Select Page

একদমই জমেনি ‘রবীন্দ্রনাথ এখানে কখনও খেতে আসেননি’

একদমই জমেনি ‘রবীন্দ্রনাথ এখানে কখনও খেতে আসেননি’

মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিনের বেস্ট সেলার থ্রিলার উপন্যাস নিয়ে সৃজিত মুখার্জির ওয়েব সিরিজ। স্বাভাবিকভাবেই আগ্রহ তুঙ্গে, প্রথম থেকেই শোনা যাচ্ছিল মোশাররফ করিম, চঞ্চল চৌধুরী, জয়া আহসান বা স্বস্তিকা মুখার্জি অভিনয় করবেন। তাই আগ্রহের মাত্রা বেড়েছিল আরো বেশি, কিন্তু সেই আশায় গুড়েবালি। করোনার দোহাই দিয়ে বাদ পড়ে যান তারা।

যুক্ত হন রাহুল বোস, অনিবার্ণ ভট্টাচার্যরা, তবে সবাইকে চমকে দিয়ে রহস্যে ভরা চিরযৌবনা মুসকান জুবেরীর চরিত্রে অভিনয় করার সুযোগ পেলেন আজমেরী হক বাঁধন। তখনো তিনি ‘রেহানা মরিয়ম নূর’ নিয়ে খবরে আসেননি, কানের লাল গালিচাতেও হাঁটেননি, তাই সবারই অবাক হওয়ারই কথা!

যাই হোক, সৃজিত বাবু বাংলাদেশের এই উপন্যাসকে কলকাতার প্রেক্ষাপটে চিত্রনাট্য সাজিয়েছেন, কিছু চরিত্রের নাম পরিবর্তন করেছেন। যেমন; নূরে ছফা হয়ে গেল নিরুপম চন্দ, তবে আতর আলী উপন্যাসের নিজ নামেই আছে।

থ্রিলার ঘরানার সিনেমাই হোক বা সিরিজ তার জন্য প্রথমাংশ খুবই গুরুত্বপূর্ণ,সেটায় যদি জোর না দেয়া হয় তাহলে ভালো ফল আশা করা যায় না। ‘রবীন্দ্রনাথ এখানে কখনও খেতে আসেননি’র বেলাতেও তাই হলো। প্রথমাংশ বেশ ক্লিশে, আগ্রহ বাড়াবার মতো নয়, সেই তুলনায় দ্বিতীয়ার্ধ ভালোই বলা চলে।

নিরুপম চন্দের চরিত্রে রাহুল বোস প্রথমদিকে অপরিপক্ক মনে হয়েছিল, যদিও গল্প যত এগিয়েছে তিনি তত গভীরে ঢুকতে পেরেছেন। আতর আলীর চরিত্রে অনির্বাণ ভট্টাচার্য ছিলেন ভুল নির্বাচন, এত দুর্দান্ত অভিনেতা অভিনয় প্রতিভা কাজেই লাগানো উচিত ছিল, বরং অতি ব্যবহার হলো। জমে উঠেনি নিরুপম চন্দ-আতর আলীর রসায়ন। অঞ্জন দত্ত অভিনয়ে আছেন, এটাই সার। ভালো লেগেছে প্রদীপ ভট্টাচার্যের অভিনয়,অনির্বাণ চক্রবর্তীও ভালোই। গোরখাদক ফালু ছেলেটাও ভালো করেছে।

সবশেষে আমাদের বাঁধন, তার জন্য চরিত্রটি ছিল চ্যালেঞ্জিং। চরিত্রটাই ভীষণ ভারী, তিনি চেষ্টাও করেছেন। কিন্তু সৃজিতের কিছুটা পাকামোর জন্য আলো ছড়িয়েও যেন পূর্ণতা পেলেন না। তা সত্ত্বেও আমার কাছে তাকেই এই সিরিজের বেস্ট পারফর্মার মনে হলো।

এই ওয়েব সিরিজ ভালো লাগেনি। খারাপ লাগা নিয়ে আরো বলা যায়, তবে ভালো দিক আছে। উড়োজাহাজের দৃশ্যগুলো ভালোই। তবে এই সিরিজ বিশেষ হয়ে থাকবে গানের জন্য। ওস্তাদ রশিদ গানের দারুণ আয়োজন তো আছেই, সঙ্গে জয়তী চক্রবর্তীর গলায় রবীন্দ্র সংগীত। যদিও পুরো সিরিজে অনেকের কাছে রবীন্দ্র সংগীতের ব্যবহার অতিরিক্ত মনে হতে পারে।

সৃজিত মুখার্জির নির্মাণে যেমন আরো সময় নিয়ে করা উচিত, তেমনি মনে হয় কিছুদিনের জন্য বিরতিও প্রয়োজন। নির্মালকে তিনি সবজি বিক্রির মতো করে ফেলছেন— শুনতে খারাপ লাগলেও এটাই সত্য। আমি এখন বরং তার পরবর্তী ছবি ‘মহাপ্রভু’ নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছি, না জানি পাকামো করতে গিয়ে কী বানিয়ে ফেলেন!


Leave a reply