Select Page

নাসির উদ্দিন খান অভিনীত ‘বলী’র বুসান জয়

নাসির উদ্দিন খান অভিনীত ‘বলী’র বুসান জয়

বুসান চলচ্চিত্র উৎসবের ২৮তম আসরে পুরস্কার জিতলো ইকবাল হোসাইন চৌধুরী পরিচালিত ‘বলী’। নিউ কারেন্টস বিভাগে প্রথম হয়েছে নাসির উদ্দিন খান অভিনীত ছবিটি। আজ শুক্রবার (১৩ অক্টোবর) রাত ৭টায় (বাংলাদেশ সময় বিকাল ৪টা) বুসান সিনেমা সেন্টারের বিআইএফএফ আউটডোর থিয়েটারে সমাপনী অনুষ্ঠানে পুরস্কার প্রদান করা হবে।

চট্টগ্রামের ঐতিহ্যবাহী জব্বারের বলী খেলার প্রেক্ষাপটে নির্মিত ‘বলী’র গল্প মধ্যবয়সী মজুকে কেন্দ্র করে। তার চরিত্রে অভিনয় করেছেন নাসির উদ্দিন খান। এছাড়া আছেন প্রিয়াম অর্চি, অ্যাঞ্জেল নূর, একেএম ইতমাম। ছবিটি প্রযোজনা করেছেন পিপলু আর খান। সহ-প্রযোজনায় সাইফুল আজিম।

পরিচালক ইকবাল হোসাইন চৌধুরী জানান,,‌ বলী সাগরপাড়ের গল্প। সাগরের মতোই বলী ছবির মূলত দুটি রূপ। একটি খুবই শান্ত, রহস্যময়। আরেকটি খুবই নিষ্ঠুর বিধ্বংসী রূপ। সিনেমার দুটি পোস্টারে এ দুই রূপ ধরা পড়েছে।

নিউ কারেন্টস বিভাগে বিচারকদের প্রধান দক্ষিণ কোরিয়ান চলচ্চিত্র সমালোচক জুং সাং-ইল। তার নেতৃত্বে বিচারক প্যানেলে কাজ করেছেন দক্ষিণ কোরিয়ান পরিচালক হান জুন-হি (ডি.পি, ডি.পি. টু) ফরাসি সাংবাদিক ও কান চলচ্চিত্র উৎসবের সমান্তরাল বিভাগ ক্রিটিকস’ উইকের আর্টিস্টিক পরিচালক আভা কায়েন, ইন্দোনেশিয়ান পরিচালক এডউইন এবং আমেরিকান প্রযোজক ক্রিস্টিনা ও (ওকজা, মিনারি)।

‘বলী’ প্রসঙ্গে বিচারকদের মন্তব্য, ‘বলী’ একটি চমৎকার এক রাউন্ড ম্যাচের মতো, যার মাধ্যমে মনোমুগ্ধকরভাবে একটি রোমাঞ্চকর কাহিনি বর্ণনা করা হয়েছে।

গত বছরের এপ্রিল-মে মাসে ছবিটির টানা শুটিং হয়েছে চট্টগ্রামের উপকূলীয় এলাকায়। তারও আগে লম্বা সময় নিয়ে চলেছে ছবির অডিশন। চট্টগ্রাম ও ঢাকার মঞ্চের একদল নবীন প্রতিভাবান শিল্পী কাজ করেছেন এ সিনেমায়। এ বছরের শেষে সিনেমাটি প্রেক্ষাগৃহে আসতে পারে।

পরিচালক জানালেন, সিনেমায় চট্টগ্রামের আঞ্চলিক ভাষার ব্যবহার নিয়ে, ‘চট্টগ্রামের নতুন প্রজন্মের অনেকে চট্টগ্রামের ভাষায় কথা বলতে তেমন আগ্রহী নয়। এ কারণে আমাদের আঞ্চলিক ভাষার অনেক শব্দ হারিয়ে যাচ্ছে। “বলী” (দ্য রেসলার) এই ভাষাকে সংরক্ষণ করবে দীর্ঘদিন। কারণ, এই ছবি এরই মাঝে বুসান সিনেমা সেন্টারের আর্কাইভে জায়গা করে নিয়েছে।’

নিউ কারেন্টস বিভাগে দ্বিতীয় পুরস্কার পেয়েছে জাপানের মোরি তাতসুয়া পরিচালিত ‘সেপ্টেম্বর ১৯২৩’। দুই সিনেমাই পুরস্কার হিসেবে ৩০ হাজার ডলার পেয়েছে।

এশিয়ার প্রতিশ্রুতিশীল ও উদীয়মান নির্মাতাদের প্রথম ও দ্বিতীয় চলচ্চিত্রের প্রতিযোগিতা বিভাগ নিউ কারেন্টসে বাংলাদেশ থেকে ‘বলী’ ছাড়াও নির্বাচিত হয় বিপ্লব সরকারের ‘আগন্তুক’।

বুসানে এবার দুটি প্রতিযোগিতা বিভাগে তিনটি চলচ্চিত্র এবং এশিয়ান প্রজেক্ট মার্কেটে একটি প্রকল্পসহ বাংলাদেশের সরব উপস্থিতি দেখা গেছে। এশিয়ার গুরুত্বপূর্ণ উৎসবটিতে এবারই প্রথম বাংলাদেশের তিনটি ছবি প্রতিযোগিতায় স্থান পেয়েছে। বুসানে বাংলা ভাষার তিনটি ছবিই প্রশংসিত হয়েছে। জিসোক বিভাগে নির্বাচিত মোস্তফা সরয়ার ফারুকীর ‘সামথিং লাইক অ্যান অটোবায়োগ্রাফি’ এবং নিউ কারেন্টস বিভাগে নির্বাচিত ‘আগন্তুক’ ও ‘বলী’।

গত ৪ অক্টোবর শুরু হয় ১০ দিনের বুসান চলচ্চিত্র উৎসব। এবারের অফিসিয়াল সিলেকশনে স্থান পেয়েছে ৬৯টি দেশের ২০৯টি চলচ্চিত্র। উৎসবের বিভাগগুলো হলো– গালা প্রেজেন্টেশন, আইকনস, জিসোক, অ্যা উইন্ডো অন এশিয়ান সিনেমা, নিউ কারেন্টস, কোরিয়ান সিনেমা টুডে, ওয়ার্ল্ড সিনেমা, ফ্ল্যাশ ফরওয়ার্ড, ওয়াইড অ্যাঙ্গেল, ওপেন সিনেমা, মিডনাইট প্যাশন, অন স্ক্রিন, স্পেশাল প্রোগ্রাম ইন ফোকাস এবং স্পেশাল স্ক্রিনিং।

ইন্দোনেশিয়ার ৭টি পূর্ণদৈর্ঘ্য কাহিনিচিত্র, ৫টি স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র ও ১টি ওয়েব সিরিজ নিয়ে এবার রাখা হয়েছে বিশেষ শাখা ‘রেনেসাঁ অব ইন্দোনেশিয়ান সিনেমা’। অফিসিয়াল সিলেকশনের সঙ্গে দেখানো হয়েছে কমিউনিটি বিআইএফএফ-এর ৬০টি ছবি। খবর বাংলা ট্রিবিউন ও প্রথম আলো।


মন্তব্য করুন