নির্দোষ হওয়ার প্রমাণ দেখালেন অনন্য মামুন
মালয়েশিয়ায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজনের আড়ালে আদম পাচারের অভিযোগে চিত্রপরিচালক অনন্য মামুনকে ২৪ ডিসেম্বর গ্রেফতার করে মালয়েশিয়ান পুলিশ। দুই সপ্তাহেরও বেশি পুলিশ হেফাজতে থাকার পর মামুন দেশে ফিরে গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় এফডিসির ভিআইপি প্রজেকশনে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেন।
এ আয়োজনে চিত্রপরিচালক অনন্য মামুনের সঙ্গে ছিলেন কণ্ঠশিল্পী আসিফ, চিত্রনায়ক নিরব ও ইমন।
মিথ্যাচার ও ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ শীর্ষক ওই সংবাদ সম্মেলনে অনন্য মামুন বলেন, ‘একটি চক্র আমার কাছে চাঁদা চেয়েছিল। ৫০ হাজার রিংগিত ও ৫০০ টিকিট দেয়ার জন্য বলে। আমি তাদের তা দেইনি বলে পুলিশ দিয়ে আমাকে গ্রেফতার করে শাস্তি দিতে চেয়েছিল। তারা হুমকি দিয়েছিল আমাকে আর সেখানে শো করতে দিবে না।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের সবার কাছে ছিল বৈধ ভিসা এবং রিটার্ন টিকিট। আমাকে সন্দেহজনকভাবে গ্রেফতার করলেও স্বাভাবিক জিজ্ঞাসাবাদ করে তারা ছেড়ে দেয়। কারণ আমি নির্দোষ ছিলাম। আমাদের টিমের কেউ অপরাধমূলক কোনো কাজে জড়িত ছিল না। পুলিশ সে ধরনের কোনো তথ্যও পায়নি।’
কণ্ঠশিল্পী আসিফ আকবর বলেন, ‘একটা লোক যদি বিদেশ যায়, তার যদি বৈধ ভিসা থাকে এবং ইমিগ্রেশন ক্রস করে তবে সে আদম হয় কীভাবে? প্রমাণ না হওয়া পর্যন্ত কাউকে অপরাধী বলা মহাপাপ। অনন্য মামুন যখন পুলিশ ক্লিয়ারেন্স পেল, তখন আমি ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দেই। এখন অনন্য মামুন নির্দোষ প্রমাণ হয়েছে। পুলিশ ক্লিয়ারেন্সও পেয়ে গেছেন। এরপরও আমরা আমাদের ভুলগুলো শুধরে নিলে আর সমস্যা হবে না।’
মালয়েশীয় পুলিশের একটি চিঠি দেখান তিনি। যেখানে বলা হচ্ছে, মামুন ও অন্যদের সন্দেহভাজন হিসেবে ধরা হয়। কিন্তু পরবর্তী তদন্তে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় তাদের দেশে ফেরার অনুমতি দেওয়া হয় ও তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হবে না।
চিঠিতে বলা হয়, অনন্য মামুনসহ অন্যদের ‘মানব পাচার ও অভিবাসী চোরাচালান আইন-২০০৭’র ২৬ নং ধারা অনুযায়ী গ্রেফতার করা হয়েছিল। মালয়েশীয় পুলিশের স্পেশাল ব্যাঞ্চ বুকিট আমান পুলিশ তাদের গ্রেফতার করেছিল। চিঠির নিচে কুয়ালামপুরের ডাঙ্গ উয়াঙ্গি পুলিশ স্টেশনের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শাহরুদ্দিন বিন আবদুল্লাহ’র স্বাক্ষর রয়েছে।
প্রকাশিত সংবাদ অনুযায়ী মামুন ৫৭ জনের টিম নিয়ে গিয়েছিলেন। সংবাদ সম্মেলনে দাবি করেন— ৩৮ জন শিল্পীসহ ৪৯ জনের টিম ছিল। সবাই দেশের ফিরে এসেছে এর প্রমাণ দিতে পারবেন।
মামুন বলেন, ‘আমরা যদি অন্যায় করতাম এ ধরনের অভিযোগে আটক ও অভিযোগ প্রমাণিত হলে সবার পাসপোর্ট ব্ল্যাকলিস্টেট করে দেয় মালয়েশিয়া। তাহলে খোঁজ নিয়ে দেখেন আমাদেরটা করেছে কিনা?’
তিনি আরো বলেন, ‘যারা ষড়যন্ত্র করেছিল তাদের বিরুদ্ধে আমাদের মালয়েশিয়ান পার্টনার ডি কোম্পানি মামলা করেছে।’
আদম পাচারের অভিযোগে গ্রেফতার হওয়ার পর পরিচালক সমিতি অনন্য মামুনের সদস্যপদ বাতিল করে দেন।
এ প্রসঙ্গে অনন্য মামুন বলেন, ‘পরিচালক সমিতি থেকে আমার সদস্যপদ বাতিল করেছে এটা আমি গণমাধ্যমের বরাত দিয়ে জেনেছি। হাতে কোনো চিঠি পাইনি। যে সব কাগজপত্র দ্বারা প্রমাণ হয়েছে আমি নির্দোষ সবগুলোই জমা দিয়েছি। আশা করছি পরিচালক সমিতি সুষ্ঠুভাবে যাচাই করে আমার সদস্যপদ আবার ফিরিয়ে দেবে।’