয়ার অর্থ কী? অথবা বিদেশে গিয়ে দেশের সিনেমার দুর্নাম করছেন কেন। এখন তো মাত্র একটাই সিনেমা করলেন। যেখানে নিশো বা তমা চেয়ে বড় স্টার আছেন; তিনি বলেন পরিচালক রায়হান রাফী।
চঞ্চল চৌধুরী বা সিয়ামই নয়, এখন তো মডেলিং ও টিভি থেকে আসা আরিফিন শুভ ইন্ডাস্ট্রির অন্যতম তারকা। তারা সবাই ভারতীয় একক প্রযোজনর সিনেমায় অভিনয় করেছেন বা করছেন। আর অমর নায়ক সালমান শাহর শুরু তো মডেলিংয়ে।
একই সাক্ষাৎকারে নিশোকে প্রশ্ন করা হয়, লোকে বলে বাংলাদেশের সুপারস্টার এক জনই— শাকিব খান। আপনার কী মত? উত্তরে তিনি বলেন, আমার কাছে হুমায়ুন ফরীদি, গোলাম মোস্তাফা, বুলবুল আহমেদরা সুপারস্টার।
এমন দাবির কাছে নিশো হয়তো ভুলে গেছন হুমায়ূন ফরীদি হলেন বাংলা ইন্ডাস্ট্রির একমাত্র ভিলেন, যার ছবি নায়কের জন্য নয় ভিলেনের নামেই চলত। আর সেই হুমায়ূন ফরীদিও টিভি থেকে আসা। শুধু তিনিই নন বুলবুল আহমেদও টিভি তারকা ছিলেন।