Select Page

লিডার আমিই বাংলাদেশ: সোয়া ২ কোটি টাকা খরচ করে আয় ৭৬ লাখ টাকা!

লিডার আমিই বাংলাদেশ: সোয়া ২ কোটি টাকা খরচ করে আয় ৭৬ লাখ টাকা!

শুরুতে ‌‘লিডার আমিই বাংলাদেশ’-এর বাজেট ছিল ১ কোটি ২০ লাখ টাকা। কিন্তু শেষ পর্যন্ত খরচ হয় ২ কোটি ২৫ লাখ টাকা…

ছবির মহরতে শাকিব-বুবলির সঙ্গে প্রযোজক ও অভিনেতারা

পরিচালক তপু খানের বরাতে সুপারহিট শোনা গেলেও ‘লিডার: আমিই বাংলাদেশ’ ছবিতে লগ্নিকৃত টাকার এক-তৃতীয়াংশও উঠে আসেনি। এ তথ্য দিয়েছেন আরটিভির প্রধান নির্বাহী ও প্রযোজক সৈয়দ আশিক রহমান। চুক্তি অনুযায়ী লগ্নিকৃত টাকা ফেরত পেতে তপু খানকে আইনি নোটিশও পাঠিয়েছেন। এ বিষয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে সংবাদমাধ্যম খবরের কাগজ

সৈয়দ আশিক রহমান জানান, শুরুতে সিনেমার বাজেট ছিল ১ কোটি ২০ লাখ টাকা। কথা ছিল এই টাকার মধ্যেই সিনেমা শেষ করতে হবে। কিন্তু কাজ শুরু করার পরই অর্থসংকটে পড়েন পরিচালক তপু খান। প্রযোজকের ভাষ্য অনুসারে, চুক্তি সাপেক্ষে তাকে দেওয়া হয় আরও ৬০ লাখ টাকা। সিনেমা মুক্তি পর্যন্ত পোস্টার, ব্যানার, হলের মেশিনভাড়াতে যায় আরও ৪৫ লাখ। সব মিলিয়ে এই সিনেমাটির পেছনে ব্যয় হয় ২ কোটি ২৫ লাখ টাকা।

প্রযোজক বলেন, ‘সোশ্যাল মিডিয়ায় অনেকে লিখেছে সিনেমা থেকে নাকি ৭ কোটি টাকা পেয়েছি। এগুলো গুজব। সিনেমাটি থেকে উঠেছে মাত্র ৭৫-৭৬ লাখ টাকা। সিঙ্গেল স্ক্রিন থেকে সব মিলিয়ে ৪৫-৪৬ লাখ, বাকি টাকা সিনেপ্লেক্স থেকে। এই ক্ষতি কীভাবে পূরণ করব জানি না।’

সৈয়দ আশিক রহমান বলেন, ‘পরিচালকের ওপর আমার অতটা আত্মবিশ্বাস ছিল না। তার পরও তার অনুরোধ রেখেছি। তিনি বিনিয়োগ করা টাকা তুলে আনতে ব্যর্থ হলেন। টাকা ফেরত চাইলে বলেছেন, স্যার একটা সুযোগ দেন, দিয়েছি। তিনি টাকা ফেরত দেননি, দিতে পারছেন না। মানবিকতার খাতিরে টাকা ফেরতের জন্য সময় দিয়েছি।’

এও বলেন, ‘তাকে কিছু কাজ দিয়েছি। বলেছি কাজ করে করে আমাদের টাকা ফেরত দিতে।’

কী কারণে সিনেমাটি আয় করতে পারল না বলে মনে করেন? জানতে চাইলে আশিক রহমান বলেন, ‘ওই সময়টা অনেক খারাপ ছিল। শাকিবের নামে ধর্ষণের একটা অভিযোগ উঠল। এ জন্য ব্র্যান্ডিংও ঠিক মতো করতে পারিনি। ব্র্যান্ডিংয়ে ৭০-৮০ লাখ টাকা খরচের পরিকল্পনা ছিল। কিন্তু এ কাজে প্রস্তুত পৃষ্ঠপোষকদের আমরা হারিয়েছি। শাকিব খানও ১৫ দিনের কথা বলে ৯ মাস পর আমেরিকা থেকে ফিরেছিলেন। তখন একটা ধাক্কা খেলাম। কারণ সিনেমাটি আগের বছর মুক্তি পাওয়ার কথা ছিল। তার কাছে আমরা অসহায়। তিনি দেশে আসার পর নানা ঘটনায় সিনেমার অবস্থা খারাপ হয়ে গেছে। শাকিব খান আমাদের পিঠের ওপর দিয়ে পার হয়ে গেছেন। কারণ আমাদের এই সিনেমা দিয়ে তিনি কামব্যাক করেছেন। টাকা লস করে বিপদে পড়েছি আমরা। কিন্তু শাকিবের ঠিকই উপকার হয়েছে। পরে তিনি আরও সিনেমা করার সুযোগ পেয়েছেন।’

শাকিব-বুবলির সঙ্গে তপু খান

টাকা ফেরত চেয়ে আইনি নোটিশ পাঠানো হয়েছিল পরিচালক তপু খানকে। বিষয়টি তিনি অস্বীকার করে বলেন, ‘আইনি নোটিশ না, আমাদের মধ্যে একটা মনোমালিন্য হয়েছিল। পরে আমরা নিজেরাই বিষয়টির সমাধান করেছি।’

আর্থিক ক্ষতি প্রসঙ্গে তপু খান বলেন, ‘টাকা ফেরত চাওয়ার সঙ্গে সিনেমার আর্থিক ক্ষতির কোনো সম্পর্ক নাই। আমি টাকা ফেরত দেব কেন? আমি কি সিনেমার প্রযোজক? এখনো এই সিনেমার ওটিটি ও টিভি রাইটস সেল হয়নি। এসব বিক্রি হওয়ার আগেই ক্ষতি হয়েছে সেটা বলা যাবে না। সিনেমা শেষ করতে যেহেতু লেট হয়েছে, সে জন্য আশিক সাহেব একটু বিরক্ত ছিলেন। শাকিব ভাইও হয়তো বলবেন আগের ঈদে সিনেমাটি কেন রিলিজ দেওয়া হলো না। আসলে শাকিব খান ও আশিক স্যারের মধ্যকার মনস্তাত্ত্বিক দূরত্বের বলি হলাম আমি।’

গত ঈদুল ফিতরে দেশের শতাধিক প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পেয়েছিল ‘লিডার আমিই বাংলাদেশ’। এতে আরো অভিনয় করেন শবনম বুবলি, মিশা সওদাগর, শহীদুজ্জামান সেলিম, সমু চৌধুরী প্রমুখ।

উল্লেখ্য এটিই শাকিব-বুবলি জুটির শেষ সিনেমা। ওই সিনেমার শেষ হওয়ার আগেই শাকিবের সঙ্গে বিয়ে ও সন্তানের খবর প্রকাশ্যে আনেন বুবলি। অবশ্য এর আগেই দুজনের সম্পর্কের অবনতি হয় বলে শোনা যায়। গানের মাধ্যমে ‘লিডার আমিই বাংলাদেশ’-এর ক্যামেরা অফ হলেও বেশ দূরত্ব রেখেই রোমান্টিক গানটিতে পারফর্ম করেন দুই তারকা।


মন্তব্য করুন