Select Page

কানে ‘রেহানা মরিয়ম নূর’: হাততালি, দাঁড়িয়ে সম্মান ও বাঁধনের কান্না

কানে ‘রেহানা মরিয়ম নূর’: হাততালি, দাঁড়িয়ে সম্মান ও বাঁধনের কান্না

কান চলচ্চিত্র উৎসবে বুধবার ছবি দেখে পুরো হল ভর্তি দর্শক ছবি শেষে স্তব্ধ হয়ে গিয়েছিলো। দাঁড়িয়ে মুহু মুহু করতালিতে অভিনন্দন জানিয়েছেন। যাকে বলা হয় স্ট্যান্ডিং ওভেশন।

এ সম্মান অর্জন করেছে বাংলাদেশের ছবি ‘রেহানা মরিয়ম নূর’। আবদুল্লাহ মোহাম্মদ সাদ পরিচালিত ছবিটি ৭৪তম কান চলচ্চিত্র উৎসবের ‘আঁ সার্তেঁ রিগা’ বিভাগে উদ্বোধনী ছবি হিসেবে প্রদর্শিত হয়েছে। বুধবার (৭ জুলাই) স্থানীয় সময় সকাল ১১টা ১৫ মিনিটে (বাংলাদেশ সময় দুপুর ৩টা ১৫ মিনিট) কানের পালে দে ফেস্টিভাল ভবনের সাল দুবুসি প্রেক্ষাগৃহে এটি প্রদর্শিত হয়।

ছবি শেষ হওয়ার সঙ্গে বাতি জ্বলে উঠলো সাল দুবুসি অডিটোরিয়ামের। তার আগেই শুরু হলো মুহুর্মুহু করতালি। আসন ছেড়ে দাঁড়িয়ে গেলো হলের প্রতিটি মানুষ। সামনের সারিতে বসে থাকা ‘রেহানা মরিয়ম নূর’ নির্মাতা আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ সাদ ভাসলেন করতালির ঢেউয়ে আর পাশে দাঁড়িয়ে কান্নায় ডুবু ডুবু অবস্থা আজমেরী হক বাঁধনের।

বাংলা ট্রিবিউনকে বাঁধন বলেন, ‘গতকাল রাতেও আমরা হোটেলে বসে দুশ্চিন্তায় ছিলাম। বাংলাদেশের ছবি কে দেখতে আসবে? কারণ, বাংলাদেশ বা আমাদের সিনেমা এখানকার ক’জন মানুষই বা চেনে। খবর নিয়েছি হলটাও অনেক বড়। ১ হাজার আসন! আমাদের ধারণা ছিল শ’খানেক মানুষ আসবে! কিন্তু সকল ধারণা ভুল প্রমাণ হলো। জনসমুদ্র পেলাম ছবি শুরুর আগেই।’

আরও বলেন, ‘শুটিংয়ের পর আমি প্রথম ছবিটি দেখলাম। ফলে এই দেখাটা আমার জন্য আরও অন্যরকম আনন্দ আর বেদনার। কারণ, পর্দায় ছড়িয়ে থাকা রেহানার বেদনাটি আমাকেও ঘিরে ধরেছিল। কিন্তু ছবি শেষ হওয়ার পর সবার এভাবে দাঁড়িয়ে যাওয়া, আমাদের দিকে তাকিয়ে ননস্টপ করতালি দেওয়া- এসব দেখে আমি আর নিজেকে ধরে রাখতে পারিনি। টানা কতক্ষণ করতালি চলেছে সেটার হিসাব না জানলেও, এত দীর্ঘ মুহুমুর্হু করতালি আমি আর শুনিনি।’

স্থিরচিত্রে দেখা যাচ্ছে, কান্নায় ভেঙে পড়ছিলেন বাঁধন, তাকে থামানোর চেষ্টা করছিলেন পাশে দাঁড়ানো সাদ। সাদের মুখে লেগে ছিল করতালির বিপরীতে সৌজন্যতার হাসি।

এ দিন দর্শক সারিতে পাশাপাশি বসেছেন ছবিটির পরিচালক আবদুল্লাহ মোহাম্মদ সাদ, অভিনেত্রী আজমেরী হক বাঁধন, সিঙ্গাপুরের প্রযোজক জেরেমি চুয়া, চিত্রগ্রাহক তুহিন তমিজুল, প্রোডাকশন ডিজাইনার আলী আফজাল উজ্জ্বল, শব্দ প্রকৌশলী শৈব তালুকদার, কালারিস্ট চিন্ময় রয় এবং নির্বাহী প্রযোজক এহসানুল হক বাবু।

ছবিটি দেখে প্রশংসা করেছেন বিভিন্ন দেশের সংবাদকর্মী এবং মার্শে দু ফিল্মে অংশগ্রহণকারী ফিল্ম প্রফেশনালরা।

ছবি শেষে আজমেরী হক বাঁধন উপস্থিত সাংবাদিকদের তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় জানান, ‘এটি আমাদের দেশের জন্য বড় অর্জন। কান উৎসবে এসে বাংলাদেশকে তুলে ধরতে পেরেছি এটাই আমার কাছে সবচেয়ে বড় বিষয়। এখানে সবাই এত প্রশংসা করছে আমাদের, বাংলাদেশের ছবি নিয়ে আশাবাদ জানিয়েছে, এগুলো শুনলে বুকটা ভরে ওঠে।’

ছবিটির চিত্রনাট্য ও সম্পাদনা করেছেন নির্মাতা আবদুল্লাহ মোহাম্মদ সাদ নিজেই।

১ ঘণ্টা ৪৭ মিনিট ব্যাপ্তির ছবিটিতে নাম ভূমিকায় অভিনয় করেন আজমেরী হক বাঁধন। এছাড়া বিভিন্ন চরিত্রে আছেন সাবেরী আলম, আফিয়া জাহিন জায়মা, আফিয়া তাবাসসুম বর্ণ, কাজী সামি হাসান, ইয়াছির আল হক, জোপারি লুই, ফারজানা বীথি, জাহেদ চৌধুরী মিঠু, খুশিয়ারা খুশবু অনি ও অভ্রদিত চৌধুরী।


মন্তব্য করুন