‘তিতাস একটি নদীর নাম’-এর ৫০ বছরে হাবিবুর রহমানসহ ৭ নির্মাতা
কালজয়ী ও ভিন্নধারার বেশকিছু সিনেমার প্রযোজক হাবিবুর রহমান খান। ১৯৭২ সালে ১৬ জুলাই ঋত্বিক কুমার ঘটকের ‘তিতাস একটি নদীর নাম’ ছবির মাধ্যমে প্রযোজক হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন তিনি। সে হিসেবে এই ১৬ জুলাই চলচ্চিত্রে তার ৫০ বছর পূর্ণ হতে যাচ্ছে।
‘তিতাস একটি নদীর নাম’ ছবিটি মুক্তি পেয়েছিল ১৯৭৩ সালের ২৭ জুলাই। পরবর্তী সময়ে তিনি প্রযোজনা করেন পদ্মা নদীর মাঝি, হঠাৎ বৃষ্টি, মনের মানুষ, শঙ্খচিলসহ আরো অনেক শিল্পশোভন ছবি। আবার কালজয়ী অনেক বাণিজ্যিক সিনেমা উপহার দিয়েছেন তিনি।
হাবিবুর রহমান দুটি প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা করেন। একটি হলো আশীর্বাদ চলচ্চিত্র, অন্যটি হলো শাওন সাগর লিমিটেড।
তিনি একজন দক্ষ সংগঠকও। চলচ্চিত্রের জন্য ১৯৭২ সালের ১৬ জুলাইতেই একত্রিত করেন একঝাঁক মেধাবী তরুণকে। ছবির পেছনে নানা ভূমিকায় কাজ করেন ফখরুল হাসান বৈরাগী, তমিজ উদ্দীন রিজভী, আখন্দ সানোয়ার মোরশেদ, শমশের আহমেদ, আওলাদ হোসেন চাকলাদার, এ জে মিন্টু ও ছটকু আহমেদ। এরপরই গড়ে তোলেন ‘শাওন সাগর লিমিটেড’। সাতজন ছিলেন এই প্রযোজনা প্রতিষ্ঠানের পরিচালক।
এই নির্মাতারা পরবর্তী সময়ে তৈরি করেন চলচ্চিত্র ‘সেয়ানা’, ‘মিন্টু আমার নাম’, ‘প্রতিজ্ঞা’, ‘বাঁধন হারা’, ‘ছোট মা’, ‘আশীর্বাদ’, ‘নাত বৌ’, ‘রাজদণ্ড’, ‘ঘর জামাই’, ‘প্রাণ সজনী’, ‘বড় ভালো লোক ছিল’-এর মতো অসাধারণ সব ছবি।
চলচ্চিত্রে তাদের ৫০ বছর উপলক্ষে বাংলাদেশ অস্কার চলচ্চিত্র বাছাই কমিটির চেয়ারম্যান ও প্রযোজক হাবিবুর রহমান খানের ভাবনায় ও ছটকু আহমেদের পরিচালনায় একটা ডকুমেন্টারি ছবি নির্মিত হয়েছে। সেখানে রয়েছে চলচ্চিত্রে তাদের বর্ণাঢ্য কারিয়ারের গল্প।
শনিবার সন্ধ্যা ৬টায় ডকুমেন্টারি ছবিটির প্রদর্শনী হবে চ্যানেল আইয়ে। সকাল ১১টায় ‘তারকা কথন’ অনুষ্ঠানে হাজির হবেন ছটকু আহমেদসহ সবাই।
ছটকু আহমেদ বলেন, ‘মাহেন্দ্রক্ষণটির অপেক্ষায় আছি। দেখতে দেখতে ৫০ বছর পার করে দিলাম চলচ্চিত্রে। সুখ-দুঃখ, হাসি-কান্নার অনেক স্মৃতি জড়িয়ে আছে সবাইকে ঘিরে। সেগুলো ডকুমেন্টারিতে তুলে ধরার চেষ্টা করেছি। বাংলাদেশ চলচ্চিত্রের জন্য এটা সম্পদ হিসেবে থাকবে। আমরা প্রযোজক হাবিবুর রহমান হাবিব ভাইয়ের কাছে ঋণী। তিনি আমাদের প্রত্যেকের কাজ করার সুযোগ করে দিয়েছেন। আমরা মনের মতো কিছু ছবি নির্মাণ করতে পেরেছি শুধু তাঁরই ইচ্ছায়। আমরা ছাড়াও তাঁর প্রযোজনায় আরো কিছু কালজয়ী ছবি নির্মাণ করেছেন অন্য নির্মাতারা, যা বাংলাদেশের চলচ্চিত্রকে সমৃদ্ধ করেছে, নিয়ে গেছে অনন্য উচ্চতায়। ’
চলচ্চিত্রের যাত্রাপথে অনেককে সঙ্গী হিসেবে পেয়েছেন এই পরিচালকরা। তাদের অনেকে এই ডকুমেন্টারিতে পরিচালকদের সম্পর্কে অভিজ্ঞতার কথা বলেছেন। তাঁদের মধ্যে আছেন প্রখ্যাত চলচ্চিত্র ব্যক্তিত্ব সৈয়দ হাসান ইমাম, সৈয়দ সালাহউদ্দিন জাকী, শাহ আলম কিরণ, এফ আই মানিক এবং ভারতীয় চলচ্চিত্র প্রযোজক বিজয় খেমকা ও পরিচালক গৌতম ঘোষ। বাংলাদেশ থেকে আরো আছেন সদ্যপ্রয়াত সুরকার আলম খান, শিল্প নির্দেশক মহিউদ্দিন ফারুক, স্থির চিত্রগ্রাহক ফিরোজ এম হাসান, প্রবীর মিত্র, সোহেল রানা. রোজিনা, ববিতা, ফেরদৌস, আবুল হায়াত এবং চ্যানেল আইয়ের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ফরিদুর রেজা সাগর।