Select Page

‘পাঠান’ আসতে না আসতেই কোণঠাসা দেশি ছবি

‘পাঠান’ আসতে না আসতেই কোণঠাসা দেশি ছবি

ঈদুল ফিতরের দুই সপ্তাহ পর যাতে ‘পাঠান’ মুক্তি না পায় তা নিয়ে দেশীয় নির্মাতা সংবাদ সম্মেলন করেন। ওই সময় আমদানিকারক অনন্য মামুন আপোষে রাজি না হলেও সেন্সর জটিলতায় এক সপ্তাহ পেছায় হিন্দি সিনেমাটি।

এবার ‘পাঠান’ মুক্তির পর সংকটে পড়েছে আরো দুই ছবি। পরবর্তী সপ্তাহগুলো হিন্দি সিনেমার দখলে থাকবে এমন ‘আশা করে’ বাংলা সিনেমা নিতে চাইছেন না প্রদর্শকরা। এ বিষয়ে বিস্তারিত প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে সারাবাংলা ডটনেট।

অরণ্য আনোয়ার পরিচালিত ও পরীমনি অভিনীত ‘মা’ মুক্তি পাওয়ার কথা ১৯ মে। আর মস্কো জয় করা যুবরাজ শামীমের ‘আদিম’ মুক্তি পাওয়ার কথা ২৬ মে। অনেক আগে থেকে মুক্তির তারিখ নির্ধারণ করা হলেও এখন বিদেশি ছবির কারণে হল পাচ্ছে না।

নাটকের জনপ্রিয় নির্মাতা অরণ্য আনোয়ার বলেন, ‘একজন মায়ের গল্প নিয়ে আমাদের ছবিটি নির্মিত হয়েছে। তাই মা দিবস উপলক্ষে ছবিটি মুক্তির তারিখ নির্ধারণ করি ১৯ মে। তখন আমরা স্টার সিনেপ্লেক্সের সঙ্গে যোগাযোগ করি। তাতে তারা আমাদেরকে বলেছিলো এক সপ্তাহ আগে তাদেরকে ছবি দিলেই হবে। কিন্তু প্রায় তিন মাস আগে থেকে যোগাযোগ রাখার পরও এখন শেষ মুহূর্তে এসে তারা আমাদের শো দিচ্ছি করেও চূড়ান্ত কিছু বলছে না। তারা পাঠান নিয়ে ব্যস্ত বলে জানাচ্ছে।’

তিনি জানান, ১৯ মে নিয়ে সিনেপ্লেক্স বলছে ওইদিন হলিউডের ছবি ‘এ ফার্স্ট এক্স’ চালাবেন তারা। আবার ২৬ মের ক্ষেত্রে তারা বলছেন ওইদিন বলিউডের ‘কিসি কা ভাই কিসি কা জান’ মুক্তি পাবে। তাই তারা ‘মা’ ছবির শো টাইম ঠিক করতে পারছেন না।

অরণ্য আনোয়ার বলছেন, এতদিন আগে থেকে সেন্সর নিয়ে ও মুক্তির তারিখ নিয়ে তাহলে কী লাভ হলো? তারা মুখে না বললেও হয়তো বোঝাতে চাইছে আমার ছবির দর্শক হবে না। অথচ আমার কাছে প্রতিনিয়ত অগ্রিম টিকিট ব্যবস্থা করে দেওয়ার জন্য ফোন আসছে। চাহিদা থাকা শর্তেও তারা আমাদের সঙ্গে বিমাতাসুলভ আচরণ করছে। যা দুঃখজনক। তবে যেভাবেই হোক ১৯ মে ছবিটি মুক্তি দিবো।

এদিকে ‘আদিম’ ছবির পরিচালক যুবরাজ শামীম বলেন, এখন পর্যন্ত আমরা মাত্র একটি সিনেমা হল নিশ্চিত করতে পেরেছি— নারায়ণগঞ্জের ‘সিনেস্কোপ’। দেশের নামকরা সিনেমা হলগুলো আমাদের ছবিটি নিয়ে খুব একটা আগ্রহ দেখাচ্ছে না। কারণ হিসেবে তারা জানাচ্ছে, যেহেতু এ শুক্রবার (১২ মে) ‘পাঠান’ মুক্তি পাচ্ছে, সেহেতু এ ছবিটির ব্যবসা কোন দিকে যায় তার উপর নির্ভর করে তারা অন্য ছবিগুলো চালাবেন কিনা তার সিদ্ধান্ত নিবেন। তাই আমাকে শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত অপেক্ষা করতে বলা হয়েছে। অর্থাৎ এখনও নিশ্চিত না সিনেস্কোপের বাইরে কোনো হলে আমার ছবিটি চলবে।

তবে সিনেমা হল না পাওয়া নিয়ে খুব একটা আফসোস করছেন না যুবরাজ শামীম। তিনি বলেন, ‘মনে রাখতে হবে সিনেমা হল মালিকরা ব্যবসায়ী। তারা তাদের ব্যবসা দেখছে— এটাতে আমি দোষের কিছু দেখছি না। এটা ঠিক কিছু দর্শক প্রথমবারের মতো হিন্দি ছবি বড় পর্দায় দেখবেন এ উত্তেজনায় রয়েছেন। তাই ছবিগুলোর অগ্রিম টিকিট বেশ ভালো বিক্রি হচ্ছে। কিন্তু মনে রাখবেন, দর্শক কিন্তু দিনশেষে দেশি ছবিই দেখবেন। তবে এর জন্য বাণিজ্যিক নির্মাতাদের চ্যালেঞ্জটা বেড়ে গেল।’

পুরো বিষয়টি নিয়ে স্টার সিনেপ্লেক্সের ম্যানেজার রেবেকা সুলতানাকে জিজ্ঞেস করা হলে মন্তব্য জানাতে অপারগতা জানান। আর প্রতিষ্ঠানটির জ্যেষ্ঠ বিপণন কর্মকর্তা মেসবাহ উদ্দিন আহমেদ সারাবাংলাকে বলেন, ‘ছবি চালানো বা শোয়ের শিডিউল ঠিক করার বিষয়টা আমি দেখি না। তাই শো পাওয়া না পাওয়া এমন অভিযোগের ব্যাপারে আমি বিস্তারিত জানাতে পারছি না।’

হল মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আওলাদ হোসেন উজ্জ্বল দাবি করলেন, নির্মাতাদের হল না পাওয়ার অভিযোগ সত্য নয়। তিনি বলেন, “সার্ভারের অভাবে মাত্র ৪১টা সিনেমা হলে ‘পাঠান’ চলবে। এ মুহূর্তে ২০০ এর মত হল চালু আছে। বাকি হলগুলো তো দেশি ছবি চলছে। আর সব সময় তো ‘পাঠান’ বা অন্য হিন্দি ছবি চলবে না।”


Leave a reply