
পরিবার ছাড়া ‘উৎসব’ দেখলে আসলেই ভুল করবেন
টিজার, ট্রেলার দেখে যতটা ভালো লেগেছিল; মূল সিনেমাটা তার চেয়েও কয়েকগুণ বেশি ভালো লেগেছে।

একজন মানুষের ছোট ছোট ইচ্ছাকৃত বা অনিচ্ছাকৃত ভুল তার আশেপাশের মানুষদের উপর কী প্রভাব ফেলে, কীভাবে একজন মানুষ তার ভুলের জন্য তার আশেপাশের মানুষকে হারিয়ে ফেলে, কীভাবে অতীত বর্তমান আর ভবিষ্যত মিলে একজন মানুষের জীবন আবর্তিত হয়- তা নিয়েই এগিয়েছে উৎসব সিনেমার গল্প।
গল্প, বাঘা বাঘা একেক অভিনেতার অভিনয়, অসাধারণ সব সংলাপ আর দারুণ পরিচালনা- উৎসবের সবচেয়ে বড় সম্পদ। উৎসব এমন একটা সিনেমা, যেখানে দিনশেষে আপনি কোন ক্যারেক্টরকে মোটাদাগে ‘খারাপ’ বলতে পারবেন না। সবাই যার যার জায়গায়, যার যার চিন্তাধারায় তার মত করে ঠিকঠাক; শুধু সমস্যাটা হয় ভুল বোঝাবুঝি নিয়ে।
পরিচালক তানিম নূরের পর সিনেমার মূল ক্রেডিট যাবে সামিউল ভূঁইয়া আর স্বাধীন আহমেদের কাছে, চমৎকার স্ক্রিপ্ট আর অসাধারণ সব সংলাপের জন্য। কিছু উদাহরণ দেই-
তোমার চাকরি তো লাইফ সাপোর্টে আছে!
শুধু ডানা থাকলেই ওড়া যায় না, ওড়ার জন্য মুক্ত বাতাসও লাগে।
আমাদের জীবনের অবস্থা আমাদের দেশের পলিটিক্যাল সিচুয়েশনের মত- কোন গ্যারান্টি নাই।

উৎসব আমাদের নাইন্টিজ জেনারেশনের প্রতি একটা ট্রিবিউট। সেই সময়ে ক্যাসেট ভাড়া করে সিনেমা দেখা, প্রথম সাইকেল চালানো, প্রথম মোটরসাইকেল চালানো শেখা, বাসায় প্রথম রঙিন টিভি আসা, প্রথম প্রেমে পড়া, নারীশিক্ষার গুরুত্ব- সবকিছুই এসেছে উৎসব সিনেমায়। ভীষণ নষ্টালজিক করে দেবে এই সিনেমা যদি আপনি নাইন্টিজ বা তার আগের জেনারেশনের মানুষ হন। এই সিনেমা দেখে দেখে হাসতে হাসতে চোখের কোনায় পানি আসবে, আবার কান্না করতে করতেও হেসে ফেলবেন। ছোটবেলায় পরিবারের সবাই বসে যেভাবে হুমায়ূন আহমেদের নাটক/সিনেমার জন্য অপেক্ষা করতাম বা দেখতাম, উৎসব অনেকটা সেরকম অনুভুতির সিনেমা। একমাত্র কালার গ্রেডিং ছাড়া উৎসবের আর কোন দিক নিয়ে আমার কোন অভিযোগ নেই।
উৎসব দেখেন। তবে পরিবার ছাড়া দেখলে বিশাল ভুল করবেন। এই সিনেমা পরিবারের জন্যই, পরিবারকে সবাইকে নিয়ে দেখার মতই।