Select Page

প্রজন্ম বনাম মৃধা

প্রজন্ম বনাম মৃধা

বাবা-ছেলের গল্পে ছবি কম হয়নি। সব ছবির থেকে ‘মৃধা বনাম মৃধা’ আলাদা কি! একটা নির্দিষ্ট দিক থেকে আলাদা সেটার জন্য ছবিটি দেখতে হবে।

বাবা-ছেলের গল্প সাধারণত মা-ছেলের গল্প থেকে ভিন্ন হয়ে থাকে। সিগমুন্ড ফ্রয়েডের মনোসমীক্ষণ অনুযায়ী যদি বলি তাহলে বাবা-ছেলের মধ্যে প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ সম্পর্ক থাকে যদিও সবক্ষেত্রে নাও হতে পারে। বাবা শাসন করে, আদরও করে বটবৃক্ষ হয়ে থাকে সন্তানের প্রতি কোথাও একটা অধিকারবোধও থাকে। অধিকারবোধের এই জায়গাতে ‘মৃধা বনাম মৃধা’ ছবিটি নির্মিত হয়েছে। এর পাশাপাশি প্রজন্ম অনুযায়ী চিন্তা ও অনুভূতির তফাত স্পষ্টভাবে দেখানো হয়েছে।

গল্পে তারিক আনাম খানের ছেলে সিয়াম আহমেদ। তাদের মধ্যে মতের অমিল আছে আবার ভালোবাসাও আছে। তারিক আনাম কিছু জেদী কাজ করেন যেগুলো সিয়ামের পছন্দ না। সিয়াম বাবার জন্য কিনলেও দিতে সাহস পায় না দূরত্বের কারণে। দূরত্ব থাকলেও ভালোবাসাটা আছে। সিয়ামের জীবনে একটা ভালো সুযোগ আসে তারপর বাবা-ছেলের মধ্যে নতুন একটা ক্রাইসিস দেখা দেয়। বাবা-ছেলের গল্পটা অন্যদিকে টার্ন করে।

ড্রামাটিক গল্পে যে ধরনের উপাদান থাকার দরকার এ ছবিতে আছে। বাবা-ছেলের মধ্যে দূরত্বটা এমন যে একটা কিছু কিনলেও সিয়াম বাবাকে দিতে সাহস পায় না। দূরত্বের এই ক্ষুদ্র বিষয়গুলো বড় দিকে টার্ন করে এবং যা চিন্তা করা যায়নি তাও ঘটছিল। একদিকে সিয়ামের সিদ্ধান্ত অন্যদিকে তারিক আনামের এভাবে ছবিতে ড্রামার জায়গাটা তৈরি হয়েছে। ছবিতে সূক্ষ্ম কিছু মানবিক বোধ দেখানো হয়েছে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে সিগমুন্ড ফ্রয়েডের ইদ, ইগো, সুপার ইগো-র ব্যবহার তারিক আনাম ও সিয়ামের চরিত্রায়ণের মধ্যে ছিল। ছবির পরিচালক এটি সচেতনভাবে ব্যবহার করেছেন কিনা সেটা স্পষ্ট বলা যায় না তবে এসেছে মনে হবে।

তারিক আনাম, সিয়াম ফোকাসে ছিল অভিনয়ে এবং তারা চমৎকার তার সাথে নোভার অভিনয়ও উল্লেখযোগ্য। সানজিদা প্রীতির চরিত্রটি তার সক্ষমতা অনুযায়ী কম ছিল। সানজিদা অনেক ভালো অভিনেত্রী তার জন্য আরো স্ট্রং কিছু দরকার ছিল। ছবির ব্যাাকগ্রাউন্ড মিউজিক উল্লেখ করার মতো ছিল না। প্রথমার্ধ্বের তুলনায় দ্বিতীয়ার্ধ্ব স্লো ছিল।

‘ওরে আমার বাপ

এবার দাও না করে মাফ,

তোমার তালে চলা বড়ই কঠিন

বড্ড কঠিন কাজ’

এ গানটি বেশ মজার ছিল।

‘মৃধা বনাম মৃধা’ ভালো গল্পের ভালো ছবি হয়ে থাকল বছর শেষের সময়টাতে।

রেটিং: ৭/১০


মন্তব্য করুন