ডানকি: মাল্টিপ্লেক্সে প্রায় ৩ কোটি টাকার টিকিট বিক্রি?
অনন্য মামুন নেতৃত্বাধীন হিন্দি সিনেমা আমদানির সময় বক্স অফিস সিস্টেম চালুর কথা বলা হয়েছিল। কিন্তু একের পর এক সিনেমা মুক্তির পরও টিকিট বিক্রি বা লাভের তথ্য অপর্যাপ্তই রয়ে গেছে। এমনকি ভারতীয় পরিবেশকদের সরবরাহ করা তথ্যও মিলছে না।
সর্বশেষ গত শুক্রবার রাজকুমার হিরানির ‘ডানকি’ দেশের ৩৫টি সিঙ্গেল হলে মুক্তি পায়। সঙ্গে ছিল ১০টি মাল্টিপ্লেক্স। সিনেমাটি হলে গড়পড়তা ব্যবসা হলেও মাল্টিপ্লেক্সে দর্শকের বেশ চাপ ছিল। মাল্টিপ্লেক্সের ৮০ থেকে ৯০ শতাংশ শো হাউসফুল ছিল। তবে সিঙ্গেল স্ক্রিনে বরাবরের মতোই ভালো ফলাফল করতে পারছেন না আমদানি করা হিন্দি সিনেমা।
পরিবেশকরা স্পষ্ট তথ্য না দিলেও ফেসবুক ভিত্তিক ইন্ডাস্ট্রি ট্র্যাকার বাংলা মুভি রিভিউ জানায়, এক সপ্তাহে দেশের মাল্টিপ্লেক্সগুলোতে বিক্রি হয়েছে ‘ডানকি’র দুই কোটি ৯৫ লাখ টাকার টিকিট। আর এ অঙ্কের কতটা পরিবেশকের পকেটে যাবে তা স্পষ্ট নয়। অবশ্য এ হিসাব স্বীকার করেননি বাংলাদেশি পরিবেশকরা।
বাংলা মুভি রিভিউ সূত্রে জানা যায়, মূলত স্টার সিনেপ্লেক্স, ব্লকবাস্টার সিনেমাস ও লায়ন সিনেমার মতো একাধিক পর্দা বিশিষ্ট হলে অনলাইন বুকিং ফলো করে তারা টিকিট বিক্রির ডেটা প্রস্তুত করে। সে হিসেবে তাদের হাতের বাইরে রয়ে গেছে বেশির ভাগ হলের তথ্য। অন্যদিকে একটি মাল্টিপ্লেক্স যে পরিমাণ ব্যবসা দিতে পারে, তা কয়েকটি সিঙ্গেল স্ক্রিন দিয়েও আজকাল সম্ভব নয়।
‘ডানকি’–এর পরিবেশক প্রতিষ্ঠান অ্যাকশন কাট এন্টারটেইনমেন্টের পক্ষ থেকে কামাল কিবরিয়া প্রথম আলোকে জানান, সিনেমা নিয়ে তাদের প্রত্যাশা পূরণ হয়নি। তাদের প্রত্যাশা ছিল, দর্শকের আগ্রহ আরও বেশি থাকবে। তবে মোটামুটি তারা দর্শক ধরতে পেরেছেন।
সব মিলিয়ে সাত দিনে কতটা শো হয়েছে, জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘শুধু সিঙ্গেল হলে সাত দিনে প্রতিদিন চারটি করে শো হয়েছে। ৩৫টি হল, সব মিলিয়ে ৯৮০টি শো হবে। মাল্টিপ্লেক্সের হিসাব এই মুহূর্তে বলতে পারছি না।’
মাল্টিপ্লেক্স ও সিঙ্গেল হল থেকে সিনেমাটি সাত দিনে কত টাকা আয় করেছে, জানতে চাইলে পরিবেশক কিবরিয়া বলেন, ‘এটার প্রকৃত পরিমাণটা বলতে পারব না। এটা একটু জটিল। কারণ, কোথা থেকে কত টাকা আয় করেছে, সব হিসাব আমরা এখনো পাইনি। মাল্টিপ্লেক্স থেকে পাওয়া গেলেও সেটা বলতে পারছি না।’
তিনি আরোও বলেন, ‘আমাদের এখানে বক্স অফিস নেই। যে কারণে আমার সিনেমা যে ৩৫টি সিঙ্গেল হলে চলেছে, সেই হিসাব কবে পাব বলতে পারছি না। হয়তো হিসাব হয়েছে। কিন্তু সেগুলো না পেলে তো বলা যাবে না। এখন আমরা তাদের একটা পারসেন্টেজে সিনেমাটি দিয়েছি। সেটা সঠিকভাবে হিসাব করে বের করাটাও জটিল। তারা যেভাবে হিসাব দেবে, সেটাই ধরে নিতে হবে আসল।’
সিঙ্গেল হলে কোন শর্তে চুক্তি করেছেন, জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমরা সিনেমা হল বুঝে পারসেন্টেজের শর্তে গিয়েছি। কিছু হল টিকিট বিক্রির ৩০ ভাগ টাকা দেবে, কিছু হল ২৫ ভাগ টাকা দেবে, এভাবে। যে কারণে আমরা এখনই জানাতে পারছি না, সব মিলিয়ে “ডানকি”র আয় কত।’
বাংলা মুভি রিভিউতে মাল্টিপ্লেক্সে টিকিট বিক্রির অঙ্ক প্রসঙ্গে কিবরিয়া বলেন, ‘এগুলো আমি জানি না। কেউ কেউ মনগড়া হিসাব দিতে পারে। আমরা এমন কোনো হিসাব এখনো দিইনি। তবে জানাব।’
‘ডানকি’র পরিবেশকদের অন্যতম পরিচালক অনন্য মামুন। তিনি এই মুহূর্তে ভারতে রয়েছেন। সেখানে থেকে বাংলাদেশে ছবিটির আয় প্রসঙ্গে বলেন, ‘ফেসবুকে আয় নিয়ে অনেক কথাই হচ্ছে। এসব তথ্য সত্য নয়। “ডানকি” বাংলাদেশ থেকে সাত দিনে কত আয় করেছে, সেটা এখনই বলতে পারব না।’
এদিকে হল পরিস্থিতি নিয়ে স্টার সিনেপ্লেক্সের প্রধান বিপণন কর্মকর্তা মেজবাউদ্দিন বলেন, ‘আমাদের দর্শক মোটামুটি ছিল। আমরা খুশি। প্রতিদিন ৩৯টি করে শো চলেছে। সবগুলো শো হাউসফুল হয়নি। তবে এটাকে ভালোই বলা যায়। এই সপ্তাহ থেকে মনে হচ্ছে, দর্শক বেশি পাব। আজ ভালো গেছে। দর্শকের চাপ বুঝতে পারছি। যে কারণে মনে হচ্ছে, সপ্তাহটা ভালো যাবে।’
গত সাত দিনে স্টার সিনেপ্লেক্স থেকে কত আয়, জানতে চাইলে মেজবাউদ্দিন বলেন, ‘এটা আমরা ডিস্ট্রিবিউটরদের ভাগ করে দিয়ে দিয়েছি। ঠিকমতো ফিগারটা তারাই ভালো বলতে পারবেন।’