Select Page

চলচ্চিত্র ফোরামের প্রয়োজন ফুরিয়েছে!

চলচ্চিত্র ফোরামের প্রয়োজন ফুরিয়েছে!

ঢাকঢোল পিটিয়ে চলচ্চিত্রের নানা মাধ্যমের মানুষের সমন্বয়ে গঠিত হয়েছিল ‘বাংলাদেশ চলচ্চিত্র ফোরাম’। গেল বছরের ২ অক্টোবর রাজধানীর ঢাকা ক্লাবে জমকালো অনুষ্ঠানের মাধ্যমে চলচ্চিত্রের এই নতুন সংগঠন যাত্রা শুরু করেছিল। কয়েক মাসের ব্যবধানে দৃশ্যত সংগঠনটির কোনো কার্যক্রম নয়। কেউ কেউ বলছেন— দু-একজন ব্যক্তির স্বার্থে ফোরাম তৈরি হয়েছে। এখন তাদের প্রযোজনা শেষ। কেউ বলছেন, অভ্যন্তরীণ কোন্দলেই সংগঠনে ভাঙন লেগেছে।

যাত্রা শুরুর পর চলচ্চিত্র ফোরামের সদস্যরা ১০ অক্টোবর রাজধানীর ধানমন্ডির ৩২ নম্বরে অবস্থিত জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানায়। এছাড়া সংগঠনটি তৈরির পর আর কোনো কার্যক্রমে অংশ নেয়নি। একাধিক সদস্য জানিয়েছেন, ঠিকমতো কমিটির সদস্যরা মিটিংও করেন না।

জানা যায়, চলচ্চিত্র ফোরাম যাত্রা শুরুর দুই মাসের মাথায় ২৮ নভেম্বর এফডিসিতে ফোরামের সাংগঠনিক সম্পাদক প্রযোজক এমডি ইকবাল ও কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য আবদুল আজিজের মধ্যে তুমুল বাগযুদ্ধ হয়। তারপর থেকেই ভাটা পড়ে এই সংগঠনে।

অনেক দিন ধরে কাকরাইলের অস্থায়ী অফিসেও এর সদস্যদের যেতে দেখা যায় না। ফোরামের সভাপতি ও সাবেক প্রযোজক নেতা নাসির উদ্দিন দিলু বলেছেন, ‘ফোরাম হয়তো ভাঙবে না। তবে শিগগিরই ফোরামের সব কার্যক্রম একেবারেই বন্ধ হয়ে যাবে। এটা নিয়ে আর সামনে এগোনোর কিছু নেই।’

কিন্তু এত তাড়াতাড়ি সংগঠনটি অকার্যকর হওয়ার কারণ কী? ফোরামের সভাপতি বললেন, ‘ওই সময় অনেকের স্বার্থের জন্য সংগঠনটি তৈরির তাগিদ ছিল। তাঁদের স্বার্থ ফুরিয়ে গেছে, এখন ফোরাম থাকলে কি আর না থাকলেই কি! আমি নিজেও কমিটিতে থাকতে চাইনি। কোনো ইচ্ছা ছিল না। আমাকে ডেকে নিয়ে গিয়ে পদ দেওয়া হয়েছে। আমি আর ফোরামের অফিসে যাই না। এ বিষয়ে আমার কোনো আগ্রহ নেই।’

একই কথা ফোরামের সাধারণ সম্পাদক ও চিত্রপরিচালক কাজী হায়াতের মুখেও। তিনি বলেন, ‘আমি ফোরামের অফিসে যাই না। আমি এসবের মধ্যে নেই। আমাকে জোর করে নেওয়া হয়েছিল। আবদুল আজিজ, শাকিব খানসহ যাদের সমস্যার কারণে ফোরাম তৈরি হয়েছিল, তাদের সমস্যা মিটে গেছে, ফোরামও শেষ হয়ে গেছে।’

ফোরাম থাকা না থাকার বিষয়ে ফোরামের মূল উদ্যোক্তা আবদুল আজিজ কিছুই বলতে চাইলেন না। শুধু বললেন, ‘এসব খোঁজ রাখি না। কিছু বলতেও চাই না।’

উল্লেখ্য, চলচ্চিত্র ফোরামের সদস্য সংখ্যা ২০০’র উপরে। মূল কমিটিতে রয়েছেন ২৮ জন। প্রথম কমিটি তিন বছর ক্ষমতায় থাকতে পারবে, এরপর প্রতি দু’বছর পরপর নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।

বাংলাদেশ চলচ্চিত্র ফোরাম এর সভাপতি পদে আছেন প্রযোজক নাসিরউদ্দিন দিলু ও সাধারণ সম্পাদক পরিচালক কাজী হায়াৎ। সহ-সভাপতি হিসেবে আছেন মোহাম্মদ হোসেন (প্রযোজক), নাদের চৌধুরী (অভিনেতা ও পরিচালক), ড্যানি সিডাক (প্রযোজক ও অভিনেতা), নাদের খান (প্রযোজক ও অভিনেতা) ও সেলিম খান (প্রযোজক)। যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কামাল মোহাম্মদ কিবরিয়া লিপু (হল মালিক)। সাংগঠনিক সম্পাদক এম ডি ইকবাল (প্রযোজক), সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মোহাম্মদ রমিজ উদ্দিন (প্রযোজক ও অভিনেতা), ক্রীড়া ও সংস্কৃতি সম্পাদক ফারহান আমিন নূতন (অভিনেত্রী), আন্তর্জাতিক সম্পাদক আরিফা পারভীন জামান মৌসুমী (অভিনেত্রী), দপ্তর সম্পাদক জাহিদ হোসেন (পরিচালক) ও কোষাধ্যক্ষ কামরুজ্জামান কমল (অভিনেতা)।

এছাড়া ফোরামের সদস্য হিসেবে আছেন আব্দুল আজিজ (প্রযোজক), ওমর সানী (অভিনেতা), কাজী মারুফ (অভিনেতা), বিদ্যা সিনহা মিম (অভিনেত্রী), ববি (অভিনেত্রী), অমিত হাসান (অভিনেতা), শবনম বুবলি (অভিনেত্রী), শিবা শানু (অভিনেতা), নানা শাহ (অভিনেতা), ডি জে সোহেল (অভিনেতা), হাফিজুর রহমান সুরুজ (অভিনেতা), বড়ুয়া মনোজিত ধীমান (বাংলাদেশ দর্শক সমিতি), সিরাজুল ইসলাম (বুকিং এজেন্ট), অজিত নন্দী (বুকিং এজেন্ট) ও শাকিব খান (অভিনেতা)।

সূত্র : প্রথম আলো, চ্যানেল আই অনলাইন


মন্তব্য করুন