Select Page

পছন্দের জুটি আমিন খান-শাবনূর

পছন্দের জুটি আমিন খান-শাবনূর

পছন্দের জুটি আমিন খানশাবনূর। আমিন খান-শাবনূর জুটির ছবির সংখ্যা বেশি না হলেও তাদের ছবিগুলো ছিল মানসম্মত। তাদের রসায়নও চমৎকার। ‘হৃদয় আমার, দুনিয়ার বাদশা, স্বপ্নের নায়ক, ফুল নেবো না অশ্রু নেবো, হৃদয়ের বন্ধন’ ছবিগুলো মানসম্মত বাণিজ্যিক ছবির কথাই বলে।

এ জুটির ছবির গানগুলোতে মিউজিক্যাল একটা গুণ ছিল। গানের জনপ্রিয়তার পাশাপাশি গানগুলোতে কথা, সুর আর শিল্পীদের গায়কীও ভালো প্রভাব রেখেছে। দর্শকের চাহিদাও ছিল এ জুটি নিয়ে যদিও পরে আর ততটা তাদের নিয়ে ভাবেনি নির্মাতারা।

‘হৃদয় আমার’ চমৎকার মিউজিক্যাল ছবি। গানগুলো আজও দর্শকপ্রিয়। শাবনূরের বিপরীতে ছবিগুলোর মধ্যে এ ছবির গানগুলো হিট অনেক। বড়লোকের আদরের মেয়েকে ভালোবেসে গ্রামের ছেলে আমিন খান ছোটবেলার খেলার সাথীকে ভোলে না। নিজের চিরপরিচিত পাহাড়ি জায়গায় খোদাই করা ‘স্বর্ণালি’ নাম দেখে অনেকবছর পর খুঁজে পায় সেই স্বর্ণালি শাবনূরকে। ‘স্বর্ণালি’ নামের প্রতিধ্বনি অসাধারণ একটি অনুভূতি এনে দেয় দর্শকের মনে। ‘পৃথিবীকে ভালোবেসে সুরে সুরে কাছে এসে/ কত যে আপন হয়েছ’ এ গানটির দুই ভার্সনে তাদের রসায়ন জমে ওঠে। এছাড়া ‘তোমাকে আমি রাখব ধরে/ কখনো তোমায় ছাড়া বাঁচব না’ এ গানটিও অসাধারণ। গানের অসাধারণ লোকেশন, কোরিওগ্রাফির সাথে আমিন খান-শাবনূর জুটির অভিনয় ন্যাচারাল। লুকেও দুজনই ইনোসেন্ট ছিল। রোমান্টিকের জন্য পারফেক্ট। এছাড়া এ ছবির আরেকটি সুপারহিট গান-‘তুমি আমার হৃদয়ে যদি থাকো/একদিন জানি কাছে আসবে’। এ গানটিতে স্টেজ পারফর্মার আমিন খান অনবদ্য লুকে হাজির হয়। শাবনূর থাকে স্যাড মুডে কারণ সে আমিনকে হারিয়ে ফেলেছে। আমিন খান একসময় শিল্পী হয়ে ওঠে তখন শাবনূর তাকে টিভিতে দেখে এবং চোখের জল ফেলে।

‘দুনিয়ার বাদশা’ ছবিটিতে হুমায়ুন ফরীদি-র প্রভাব খুব বেশি থাকায় নায়ক-নায়িকার স্পেস নিয়ে কথা বলার সুযোগ কম। তাছাড়া এ ছবিতে ‘তুমি এই হৃদয়ের যন্ত্র আমার’ গানটি সবচেয়ে জনপ্রিয় কিন্তু সেটা অন্য জুটির। তবে অবশ্যই এ জুটির অন্যতম প্রধান ছবি।

‘স্বপ্নের নায়ক’ ছবিতে অমর নায়ক সালমান শাহ-র অকালমৃত্যুর পরে অসমাপ্ত কাজটি আমিন খান করে দেয়। শাবনূরের বিদেশি প্রেমিকের চরিত্রে এসে আমিন খান নিজের অভিনয়গুণে ছবিতে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে। সালমানের বিপরীতে নিজের অস্তিত্ব প্রমাণ করতে তাকে শাবনূরের আত্মীয়দের কাছে কাঠখড় পোহাতে হয়। শাবনূরও ঠিকমতো মেনে নেয় না। নিজের চেষ্টায় সফল হয়। ডলি জহুরের সাথে দেখা হবার পর আমিন জানতে পারে তার মা, ভাইবোনের খোঁজ। শাবনূরের বিপরীতে ‘একটা মন চাই শুধু মানুষের মন’ গানটি অসাধারণ।

‘ফুল নেবো না অশ্রু নেবো’ ও ‘হৃদয়ের বন্ধন’  ছবি দুটির মিল হচ্ছে আমিন খান চ্যালেঞ্জিং চরিত্রে ছিল দুটো ছবিতেই। প্রথমটিতে শাকিব খানকে প্রতিদ্বন্দ্বী মনে করেছে দ্বিতীয়টিতে রিয়াজকে। দুটি ছবিতেই অসাধারণ অভিনয় করেছে। প্রথমটিতে ‘বিধি তুমি বলে দাও’ গানে প্রশ্নোত্তরের মতো করে আমিন খান ও শাবনূর লিরিক বলে।

শাবনূরকে দিয়ে শুরু – ‘বিধি তুমি বলে দাও আমি কার/ দুটি মানুষ একটি মনের দাবিদার’

আমিন খানের অংশে থাকে প্রেমিকের বিদ্রোহী সুর- ‘আমি পৃথিবীর এই বুকে/ আগুন জ্বালিয়ে দেবো/ তুমি যদি আমারই না হও।’

গানটি অসম্ভব জনপ্রিয় ছিল ছবি মুক্তির সময়।

‘হৃদয়ের বন্ধন’-এ ‘তুমি আমার ভালোবাসা/তুমি হৃদয়ের বন্ধন’ এ গানটতে আমিন খান-শাবনূর রসায়ন দারুণ। ছবির ফিনিশিং-এ প্রাক্তন প্রেমিকা শাবনূরের আগমনে আমিন খানের আনন্দ এবং শাবনূরের বাস্তবতা জানার পর নিজের কষ্ট প্রকাশের অভিনয় সুপার ছিল।

সব মিলিয়ে আমিন খান-শাবনূর জুটি একটি মানসম্মত জুটি হয়ে উঠেছিল। অবশ্যই এ জুটির আরও ছবি হতে পারত।


লেখক সম্পর্কে বিস্তারিত

বাংলাদেশের চলচ্চিত্র গত শতকে যেভাবে সমৃদ্ধ ছিল সেই সমৃদ্ধির দিকে আবারও যেতে প্রতিদিনই স্বপ্ন দেখি। সেকালের সিনেমা থেকে গ্রহণ বর্জন করে আগামী দিনের চলচ্চিত্রের প্ল্যাটফর্ম গড়ে উঠুক। আমি প্রথমত একজন চলচ্চিত্র দর্শক তারপর সমালোচক হিশেবে প্রতিষ্ঠিত হবার স্বপ্ন দেখি। দেশের সিনেমার সোনালি দিনের উৎকর্ষ জানাতে গবেষণামূলক কাজ করে আগামী প্রজন্মকে দেশের সিনেমাপ্রেমী করার সাধনা করে যেতে চাই।

মন্তব্য করুন