Select Page

নাচে-গানে অঞ্জু ঘোষ… দশ গানের লিংক

নাচে-গানে অঞ্জু ঘোষ… দশ গানের লিংক


সওদাগর থেকে বেদের মেয়ে জোছনা। ১৯৮২ থেকে ১৯৮৯ সাল অঞ্জু ঘোষের ক্যারিয়ারের সুবর্ণ সময়। বেদের মেয়ে জোছনার ঐতিহাসিক সাফল্যে যেখানে ক্যারিয়ার আরো জ্বলে উঠার কথা,সেখানে তিনি আরো অনুজ্জ্বল হয়ে উঠেন। যদিও পরের বছরেই ‘শঙ্খমালা’র মত সুপারহিট ছবির নায়িকা হয়েছেন তবে ততদিনে পোশাকী ছবির জনপ্রিয়তা কমে যাওয়া, কলকাতায় থিতু হওয়ার কারণে নব্বই দশকে আর বাংলাদেশের ক্যারিয়ার আর সেভাবে এগোয়নি। তার ‘আয়না বিবির পালা’ বাদ দিলে ক্যারিয়ারের উল্লেখযোগ্য ছবি সওদাগর, প্রাণ স্বজনী, চন্দন দ্বীপের রাজকন্যা, ছলনা, রাই বিনোদিনী, দায়ী কে, যন্ত্রণা, নরম গরম থেকে বেদের মেয়ে জোছনা সব ই ৮২-৮৯ এর মধ্যে।

যেহেতু তিনি ছিলেন পোশাকি ছবির জনপ্রিয় নায়িকা, স্বাভাবিকভাবেই গান বিরাট ভূমিকা পালন করেছিল। গানে তার নজরকাড়া পারফর্ম ই ছিল ছবি হিটের মূল প্রভাবক। অনেক জনপ্রিয় গান রয়েছে তার ক্যারিয়ারে- সাবিনা, রুনা লায়লা তো বটেই এমনকি নিজের কন্ঠে যেই গান গেয়েছিলেন সেটাও সুপারহিট। জনপ্রিয় গানগুলোও আশির দশকেরই, তার উল্লেখযোগ্য দশটি গান:

বেদের মেয়ে জোছনা: সর্বোচ্চ ব্যবসাসফল ছবি বেদের মেয়ে জোছনার টাইটেল সং। এই গানের জনপ্রিয়তা সময়ের সাথে সাথে আরো বেড়েছে। পরিচালক তোজাম্মেল হক বকুলের কথায় আবু তাহেরের সুরে এই গানের কন্ঠশিল্পী রুনা লায়লা ও এন্ড্রু কিশোর, সিনেমার তার নায়ক ইলিয়াস কাঞ্চন।

এই বৃষ্টি ভেজা রাতে: বৃষ্টি নিয়ে বাংলা সিনেমার সবচেয়ে জনপ্রিয় গান। রুনা লায়লার সঙ্গে অঞ্জুর রসায়ন সব সময় ই ছিল চমৎকার। সুপারহিট ছবি ‘নরম গরম’ তে এই গানে অঞ্জুর উপস্থিতি দারুণ আলোচনায় এনে দেয়। বিখ্যাত সাংবাদিক আহমেদ জামান চৌধুরীর কথায় এই গানের সুরকার ছিলেন সুবল দাস। আর ছিল অঞ্জু ঘোষের ক্যারিয়ারের সেরা নায়ক ওয়াসিম।

মনের ই ছোট্ট ঘরে আগুন জ্বেলেছে: অঞ্জুর প্রথম ছবি ‘সওদাগর’ ছবির গান। প্রথম ছবিতেই তার উপস্থিতিতেই সবাই নড়েচড়ে বসলো। সমালোচকরা বললেন চলচ্চিত্রে নামলো অশ্লীলতা, তবে সাধারন দর্শকেরা অঞ্জুকে প্রথম দেখাতেই দারুণভাবে গ্রহণ করে ফেলে। মনিরুজ্জামান মনিরের কথায় সুবল দাসের সুরে এই গানে চমকপ্রদ ব্যাপার ছিল গায়িকা সাবিনা ইয়াসমিন, কারণ তিনি এই ধরনের গান একেবারেই গাইতেন না। অঞ্জুর অভিষেকে সাবিনা ইয়াসমিন ও নিজেকে ভাঙলেন।

কি যাদু করিলা: সঙ্গীতনির্ভর সুপারহিট ছবি ‘প্রাণ সজনী’ সিনেমার সবচেয়ে জনপ্রিয় গান,আজো সমান শ্রোতাপ্রিয়তা আছে। সাদাকালো ও রঙ্গীন দুই ভার্সনেই ছিলেন অঞ্জু। মনিরুজ্জামান মনিরের কথায় আলম খানের সুরে এই গানের কন্ঠশিল্পী সাবিনা ইয়াসমিন ও এন্ড্রু কিশোর, নায়ক ছিলেন ওয়াসিম।

ওরে হ বাঁশীওয়ালা: বিখ্যাত গায়িকাদের সাথে ঠোঁট মেলানোর পর নিজেই আবির্ভূত হন গায়িকা হিসেবে। একেবারেই নবীন গায়ক কুমার বিশ্বজিতের সঙ্গে এই দ্বৈত গান হয়েছিল সুপারহিট। অঞ্জু প্রমাণ করেছিলেন গানে,অভিনয়,নাচ তিনটাতেই সে সমান পারদর্শী। ‘নরম গরম’ ছবিতে আহমেদ জামান চৌধুরীর কথায় সুর দিয়েছিলেন সুবল দাস। আর নায়ক ছিলেন নৃত্য পরিচালক জাভেদ।

মনটা যদি খোলা যেত সিন্দুকের ই মত: ‘চন্দন দ্বীপের রাজকন্যা’ ছবির গান,আহমেদ ইমতিয়াক বুলবুলের কথা ও সুরে এই গানের গায়িকা সাবিনা ইয়াসমিন। সুপারহিট ছবির এই সুপারহিট গান সিনেমা সংশ্লিষ্ট সবার ই ক্যারিয়ারকে গতিশীল করেছিল।

আমি তোমারি প্রেম ভিখারি: সৈয়দ আব্দুল হাদীর গাওয়া এক যুগান্তকারী গান। আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুলের কথা ও সুরে এই গানটিও চন্দন দ্বীপের রাজকন্যা ছবির গান। গানে ঠোঁট মিলিয়েছেন ওয়াসিম,এই গানেও ছিল অঞ্জুর স্বপ্রতিভ উপস্থিতি।

আশায় আশায় দিন কেটে যায়: পোশাকী ছবির পোশাকী গান পেরিয়ে একেবারে গ্রাম বাংলার নারী রুপে বঙ্কিম সাহিত্যের চলচ্চিত্র রুপ ‘ছলনা’র এই গানে পেয়েছিলেন প্রশংসা। আহমেদ ইউসুফ সাবেরের কথায় ফোয়াদ নাসের বাবুর সুরে কন্ঠ দিয়েছিলেন গানের পাখি সাবিনা ইয়াসমিন।

আকাশকে প্রশ্ন করো: শুধু অঞ্জুর ক্যারিয়ারের ই নয়,বাংলা সিনেমার ই অন্যতম সেরা গান এটি। ইলিয়াস কাঞ্চনের সঙ্গে অভিনীত ‘শর্ত’ সিনেমায় এই গান ব্যবহৃত হয়েছিল। গাজী মাজহারুল আনোয়ারের কথায় আলাউদ্দিন আলীর সুরে রুনা লায়লার অসাধারণ কন্ঠ এই গানকে মহিমান্বিত করেছিলেন,সঙ্গে ছিল এন্ড্রু কিশোর।

চাঁদের সাথে আমি দেব না তোমার তুলনা: ‘আশীর্বাদ’ ছবির গান, তবে ছবির চেয়ে বেশি আলোচনায় যুগান্তকারী এই গানের জন্য। সব্যসাচী সৈয়দ শামসুক হকের কথায় আলম খানের সুরে এন্ড্রু কিশোর ও রুনা লায়লার কন্ঠে এই গানের জনপ্রিয়তা সময়ের প্রবাহে আরো বেড়ে চলছে। এই ছবিতে অঞ্জুর নায়ক ছিল জাফর ইকবাল।


মন্তব্য করুন