এক সিনেমার সাফল্যেই শাকিবের পারিশ্রমিক বাড়ে ২০ গুণ
ব্যবসায়িক বিচারে শাকিব খানের সবচেয়ে জনপ্রিয় ছবি ‘প্রিয়া আমার প্রিয়া’। আজকের দিনে অর্থাৎ এক যুগ আগে ২০০৮ সালের ১৩ জুন সিনেমাটি মুক্তি পায়। নকলের অভিযোগ উঠলেও আয়ের দিক থেকে বক্স অফিসের অনেক রেকর্ড ভেঙে দেয়।
প্রথম আলোর এক প্রতিবেদনে পরিচালকের বরাত দিয়ে বলা হয়, ‘প্রিয়া আমার প্রিয়া’ মুক্তির পর শাকিব খানের পারিশ্রমিক বেড়ে ২০ গুণ হয়ে যায়। এ ছবিতে শাকিব খানের পারিশ্রমিক ছিল দেড় লাখ টাকা। ‘সাইনিং মানি’ ছিল মাত্র ২৫ হাজার টাকা।
‘প্রিয়া আমার প্রিয়া’র পরিচালক বদিউল আলম খোকন বলেন, ‘আমি এ পর্যন্ত ৩৪টি ছবি নির্মাণ করেছি। বেশির ভাগ ছবিই শাকিবকে নিয়ে নির্মাণ করেছি। তবে এই ছবির সাফল্য অন্য কোনো ছবি ছুঁতে পারেনি। শাকিব খান ও সাহারার ক্ষেত্রেও তা–ই হয়েছে। তাদের অভিনীত অন্য কোনো ছবিই এই ছবিকে পেছনে ফেলতে পারেনি। প্রিন্টের খরচ ছাড়া মাত্র ৫০ লাখ টাকা বাজেটের এই ছবি থেকে প্রায় ১৫ কোটি টাকা আয় করেছিলেন প্রযোজক।’
সেই সময়কার স্মৃতি আওড়ে বলেন, ‘নির্মাতা, নায়ক, নায়িকা ও প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান— সবার জন্যই এই ছবি একটা ইতিহাস। ছবিটি মুক্তির পর বাম্পার হিট হয়ে গেল। তখন ছিল থার্টি ফাইভের যুগ। প্রথমে ৩৩টি হলে মুক্তি দেওয়া হয়। মুক্তির পর সারা দেশে প্রিন্ট নিয়ে হল মালিকদের মধ্যে কাড়াকাড়ি লেগে গেল। দ্বিতীয় সপ্তাহে আরও ১০টি, তৃতীয় সপ্তাহে আরও ৭টি প্রিন্ট করা হয়। তখন দেশে প্রায় ৮০০ হল। সে সময় আড়াই-তিন মাস ধরে দেশের সব হলে ঘুরে ঘুরে চলেছিল ছবিটি।’
‘২০০৭ সালে মান্না মারা গেল। সব ছবির চাপ আসতে থাকে শাকিব খানের ওপর। এই ছবি মুক্তির মাস ছয়েক পর আমি শাকিবকে নিয়ে “নিঃশ্বাস আমার তুমি” নির্মাণ শুরু করি। ওই ছবিতে ওকে দেড় লাখ টাকা থেকে এক ধাপে ২৫ লাখ টাকা দিয়েছিলাম। পরপরই তাকে নিয়ে তৈরি করি “আমার চ্যালেঞ্জ”। তখন শাকিব খান অনেক মনোযোগ দিয়ে কাজ করতেন। তার মধ্যে এগিয়ে যাওয়ার তাগিদ ছিল।’
প্রথম আলো জানায়, এ ছবি শাকিব খান প্রথমবার ফোন ধরে নিয়ে কিছুই বলতে চাইলেন না। তবে সাহারা বলেন, ‘“প্রিয়া আমার প্রিয়া” মুক্তির পর দর্শক আমাদের জুটিকে দারুণ পছন্দ করেছিলেন। পরে আমরা দুজন অনেক ছবিতে কাজ করেছি। তার মধ্যেও বেশ কিছু ছবি ভালো ব্যবসা করেছে।’
এ জুটির উল্লেখযোগ্য ছবিগুলো ‘প্রেম কয়েদী’, ‘বলবো কথা বাসর ঘরে’, ‘বস নাম্বার ওয়ান’, ‘টাইগার নাম্বার ওয়ান’, ‘তোমার জন্য মরতে পারি’ ও ‘খোদার পরে মা’।
‘প্রিয়া আমার প্রিয়া’ প্রযোজনা করেছিল আশা প্রোডাকশন। প্রযোজক ছিলেন মনির হোসেন। ছবিটি মুক্তির তিন বছরের মাথায় প্রযোজক মারা যান। প্রযোজনা প্রতিষ্ঠানটি এখন আর নেই। সিনেমার ব্যবসাও নেই তাদের। পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, ‘প্রিয়া আমার প্রিয়া’ ছবিটি মুক্তির আগে আরও দুটি ছবি নির্মাণ করে বড় অঙ্কের লোকসানে পড়েছিল প্রতিষ্ঠানটি। বড় অঙ্কের দেনায় জর্জরিত ছিলেন প্রযোজক। পরে এই ছবি প্রযোজক ও এই প্রতিষ্ঠানকে ঘুরে দাঁড়াতে সাহায্য করেছিল।
এটি ২০০২ সালের পুনীত রাজকুমার অভিনীত কন্নড় চলচ্চিত্র আপ্পুর পুনঃনির্মাণ, যা তেলেগু ভাষায় ইডিয়ট (২০০২), তামিল ভাষায় দম (২০০৩) ও কলকাতায় হিরো (২০০৬) নামে পুনঃনির্মিত হয়েছিল।