এক চলচ্চিত্রেই পাঁচটি জাতীয় পুরস্কার পান কাজী মোরশেদ
পরিচালক-প্রযোজক, কাহিনীকার, চিত্রনাট্যকার ও সংলাপ রচয়িতা নানা পরিচিতি ছিল কাজী মোরশেদের। তার লেখায় বা নির্মাণে মানবিক সংবেদনশীলতা গুরুত্বপূর্ণ অনুষঙ্গ ছিল বরাবরই। তুখোড় বাণিজ্যিক থেকে শিল্পমানের সিনেমার সঙ্গে জড়িত ছিলেন তিনি।
কাজী মোরশেদের নির্মিত চলচ্চিত্র যেমন দর্শকমহলে প্রশংসিত হয়েছে, তেমনি রেকর্ড সংখ্যক জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারও পেয়েছে। তিনি সেরা প্রযোজক ও পরিচালক’সহ ৫টি জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার অর্জন করেন এক ছবিতেই।
সত্তরের দশকে চিত্রপরিচালক এস এম শফির সহকারী হিসেবে চলচ্চিত্রে কাজ শুরু করেন কাজী মোরশেদ। এরপর তিনি বাংলাদেশ বেতার-এর প্রোগ্রাম পরিচালক হিসেবে কাজ করেন।
পরবর্তীতে চলচ্চিত্রকার আমজাদ হোসেনের সাথে, ‘জন্ম থেকে জ্বলছি’, ‘দুই পয়সার আলতা’ ও ‘ভাত দে’ চলচ্চিত্রে সহকারী পরিচালক হিসেবে কাজ করেছেন। এ ছাড়া পরিচালক এ জে মিন্টুর ‘লালু মাস্তান’ চলচ্চিত্রের সহকারী পরিচালক হিসেবেও কাজ করেছেন।
কাজী মোরশেদ পরিচালিত প্রথম চলচ্চিত্র ‘ছলনা’। চলচ্চিত্রটি মুক্তি পায় ১৯৮৯ সালে। অন্যান্য ছবি হলো সান্ত্বনা, প্রেম যমুনা, শুধু তুমি, নয়নের নয়ন, ঘানি ও একই বৃত্তে। তিনি ‘দ্য লক’ নামে একটি চলচ্চিত্রের কাজ শুরু করলেও শেষ করতে পারেননি।
নিজের পরিচালিত প্রায় সব ছবিরই কাহিনী, চিত্রনাট্য ও সংলাপ লিখেছেন কাজী মোরশেদ। এছাড়াও আমজাদ হোসেন পরিচালিত ‘জন্ম থেকে জ্বলছি’ ও শহীদুল ইসলাম খোকন পরিচালিত ‘পালাবি কোথায়’ ও ‘ম্যাডাম ফুলি’সহ অন্যান্য পরিচালকদের বেশ কিছু চলচ্চিত্রের চিত্রনাট্য ও সংলাপ রচনা করেছেন তিনি। টেলিভিশনের জন্য কয়েকটি নাটকও পরিচালনা করেছিলেন।
১৯৯১ সালে ‘সান্ত্বনা’ চলচ্চিত্রের জন্য, শ্রেষ্ঠ চিত্রনাট্যকার হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করেন কাজী মোরশেদ। ২০০৬ সালে কলুদের জীবন সংগ্রাম ও বাস্তবতার নিরিখে নির্মিত চলচ্চিত্র ‘ঘানি’ ১২টি বিভাগে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করে। যার মধ্যে সেরা প্রযোজক ও পরিচালক’সহ ৫টি জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পান কাজী মোরশেদ নিজে।
কাজী মোরশেদ ১৯৫০ সালের ২৪ এপ্রিল চট্টগ্রামের মিরসরাইতে জন্মগ্রহণ করেন। ২০১৪ সালের ৩ অক্টোবর ঢাকায় মৃত্যুবরণ করেন।
তথ্য ও ছবি: আজাদ আবুল কাশেম