Select Page

জেকে ১৯৭১: মুক্তিযুদ্ধের চলচ্চিত্রে নতুন এক অধ্যায়

জেকে ১৯৭১: মুক্তিযুদ্ধের চলচ্চিত্রে নতুন এক অধ্যায়

বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধকে কেন্দ্র করে আন্তর্জাতিক মানের সিনেমা ‘জেকে ১৯৭১’। এটা শুধু পত্রিকাওয়ালাদের কথা না, হলে দেখে বুঝলাম সিনেমাটি যেকোনো দেশে যেকোনো ভাষাভাষীর দর্শক বেশ উত্তেজনা নিয়ে উপভোগ করতে পারবেন।

সাধারণ এক যুবক কী করে আস্ত একটা বোয়িং উড়োজাহাজ কিডন্যাপ করে ফেললো কোনো রকম হতাহতের ঘটনা ছাড়াই, তার মানবিকতা, শিশুদের জন্যে বুকের ভেতর চেপে রাখা যন্ত্রণা, ভয়ার্ত যাত্রীরা ধীরে ধীরে তার ভক্ত হয়ে যাওয়া, বিচলিত ক্যাপ্টেন, দোভাষীর ভূমিকা, পাকিস্তানী কেবিন ক্রুর নেতিবাচক অবস্থান— সব একে একে সেলুলয়েডের পর্দায় যেভাবে ফাখরুল আরেফিন খান তুলে ধরেছেন তা এক কথায় অপূর্ব।

কন্ট্রোল রুম-ককপিট থেকে যাত্রীর আসন; এই তিন জায়গার দৃশ্যকে প্রধান উপজীব্য করে খুব কম সংখ্যক চরিত্রের মধ্য দিয়ে মুক্তিযুদ্ধে বিদেশী বন্ধুদের অবদানের এক ইতিহাস পর্দায় আমরা দেখতে পেলাম।

১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে বাংলাদেশের মানুষকে সহায়তার জন্য ফরাসি যুবক জ্যঁ কুয়ে ছিনতাই করেছিলেন ‌পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইনসের (পিআইএ) একটি বিমান। তার দাবি ছিল, বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে ঘরহারা শিশুদের জন্য ২০ টন ওষুধ ও চিকিৎসাসামগ্রী ওই বিমানে তুলে দিতে হবে এবং তাহলেই কেবল মুক্তি পাবে বিমানের সব যাত্রী। জয় তার হয়েছিল তবে পাঁচ বছরের জেল হবার বিনিময়ে।

গড়াই ফিল্মসের ব্যানারে নির্মিত ‘জেকে ১৯৭১’ ছবির নাম ভূমিকায় অভিনয় করেছেন পশ্চিমবঙ্গের সৌরভ শুভ্র দাশ। এ ছাড়া বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের ফ্রান্সিসকো রেমন্ড, রুশ অভিনেত্রী ডেরিয়া গভ্রুসেনকো, অভিনেতা নিকোলাই নভোমিনাস্কি, পশ্চিমবঙ্গের সব্যসাচী চক্রবর্তী, ইন্দ্রনীলসহ আরো প্রায় ৩৬ জন অভিনয়শিল্পী।

ফার্স্ট অফিসারের চরিত্রে অভিষেক সিংকে সত্যিকার অর্থেই বিমানচালক মনে হয়েছে। তিনি অভিনয়ের সেরাটা দিয়েছেন যদিও সংলাপ তেমন ছিল না; তবুও চোখ মুখের অভিব্যক্তি ছিল বেশ স্বচ্ছ। কিন্তু সব্যসাচী চক্রবর্তীকে তেমন শক্তিমান বৈমানিক মনে হয়নি। ইন্দিরা গান্ধীর চরিত্রে যিনি অভিনয় করেন তিনি যথেষ্ট মানিয়ে গেছেন চরিত্রের সঙ্গে; মেকআপের জন্য কলকাতার আলী মোহাম্মদসহ পুরো টিমকে সাধ্যবাদ দিতেই হয়। ছোট একটি চরিত্রে দারুণ অভিনয় দক্ষতা দেখিয়েছেন মাজনুন মিজান।

‘জেকে ১৯৭১’ মুক্তির আগেই প্রদর্শিত হয়েছে একাধিক আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে, জিতেছে পুরস্কারও। মুম্বাই আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে পেয়েছে ‘সেরা ঐতিহাসিক সিনেমার’ স্বীকৃতি। বাংলাদেশের প্রত্যেকটি অঞ্চলের প্রেক্ষাগৃহে এমন একটি আন্তর্জাতিক মানের ছবি মুক্তির আবেদন রেখে গেলাম। মুক্তিযুদ্ধের সিনেমার ইতিহাসে আরো একটি নতুন অধ্যায় যুক্ত হলো বলে আমি বিশ্বাস করি।

বি. দ্র. যারা কষ্ট করে টিকিট কেটে হলে সিনেমা দেখতে আসেন, তাদের সবার উচিত মুঠোফোন ব্যাগে বা পকেটের ভেতর নিরব রাখা।


লেখক সম্পর্কে বিস্তারিত

রোদেলা নীলা একজন স্বাধীনচেতা মানুষ, তার কবিতায়, তার প্রবন্ধে অথবা গল্পের প্রত্যেকটি শব্দের মধ্যে আছে আধুনিকতার ছোঁয়া এবং নিজের মুক্ত চিন্তাকে মেলে ধরবার আকাঙ্ক্ষা। কবিতা তার প্রিয় বিষয়ের মধ্যে অন্যতম একটি, এর বাইরেও তিনি নিয়মিত আর্টিকেল লেখেন দেশের এবং দেশের বাইরের দৈনিক পত্রিকাগুলোতে। ঘুরতে পছন্দ করেন বলেই তার গল্পের ভাঁজে ভাঁজে আছে ভ্রমণ পিয়াসীদের জন্য অজানা অনেক তথ্য। বেতার বাংলা পত্রিকায় ছাপার অক্ষরে প্রথম প্রকশিত হয় তার লেখা গল্প- নীল শাড়ি। এরপর থেকে তার গল্প কবিতা প্রবন্ধ জায়গা করে নেয় দৈনিক জনকন্ঠ, দৈনিক প্রথম আলো, দৈনিক কালের কন্ঠ,দৈনিক নয়া দিগন্ত, অনন্যা পাক্ষিক ম্যাগাজিন, মাসিক রোদসী, ত্রৈমাসিক পত্রিকা জয়তী, নিউ ইওর্কের দেশ পত্রিকা থেকে আরম্ভ করে বহু অনলাইন প্লাটফর্মে। এর বাইরেও বাংলা ব্লগ গুলোতে তার সারাক্ষণ পদচারণা থাকে । শব্দনিড় ব্লগ, সামহোয়্যারইন ব্লগ, বিডিনিউজ২৪ ব্লগ, মুভি ডাটা বেজ ব্লগে নিয়মিত লিখে আসছেন কবি এবং কথা সাহিত্যিক রোদেলা নীলা। শুধু বাংলাদেশে নয়, পাশের দেশ ভারতের কোলকাতাতেও তার অনেক ভক্ত পাঠক রয়েছে। ২৬শে ফেব্রুয়ারী ১৯৭৭ সালে ঢাকায় কবি’র জন্ম, বাবা মরহুম আব্দুল হামিদ ; পেশায় ছিলেন সরকারী কর্মকর্তা। তাদের আদি নিবাস টাঙ্গাইলে হলেও ঢাকাতেই লেখকের বেড়ে ওঠা, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে গণিত নিয়ে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি পাশ করেছেন। মা মাজেদা বেগম সব সময় লেখালেখির বিরোধিতা করে আসলেও প্রকাশিত সব বই খুঁটিয়ে পড়েন এবং ভুল ধরে দেন । লেখকের ইচ্ছে আছে কিছু পয়সা কড়ি জমাতে পারলে জীবনের শেষ সময়টা বিশ্ব ঘুরে কাটাবেন। রোদেলা নীলা’র প্রকাশিত বই : কবিতা : ফাগুনঝরা রোদ্দুর(২০১০) ,ভাষাচিত্র প্রকাশনী পঞ্চপত্রের উপপাদ্য (২০১২) , এক রঙ্গা এক ঘুড়ি প্রকাশনী দ্বৈত কবিতার বই – নীলপদ্ম (২০১৫) ,যমুনা প্রকাশনী। নিমগ্ন গোধুলি ( ২০১৬) , অন্যধারা প্রকাশনী চায়ের কাপে অপেক্ষা (২০১৯) , বাংলাদেশ রাইটার্স গিল্ড একক গল্প গুচ্ছ : রোদ্দুরের গল্প (২০১৫ ), আলপনা প্রকাশনী চলতি পথের গপ্পো (২০১৬) , বিদ্যা প্রকাশ গল্পগুলো কাল্পনিক নয় ( ২০২২) , কারুবাক প্রকাশনী ভ্রমণ গল্প : পিয়াইন নদীর স্রোতে (২০১৬) , জয়তী প্রকাশনী মেঘ বালিকার দেশে (২০১৭) , মহাকাল প্রকাশনী ময়ামায়া থেকে কাশ্মীর(২০২৩),কারুবাক প্রকাশনী

মন্তব্য করুন