Select Page

দেশের নাম উজ্জ্বল করে ফিরল টিম ‘রেহানা মরিয়ম নূর’

দেশের নাম উজ্জ্বল করে ফিরল টিম ‘রেহানা মরিয়ম নূর’

বাংলাদেশের অজস্র মানুষের ভালোবাসা সঙ্গে নিয়ে মর্যাদাপূর্ণ কান চলচ্চিত্র উৎসবে অংশগ্রহণ করে ‘রেহানা মরিয়ম নূর’ টিম। প্রায় এক মাসের সফর শেষে সোমবার দিবাগত শেষ রাতে দেশে ফিরেছে তারা।

আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ সাদ পরিচালিত ‘রেহানা মরিয়ম নূর’ কান চলচ্চিত্র উৎসবে বাংলাদেশের প্রথম অফিশিয়াল সিলেকশন। গত ৭ জুলাই ‘আ সার্তে রিগা’ বিভাগে ছবিটি প্রদর্শিত হওয়ার পর থেকেই প্রশংসায় ভাসছিল ছবিটি। তাই সবার নজর ছিল চূড়ান্ত দিনের ফলাফলের দিকে। তবে কোনো পুরস্কার না পেলে অর্জন কম নয়।

সিনে বিশ্লেষকদের মতে, পুরস্কার না পেলেও কানে অফিশিয়াল সিলেকশন পাওয়া ‘রেহানা মরিয়ম নূর’-এর সব চেয়ে অর্জন। যা বাংলাদেশের চলচ্চিত্রের জন্য একটি মাইলফলক। এ পথ ধরে হেঁটে আরও এগিয়ে যাবেন ভবিষ্যতের নির্মাতারা।

হলিউড রিপোর্টারের রিভিউ: দর্শককে একই সময়ে দুটি দিক দেখতে বাধ্য করে ‘রেহানা মরিয়ম নূর’

বিশ্বের নামি-দামি সিনে সমালোচক ও বোদ্ধাদের নজর কেড়েছে সিনেমাটি। রিভিউ প্রকাশ হয়েছে হলিউড রিপোর্টার, স্ক্রিন ডেইলি ও রজার এবার্টের সাইটসহ একাধিক আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে। একটি রিভিউতে এমনও বলা হয়েছে, কানের উল্লেখযোগ্য তিন ছবির একটি ‘রেহানা মরিয়ম নূর’।

ভ্যারাইটি, ডয়চে ভেলেসহ অনেক সংবাদমাধ্যম প্রকাশ করেছে খুটিনাটি অনেক তথ্য। একাধিক সাক্ষাৎকার ও ফটোশুটে অংশ নিয়েছেন ছবিটির কলাকুশলীরা। পেয়েছেন আন্তর্জাতিক অনেক চলচ্চিত্র ব্যক্তিত্বের সান্নিধ্য। বিপননের জন্য যুক্ত হয়েছে আন্তর্জাতিক সেলস এজেন্ট ও পরিবেশক।

গত ২৬ জুন ‘রেহানা মরিয়ম নূর’ টিম ফ্রান্সে পৌঁছে। এরপর প্যারিসে ১০ দিনের কোয়ারেন্টাইন শেষে ৬ জুলাই পা রাখে কানের ভেন্যুতে। পরদিন ছবিটির প্রিমিয়ার হয়।

দলে ছিলেন পরিচালক আবদুল্লাহ মোহাম্মদ সাদ, অভিনেত্রী আজমেরী হক বাঁধন, চিত্রগ্রাহক তুহিন তমিজুল, প্রোডাকশন ডিজাইনার আলী আফজাল উজ্জ্বল, শব্দ-প্রকৌশলী শৈব তালুকদার, কালারিস্ট চিন্ময় রয় এবং নির্বাহী প্রযোজক এহসানুল হক বাবু।

পুরো সফর নিয়ে বাঁধনের অভিব্যক্তিটা এমন- ‘আমরা যেদিন প্রথম শুনেছিলাম আমাদের ছবি কানে প্রিমিয়ারের জন্য অফিসিয়ালি মনোনীত হয়েছে, সেদিনই আমরা সর্বোচ্চ সম্মানিত বোধ করেছি। বাংলাদেশসহ বিশ্বব্যাপী আমরা যে সমর্থন পেয়েছি তা সত্যিই অবিশ্বাস্য। যেকোনও পুরস্কারই হয়তো ভালো লাগার, কিন্তু আমাদের যে জার্নি হলো তা পুরস্কারের চেয়েও বেশি।’

রজার ইবার্ট সাইটের রিভিউ: রেহানা মরিয়ম নূর: শিল্প-দক্ষতা ও সীমিত দৃষ্টিভঙ্গির অনুশীলন

পুরস্কার না পাওয়ায় কোনো অভিমান বা মনঃকষ্ট কাজ করছে কী? বাঁধন বলেন, ‘একদমই না। আমি কিন্তু পুরস্কার ঘোষণার আগেও বলেছি, উৎসবে এসে আমরা যা যা পেয়েছি, তাতে মুগ্ধ। বাংলাদেশের ছবি প্রথমবার এতটা পথ এল, সবার ভালোবাসা পেল, প্রশংসিত হলো, এই সম্মানটাই-বা কম কী! যেদিন আমাদের ছবি কানে নির্বাচিত হওয়ার খবর পেয়েছিলাম, সেদিনই পুরস্কার পেয়ে গেছি। যে কয়েকটা দিন ছিলাম, জীবনের অন্যতম সেরা সময় কাটিয়েছি। সবাই যে সম্মান দিয়েছেন, তার কোনো তুলনাই হয় না। অনেক অনেক অমূল্য স্মৃতি নিয়ে দেশে ফিরব। এগুলো পুরস্কারের চেয়ে কোনো অংশেই কম নয়।’

একটি বেসরকারি মেডিকেল কলেজের সহকারী অধ্যাপক রেহানা মরিয়ম নূরকে কেন্দ্র করে এর গল্প। কর্মস্থল ও পরিবারে তাল মেলাতে গিয়ে হিমশিম খেতে হয় তাকে। কারণ, শিক্ষক, চিকিৎসক, বোন, কন্যা ও মা হিসেবে জটিল জীবনযাপন করেন তিনি।

১ ঘণ্টা ৪৭ মিনিট ব্যাপ্তির ছবিটিতে নাম ভূমিকায় অভিনয় করেন বাঁধন। এছাড়া বিভিন্ন চরিত্রে আছেন সাবেরী আলম, আফিয়া জাহিন জায়মা, আফিয়া তাবাসসুম বর্ণ, কাজী সামি হাসান, ইয়াছির আল হক, জোপারি লুই, ফারজানা বীথি, জাহেদ চৌধুরী মিঠু, খুশিয়ারা খুশবু অনি, অভ্রদিত চৌধুরী প্রমুখ।


Leave a reply