এবার মিশা সওদাগর-জায়েদ খান দুজনই ‘অবাঞ্ছিত’!
‘স্বার্থবিরোধী কর্মকাণ্ড’র দায়ে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির প্রধান দুই ব্যক্তি মিশা সওদাগর ও জায়েদ খানকে ‘অবাঞ্ছিত’ বা ‘বয়কট’ করার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিয়েছে চলচ্চিত্রের ১৮ সংগঠন। এ খবর প্রকাশ করেছেন বাংলা ট্রিবিউন।
বুধবার বিএফডিসির জহির রায়হান কালার স্টুডিওতে সংবাদ সম্মেলন করে এমন সিদ্ধান্তের কথা জানান সংশ্লিষ্ট সংগঠনের নেতারা। যার নেতৃত্বে ছিলো প্রযোজক ও পরিবেশন সমিতি।
জানা যায়, বাংলাদেশ চলচ্চিত্র প্রযোজক পরিবেশক সমিতি মাস তিনেক আগেই অভিনেতা ও চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির সভাপতি মিশা সওদাগরকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেছিল। যেটা প্রকাশ পেয়েছে আজকের সংবাদ সম্মেলনে। সঙ্গে এবার চলচ্চিত্র সংশ্লিষ্ট ১৮ সংগঠন শিল্পী সমিতির সাধারণ সম্পাদক জায়েদ খানকেও বয়কটের ঘোষণা দিয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন পরিচালক সমিতির নেতা মুশফিকুর রহমান গুলজার, বদিউল আলম খোকন, প্রযোজক সমিতির নেতা খোরশেদ আলম খসরু, শামসুল হক, অভিনেতা ওমর সানী, প্রযোজক মো. ইকবালসহ অনেকে।
চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতির সভাপতি মুশফিকুর রহমান গুলজার। বলেন, ‘জায়েদ খানকে নিয়ে অনেকের অনেক অভিযোগ। তিনি প্রযোজক ও পরিচালকদের সম্মান না দিয়ে, তাদের হেয় করে কথা বলেন। শুধু প্রযোজক ও পরিচালকই নয়, অনেক শিল্পীকেও তিনি নানাভাবে অপমান করেছেন। তিনি অনেক শিল্পীকে এসএমএস করে আমাদের তৈরি নীতিমালা না মানতে উৎসাহিত করেছেন। সবমিলিয়ে তাই আমরা সবাই মিলে (১৮টি সংগঠন) জায়েদ খানকে বয়কট করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’
মিশা সওদাগরের বিষয়টি নিয়ে এই নির্মাতা বলেন, ‘‘চলচ্চিত্র নির্মাণে শৃঙ্খলা আনতে ও নির্মাণ ব্যয় কমাতে গত অক্টোবরে একটি নীতিমালা প্রণয়ন করেছে প্রযোজক সমিতি। এটি বাস্তবায়ন হলে চলচ্চিত্র নির্মাণের খরচ ন্যূনতম ১৫ লাখ টাকা কমে যাবে। বিষয়টি নিয়ে একটি শুটিং ফ্লোরে অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটান মিশা। তখন প্রযোজক সমিতি তার বিরুদ্ধে অ্যাকশন নেয়। এটা লকডাউনের আগের ঘটনা। তখন জানানো হয়, প্রযোজক সমিতির কোনও সদস্য মিশাকে নিয়ে কোনও ছবি করবেন না। বা তাকে নিয়ে কেউ অনুমোদন নিতে এলে, তার ছবিটি অনুমোদন করা হবে না। সেই নিষেধাজ্ঞা এখনও বলবত আছে।”
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, বেশ কয়েক মাস ধরেই প্রযোজক-পরিবেশক সমিতি জায়েদ খানের বিরুদ্ধে ‘সংগঠনের স্বার্থবিরোধী কর্মকাণ্ড’র অভিযোগ পেয়েছে।
বিষয়টি একাধিকবার সামনে আসায় বাংলাদেশ চলচ্চিত্র প্রযোজক-পরিবেশক সমিতির পক্ষ থেকে ১৩ জুলাই তার বিরুদ্ধে পাঠানো হয় কারণ দর্শানোর নোটিশ। এর পরপরই আজ ১৮ সংগঠনের নেতারা তাকে বয়কটের ঘোষণা দিলেন।
প্রযোজক নেতা খসরু বলেন, ‘১৩ জুলাই জায়েদকে যে চিঠি পাঠানো হয়েছে, সেটা প্রযোজক পরিবেশক সমিতির সিদ্ধান্ত। আর আজ (১৫ জুলাই) আমরা সব সংগঠন মিলে সিদ্ধান্ত নিলাম তাকে বয়কটের। দুটির সিদ্ধান্ত একই হলেও দুটি দুই প্ল্যাটফর্মের ঘোষণা।’
সংগঠনগুলোর নেতারা জানান, লকডাউন শেষে এখন অনেকেই কাজে ফিরছেন। চলচ্চিত্র কর্মীদের অতিরিক্ত ব্যয় কমিয়ে যে নীতিমালা করা হয়েছে, তা মানা জরুরি। নইলে নাজুক চলচ্চিত্র অতিরিক্ত ব্যয়ে আরও করুণ হয়ে যাবে।
বিষয়টি নিয়ে গুলজার সরাসরি বলেন, ‘‘যদি এই নীতিমালা মানা হয়, তাহলে চলচ্চিত্র থাকবে। আর না হয় আর কোনও চলচ্চিত্রই হবে না। তাই বলে কিছু ‘অযোগ্য’ শিল্পীর দিনের পর দিন এমন আচরণ বরদাস্ত করা হবে না।’’
এর আগে একাধিকবার শাকিব খানকে বয়কট করে একাধিক সমিতি। অনেকে এর জন্য মিশা সওদাগর ও জায়েদ খানকে দায়ি করেন।