Select Page

আমাদের শবনম: যার ফিরে আসায় ধস নামে পাকিস্তানি চলচ্চিত্রে!

আমাদের শবনম: যার ফিরে আসায় ধস নামে পাকিস্তানি চলচ্চিত্রে!

শবনমকে বর্তমান প্রজন্মে আমরা ‘আম্মাজান’ হিসেবে চিনি। কিংবা যারা একটু পুরাতন সিনেমা দেখেছি তাদের মাথায় আসে ‘আয়নাতে ঐ মুখ দেখবে যখন’ গানের কথা। কিন্তু আমরা কি জানি এই শবনম পাকিস্তানে কতোটা জনপ্রিয়?

পাকিস্তানের প্রথম ও সবচেয়ে জনপ্রিয় এ লেডি সুপারস্টারের নাম ছিল ঝর্ণা বসাক, পরিচালক এহতেশাম তার নাম শবনম রাখেন। ১৯৬১ সালে ‘হারানো দিন’-এ নায়িকা চরিত্রে অভিনয়ের মাধ্যমে বাংলা চলচ্চিত্রে অভিষেক ঘটলেও তার অভিনীত প্রথম উর্দু চলচ্চিত্র মুক্তি পায় ১৯৬২ সালে। অবশ্য পার্শ্ব চরিত্রে অভিনয় করেছেন এর আগে।

তারপর সেখানে তিনি একে একে ১৫২টি উর্দু ও ৪টি পাঞ্জাবি চলচ্চিত্র করেছিলেন। ভারতের ফিল্মফেয়ারের মতো পাকিস্তানের সবচেয়ে গ্রহণযোগ্য পুরস্কার নিগার শবনম পেয়েছিলেন ১৩বার যে রেকর্ড আজও কোন পাকিস্তানি নায়িকা ভাঙতে পারেনি। তিনবার পাকস্তানের জাতীয় পুরস্কারও জিতেন তিনি।

পাকিস্তান ভেঙে বাংলাদেশ হয়ে গিয়েছে তখনও তার ও অভিনেতা নাদিমের জুটি পাকিস্তানে রাজ কাপুর-নার্গিস, ধর্মেন্দ্র-হেমা মালিনী, উত্তম কুমার-সুচিত্রা সেনের জুটির মতো জনপ্রিয়তা পায়৷ শবনম-নাদিমের ‘আয়না’ (১৯৭৭) পাক বক্স অফিসে সব রকম রেকর্ড ভেঙে দেয়৷ পাকিস্তানের একমাত্র ‘ক্রাউন জুবিলি’ ফিল্ম এই আয়না৷ করাচির দুটো সিনেমা হল ‘ব্যাম্বিনো’ ও ‘স্কালা’তে মুক্তি পায় প্রথমে টানা ৪৮ সন্তাহ চলে৷ গোটা দেশে সব মিলিয়ে ৪০১ সপ্তাহ চলেছিল৷ এখনও সেই রেকর্ড ভাঙতে পারেনি কোনও পাক ছবি। সে বছরই এ অভিনেত্রীর ৬টি ছবি রূপালি পর্দায় আসে। পরের বছর এ সংখ্যা হয় ৯টি। এমনকি সাত বছর পর ১৯৮৪ সালে এ অভিনেত্রীর রেকর্ড পরিমাণ ১০টি ছবি মুক্তি পায়।

এভাবে ৭৭ সাল থেকে পরবর্তী দশ বছর অর্থাৎ ১৯৮৭ সাল পর্যন্ত ছবি মুক্তি পেতেই থাকে। এমনকি তারও পরবর্তী ১০ বছর এ অভিনেত্রীর নতুন নতুন ছবি পাকিস্তানে মুক্তি পেয়েছে, যার শুটিং তিনি অনেক আগেই করেছিলেন!

টাইমস অফ ইন্ডিয়ার মতে শবনম যখন পাকিস্তানের চলচ্চিত্র ইন্ডাস্ট্রি থেকে মুখ ফিরিয়ে নেন তখন সেখানে ধ্বস নামে। মাঝে অমিতাভ বচ্চন, ঋষি কাপুরের সঙ্গেও অভিনয়ের প্রস্তাব আসে তার কাছে। সেখানে প্রযোজক জানান, ছবিতে মূল চরিত্র চার- শবনম, অমিতাভ, রেখা ও ঋষি। তবে নির্মাতারা তাকে ছবির গল্প বলতে না পারায় প্রস্তাবটি ফিরিয়ে দেন এ অভিনেত্রী!

শবনমের এ সাফল্যের মূলে ছিল দুর্দান্ত অভিনয়, বৈচিত্র্য ও ফ্যাশন সেন্স। এখনো সে দেশের অনেক তারকার আইকন তিনি। পাকিস্তানে ‘লাক্স স্টাইল অ্যাওয়ার্ড ২০১৯’ এওয়ার্ডে যখন তাকে আজীবন সম্মাননা দেওয়ায় হয় তখন পাকিস্তানের অনেক বড় বড় তারকা আবেগে আপ্লুত হয়ে পড়ে। আতিফ আসলাম তাকে পা ছুঁয়ে সালাম করেন। আফসোস-আক্ষেপ এমন তারকাকে আমরা সেভাবে ব্যবহার করতে পারিনি।


মন্তব্য করুন