Select Page

প্রচারবিমুখ ‘পাপ পুণ্য’ বিদেশে আয়ে রেকর্ড করেছে

প্রচারবিমুখ ‘পাপ পুণ্য’ বিদেশে আয়ে রেকর্ড করেছে

গত নভেম্বর থেকে এখন পর্যন্ত যতগুলো বাংলাদেশি সিনেমা উত্তর আমেরিকায় মুক্তি পেয়েছে তার মধ্যে বেশ ভালো ব্যবধানে এগিয়ে আছে ‘পাপ পুণ্য’। এমন সুখবর জানানোর পাশাপাশি পরিবেশক সংস্থা স্বপ্ন স্কোয়ারক্রো সিনেমাটিকে ‘প্রচারবিমুখ’ বাংলাদেশি সিনেমা বলে উল্লেখ করেছে। অথচ গত কয়েক মাসে উত্তর আমেরিকায় বেশ ভালো হাইপ উঠা বাংলাদেশি সিনেমা মুক্তি পেয়ে এতটা সফল হয়নি।

সিনেমার বাণিজ্য সংক্রান্ত প্রতিষ্ঠান কমস্কোরের বরাত দিয়ে স্বপ্নস্কোয়ারক্রো’র পক্ষ থেকে বলা হয়, ২০ মে থেকে মুক্তির প্রথম সপ্তাহে ২৫ হাজার ৩৮ ডলার বা বাংলাদেশি মুদ্রায় ২২ লাখ টাকার বেশি (গ্রস) আয় করেছে ‘পাপ পুণ্য’। যার মধ্যে অর্ধেতের বেশি বা ১৩ হাজার ৫৫৬ ডলার আয় হয়েছে প্রথম তিনদিনে।

আরও বলা হচ্ছে, দ্বিতীয় সপ্তাহে সিনেমাটি কি বা মূল থিয়েটারে প্রদর্শিত হলে আয় ৪০-৪৫ হাজার ডলার ছাড়িয়ে যেতো।

উত্তর আমেরিকার বক্স অফিসে চঞ্চল চৌধুরীর অসাধারণ ট্র্যাক রেকর্ডের কারণে ‘পাপ পুণ্য’ বাংলাদেশের ইতিহাসে প্রথম সিনেমা যা প্রায় ১০০টির মতো নর্থ আমেরিকান মাল্টিপ্লেক্সে একযোগে মুক্তি পেয়েছে। কিন্তু সবগুলো মাল্টিপ্লেক্সের আশপাশে সমান সংখ্যক বাংলাদেশি সিনেমার দর্শক থাকে না। এখানে মূলত ১৫ থেকে ২০টি থিয়েটারের আশপাশে ৭০ ভাগ বাংলাদেশি দর্শক বসবাস করেন। এ থিয়েটারগুলো থেকেই মূল ব্যবসাটা হয়। বাকি থিয়েটারগুলোতে যা-ই দর্শক হয় তা যোগ হয়ে টোটাল নাম্বারটা তখন অনেক বড় দেখায়। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে, ‘পাপ পুণ্য’ কোন এ সব মূল থিয়েটারেই এক সপ্তাহের বেশি চলেনি। মাত্র ৩টি থিয়েটারে সিনেমাটি দ্বিতীয় সপ্তাহ চলেছে যেগুলো মূল থিয়েটার না।

আরও পড়ুন: চঞ্চলের সিনেমার ব্যর্থতার জন্য প্রচারের অভাবকে দুষছে ভক্তরা

‘দেবী’র সঙ্গে তুলনা করলে বলা যায়, মূল মার্কেটেই ২ সপ্তাহ করে চলেছিল, সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ২টি থিয়েটারে চলেছিল ৩-৪ সপ্তাহ করে। ওই সিনেমাটি উত্তর আমেরিকায় সোয়া লাখ ডলার অর্থাৎ কোটি টাকার বেশি আয় করে রেকর্ড করে।

‘পাপ পুণ্য’ বাংলাদেশে যেমন ন্যূনতম প্রচারণা দিয়ে মুক্তি পেয়েছে, ঠিক একই সমস্যা বিদেশের ক্ষেত্রে ঘটেছে বলে জানায় স্বপ্নস্কোয়ারক্রো। তাদের মতে, “বাংলাদেশের কোন একটি সিনেমায় চঞ্চল চৌধুরী থাকা মানে ভারতের একটি সিনেমায় আমির খান থাকার মতো ব্যাপার। দর্শকেরা একটা ভালো সিনেমার নিশ্চয়তা পান। যে কারণে বক্স অফিসেও হয় হুলস্থুল সব রেকর্ড। সেই চঞ্চল চৌধুরী যদি প্রায় ৪ বছর পর বড়পর্দায় ফিরেন, তা ও আবার গিয়াস উদ্দিন সেলিমের মতো নির্মাতার সিনেমায়, সঙ্গে থাকে এ সময়ের ক্রেজ সিয়াম আহমেদ, দর্শকের তো পাগল হয়ে যাবার কথা। কিন্তু বাংলাদেশের বেশিরভাগ দর্শক কিছুই হন না, কারণ তারা জানেন না। এখানেই আমির খান তার টিমের কারণে যোজন ব্যবধানে এগিয়ে যান। তার ছবি ভালো ছবি দেখে তার সিনেমার টিম ‘মানুষ তো দেখবেই’ ভেবে কোন কিছু না করে নিশ্চিন্তে বসে থাকে না।”

এ প্রসঙ্গে আরও বলা হয়, পৃথিবীর সিনেমা ব্যবসার একটা বড় অংশজুড়ে এখন ক্রিয়েটিভ মার্কেটিংকে এত গুরুত্ব দেয়া হয় যাতে সিনেমাগুলো একটা ভালো রিসেপশন পেতে পারে। একইভাবে আমেরিকার প্রতিযোগিতামূলক বাজারে ‘ওয়ার্ড অফ মাউথ’ ফর্মুলাও কাজ করেনি।

‘পাপ পুণ্য’ বিদেশে শতাধিক হলে মুক্তি পেলেও দেশে এই সংখ্যা ছিল বিশের ঘরে। দ্বিতীয় সপ্তাহে আরও নেমে আসে। এ ছাড়া প্রযোজনা সংস্থার প্রচারে অনিহার কারণে চঞ্চল চৌধুরীর ছবিটি দেশে ব্যর্থ হয়েছে বলে অনেক ভক্তই ক্ষোভ জানান।


মন্তব্য করুন