দিলদার-নাসরিন জুটি
যদি সুন্দর একখান বউ পাইতাম
দিবানিশি তারে আমি ভালোবাসিতাম
আয়না করে তারে দেখিতাম
কলিজা করে বুকে রাখিতাম
আইলো না কেউ আইলো না
আমার বউ হইল না
জ্বালাইয়া গেল মনের আগুন
নিভাইয়া গেল না
তুমি যাও যাও দূরে যাও
কাছে এসো না
আমি তোমার মতো লোফারের
বউ হব না
যদি সুন্দর একখান বউ পাইতাম
দিবানিশি তারে আমি ভালোবাসিতাম
সন্ধ্যা হইলে সিনেমায় নিতাম
নিশি রাইতে মনের কথা বলিতাম
আইলো না কেউ আইলো না
আমার বউ হইল না
জ্বালাইয়া গেল মনের আগুন
নিভাইয়া গেল না
তুমি যাও যাও দূরে যাও
কাছে এসো না
আমি তোমার মতো পুরুষের
বউ হব না
যদি সুন্দর একখান বউ পাইতাম
দিবানিশি তারে আমি ভালোবাসিতাম
বাড়ি গাড়ি শাড়ি কিনিয়া দিতাম
দেশ-বিদেশে নিয়া ঘুরিতাম
আইলো না কেউ আইল না
আমার বউ হইল না
জ্বালাইয়া গেল মনের আগুন
নিভাইয়া গেল না
রেডিও-র দিনগুলোতে সেই সময়ে এ গানটা শোনেনি এমন দর্শক পাওয়া যাবে না। অত্যন্ত জনপ্রিয় ছিল গানটি। মলয় চাকী ও রিজিয়া পারভীনের কণ্ঠে ‘স্বপ্নের ঠিকানা’ ছবির গান। দিলদার–নাসরিন জুটির সেরা গান। আমরা অনেক ধরনের জুটি নিয়ে কথা বলি যেমন:- নায়ক-নায়িকার জুটি, নায়ক-খলনায়ক জুটি, বউ-শ্বাশুড়ি জুটি। কমেডি রোলের জুটি নিয়ে সেভাবে কথা হয় না। দিলদার-নাসরিন জুটি কালজয়ী হয়ে আছে আমাদের চলচ্চিত্রে।
নাসরিনের জবানিতে পাওয়া যায় দিলদারের সাথে তার ঝগড়া, খুনসুটি এসব লেগেই থাকত সেটে। অনেক সময় ছবির নায়ক-নায়িকারা তাদেরকে ঝগড়ায় লাগিয়ে দিত কৌশলে। তারপর হত মজা। তবে ক্যামেরার বাইরে যাই থাক ছবির দৃশ্যধারণের সময় দিলদার সিরিয়াস আর্টিস্ট। এই গুণটি ছিল বলেই তিনি লিজেন্ড।
দিলদার-নাসরিন জুটির অন স্ক্রিন কেমিস্ট্রি অসাধারণ ছিল। তাদের অনেক ছবি আছে। বেছে বেছে উদাহরণ দেয়া কঠিন ও সময়সাপেক্ষ কাজ। এ মুহূর্তে মনে পড়ছে ‘স্বপ্নের পৃথিবী’ ছবিতে কমেডি পার্টে দিলদার -নাসরিন জুটির দর্শক হাসানো সিকোয়েন্স। নাসরিনের বাবা সাইফুদ্দিন মেয়ের ব্যাপারে খুব কড়া। প্রেম করতে দেবে না। পড়াশোনার জন্য একজন গৃহশিক্ষক দরকার। দিলদার সুযোগটা কাজে লাগায় দাড়িগোঁফ নিয়ে যাতে চিনতে না পারে। একদিন নাসরিনের সাথে রোমান্সের আশায় যেই সুযোগ কাজে লাগাতে চায় অমনি সাইফুদ্দিন এসে হাজির। তড়িঘড়ি করে লুকানোর জন্য গোয়ালঘরে গিয়ে ঢোকে। গরু ততক্ষণে প্রাকৃতিক ক্রিয়া চালায়। দিলদারের সংলাপটি ছিল-‘বৃষ্টি আসনের আর টাইম পাইল না’…😃..হাসতে হাসতে পেট ব্যথা।
মনে পড়ছে ‘পাগলা বাবুল’ ছবিতে দিলদার-নাসরিন জুটির ‘বিন্দিয়া’ শিরোনামের মজার গানটি। এ ছবিতে তারা স্বামী-স্ত্রীর ভূমিকায় ছিল। দুজনে বিহারীদের ভাষায় কথা বলে। আলাদা ফ্লেভার ছিল।
দিলদার-নাসরিন জুটি দেশীয় চলচ্চিত্রে কমেডির জন্য উদাহরণ হয়ে থাকবে। দিলদারের মৃত্যুর পর নাসরিন জুটি গড়েছে আফজাল শরীফ, কাবিলা-দের সাথে কিন্তু সেগুলো দিলদার-নাসরিনের মতো মান বজায় রাখতে পারেনি।