Select Page

চলচ্চিত্র পরিবার ক্ষুব্ধ

চলচ্চিত্র পরিবার ক্ষুব্ধ

fdc.jpg_6359.fdcঅনেকদিন ধরেই দেশীয় চলচ্চিত্রের বাজারে ভারতীয় ছবি চালানোর ষড়যন্ত্র চলছে। এবার ভারতের হিন্দি নতুন চলচ্চিত্র ভারত ও বাংলাদেশে একযোগে মুক্তি দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। এ তথ্য চলচ্চিত্র প্রদর্শক সমিতির এক সূত্রের। সাফটা চুক্তি অনুযায়ী এ উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। অপরদিকে এক বছরেরও বেশি সময় আগে চলচ্চিত্রকে শিল্প ঘোষণা করা হলেও শিল্পের কোনো সুযোগ-সুবিধা এখনো বাস্তবায়ন হয়নি। পাশাপাশি এফডিসির উন্নয়ন এবং আধুনিকায়নে সরকার কর্তৃক অর্থ বরাদ্দের এক বছর পার হলেও এখনো এ উন্নয়ন শুধু টেন্ডার আহ্বান এবং বাতিলের মধ্যে সীমাবদ্ধ রয়েছে বলে অভিযোগ চলচ্চিত্রকারদের। সব মিলিয়ে অস্থিতিশীল দেশের চলচ্চিত্র মাধ্যম। তাই বেশ ক্ষুব্ধ চলচ্চিত্র পরিবার। এ প্রসঙ্গে চলচ্চিত্র সংগঠনের নেতাদের মতামত নিয়েছেন আলাউদ্দিন মজিদ। বাংলাদেশ প্রতিদিনের সৌজন্যে মতামতগুলো বিএমডিবি পাঠকদের জন্য হুবহু তুলে ধরা হলো-

শহীদুল ইসলাম খোকন

সভাপতি, চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতি

শিল্পের কোনো সুযোগ-সুবিধা চলচ্চিত্রকাররা এ পর্যন্ত পায়নি। শুধু প্রেক্ষাগৃহের ট্যাক্স মওকুফ করা হয়েছে। শিল্পের সুযোগ পূর্ণ বাস্তবায়ন হলে চলচ্চিত্র নির্মাণে ব্যাংক ঋণসহ এ শিল্পের উন্নয়নে পূর্ণ শিল্প সুযোগ-সুবিধা পাওয়া যেত। কিন্তু এ বিলম্ব চলচ্চিত্রকাররা মেনে নেবে না। অন্যদিকে এ দেশে ভারতীয় চলচ্চিত্র মুক্তির অপপ্রয়াস চালানো হলে চলচ্চিত্রকাররা প্রয়োজনে রাস্তায় আত্মাহুতি দেবে। ভারতের অঙ্গরাজ্য নয় বাংলাদেশ। চাইলেই ভারতের চলচ্চিত্র এখানে প্রদর্শনের দুঃসাহস দেখানো উচিত নয়। অন্যদিকে এফডিসির উন্নয়নে প্রাপ্ত সরকারি অর্থ অদূরদর্শী পরিকল্পনার কারণে টেন্ডার আহ্বান, বাতিল ও সরকারের কাছে টাকা ফেরত যাওয়া এবং যন্ত্রপাতি কেনার নামে এফডিসির এমডির ঘন ঘন বিদেশ সফরের মধ্যেই সীমাবদ্ধ রয়েছে।

খোরশেদ আলম খসরু

সিনিয়র সহ-সভাপতি, চলচ্চিত্র প্রযোজক সমিতি

চলচ্চিত্রকে শিল্প ঘোষণা করা হয়েছে প্রায় দুই বছর। কিন্তু শিল্পের ‘শ’ও বাস্তবায়ন হয়নি। কোনো নীতিমালাই এখন পর্যন্ত প্রণয়ন হয়নি। চলচ্চিত্রের প্রতি এটি সরকারের বিমাতাসুলভ আচরণের বহিঃপ্রকাশ। পাশাপাশি এ দেশকে ভারতীয় চলচ্চিত্রের বাজারে পরিণত করার পাঁয়তারা চলছে। এটি কোনোভাবেই দেশপ্রেমিক মানুষ মেনে নেবে না। তা ছাড়া এফডিসির উন্নয়নে সরকারি বরাদ্দ টেন্ডার আহ্বান, বাতিল এবং টাকা সরকারের কাছে ফেরত যাওয়ার মধ্যেই সীমাবদ্ধ রয়েছে। সব মিলিয়ে আমরা ভীষণ ক্ষুব্ধ।

মিশা সওদাগর

সাধারণ সম্পাদক, চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতি

চলচ্চিত্রকে শিল্প ঘোষণা করা হয়েছে শুধু কাগজপত্রে। প্রকৃতপক্ষে এর বাস্তবায়নের কোনো লক্ষণ নেই। তার ওপর আবার এখানকার প্রেক্ষাগৃহে ভারতীয় চলচ্চিত্র প্রদর্শনের অপচেষ্টা চলছে। এর মানে বাংলাদেশি চলচ্চিত্র ও শিল্পীদের অপমৃত্যু ঘটানোর নীল-নকশা বাস্তবায়নের চেষ্টা হচ্ছে। তাছাড়া এক বছরেরও বেশি সময় আগে এফডিসির উন্নয়নে সরকারের দেওয়া ৫৯ কোটি টাকা কাজে লাগানো হচ্ছে না। অযোগ্যতার কারণে প্রথম কিস্তিতে নয় কোটি টাকা ফেরত গেছে। দ্বিতীয় কিস্তির টাকাও ফেরত যাওয়ার পথে। এভাবে চলতে থাকলে বর্তমানে চলচ্চিত্রের পুনর্জাগরণ অচিরেই নিভে যাবে।

আবু মুসা দেবু

সভাপতি, চলচ্চিত্র এডিটরস গিল্ড

চলচ্চিত্রকে শিল্প ঘোষণা শুধু প্রেক্ষাগৃহের ট্যাঙ্ মওকুফের মধ্যেই সীমাবদ্ধ রয়েছে। অথচ শিল্পের পূর্ণ সুযোগ-সুবিধা বাস্তবায়ন হলে চলচ্চিত্র নির্মাণে ব্যাংক ঋণ পাওয়া যেত। এতে উৎপাদন বাড়ত। ফলে চলচ্চিত্র শিল্পী এবং এ শিল্পের সঙ্গে জড়িতরা উপকৃত হতো। চলচ্চিত্রের সোনালি দিন ফিরে আসত। পাশাপাশি এ দেশে ভারতীয় চলচ্চিত্র প্রদর্শনে বেনিয়াদের অপচেষ্টা সফল হবে না। দেশপ্রেমিক জনগণই তা প্রতিহত করবে। অন্যদিকে চলচ্চিত্রকে শিল্পের ঘোষণা দিলেও সুযোগ-সুবিধা এখনো আশ্বাসেই সীমাবদ্ধ রয়েছে। আমরা শুধু বিশ্বাস নিয়েই নিঃশ্বাস ফেলছি।

আবদুল লতিফ বাচ্চু

সভাপতি, চলচ্চিত্র চিত্রাগ্রাহক সমিতি

চলচ্চিত্রকে শিল্প ঘোষণা করা হলেও একমাত্র প্রেক্ষাগৃহের করমুক্তি ছাড়া আর কোনো সুযোগ-সুবিধা এখনো পাওয়া যায়নি। এটি দুঃখজনক। এ ছাড়া এফডিসির উন্নয়নে সরকার প্রদত্ত টাকা শুধু টেন্ডার আহ্বান ও বাতিলের মধ্যেই ঘুরপাক খাচ্ছে। এখনো একটি ডিজিটাল ক্যামেরা কেনা সম্ভব হয়নি। প্রথম কিস্তিতে ক্যামেরা ক্রয়ের নয় কোটি টাকা টেন্ডার জটিলতায় ফেরত গেছে। অন্যদিকে ভারতীয় চলচ্চিত্র এ দেশে প্রদর্শনের চেষ্টা আত্দঘাতী উদ্যোগ ছাড়া আর কিছুই নয়। এভাবে দেশীয় শিল্প ধ্বংসের চেষ্টার কোনো মানে হয় না।

সুত্র: বাংলাদেশ প্রতিদিন


মন্তব্য করুন