Select Page

ভারতীয় ছবি চলবে!

ভারতীয় ছবি চলবে!

imagesঅবশেষে চারটি হিন্দি চলচ্চিত্র প্রদর্শনে সরকারি অনুমোদন মিলেছে। এতে ক্ষুব্ধ হয়েছে চলচ্চিত্র পরিবার। ৩ নভেম্বর আইন মন্ত্রণালয় থেকে তথ্য মন্ত্রণালয়ে প্রেরিত এক অনুমোদন পত্রে বলা হয়, ‘যেহেতু হাইকোর্টে আদেশটি বহাল আছে এবং ভ্যাকেট হয়নি। সেহেতু আদেশটি পালনে বাধ্যবাধকতা রয়েছে। তাই আমদানিকৃত ৪টি চলচ্চিত্র প্রদর্শনে আইনগত কোনো বাধা নেই। তবে মামলা শেষ না হওয়া পর্যন্ত ছবিগুলো আমদানি কারক নিজের জিম্মায় রাখতে পারবে।’ একথা জানান তথ্য মন্ত্রণালয়ের প্রশাসনিক কর্মকর্তা ওয়ালুল হক।

তিনি আরো বলেন, আমাদের কাছে আইন মন্ত্রণালয় কর্তৃক প্রেরিত এই অনুমোদন পত্রের ফলে আমদানি প্রতিষ্ঠানের পক্ষে বিমান বন্দর থেকে ছবিগুলো ছাড় করার ক্ষেত্রে আর কোনো বাধা রইলনা।

ছবিগুলো হলো- তারে জামিন পার, ডন টু, থ্রি ইডিয়টস এবং ওয়ান্টেড। ২০১০ সালে ইন উইন এন্টারপ্রাইজ নামক একটি প্রতিষ্ঠান ভারতীয় চলচ্চিত্র আমদানির উদ্যোগ নেয়। সরকারের অনুমোদন নিয়ে প্রতিষ্ঠানটি ওই বছরের ২৬ এপ্রিল তিনটি কলকাতার বাংলা চলচ্চিত্র আমদানির জন্য এলসি খোলে। এতে চলচ্চিত্রকাররা প্রতিবাদ জানালে ২০১০ সালের ১৪ জুন সরকার ভারতীয় চলচ্চিত্র আমদানির ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে। কিন্তু প্রতিষ্ঠানটি যে তিনটি বাংলা চলচ্চিত্র আমদানির জন্য ২৬ এপ্রিল ২০১০ সালে এলসি খুলেছিল তা ১৪ জুন নিষেধাজ্ঞা জারির আগের বিধায় তা বৈধ হয়। তা সত্ত্বেও চলচ্চিত্র সেন্সর বোর্ড আমদানিকৃত তিনটি বাংলা চলচ্চিত্র ‘জোর’, ‘বদলা’ ও ‘সংগ্রাম’ সেন্সর করতে আপত্তি জানায়। এতে আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানটি প্রতিকার চেয়ে হাইকোর্টে একটি রিট পিটিশন দায়ের করে।

পরে কোর্ট তিনটি চলচ্চিত্র সেন্সরের জন্য সেন্সর বোর্ডকে আদেশ দেয়। তবে রিট পিটিশনে আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানটি তিনটির পরিবর্তে ১২টি চলচ্চিত্রের উল্লেখ করে। এগুলো হচ্ছে- জোর, বদলা, সংগ্রাম, শোলে, দিলওয়ালে দুলহানিয়া লে জায়েঙ্গে, কুচ কুচ হোতা হ্যায়, দিলতো পাগল হ্যায়, থ্রি ইডিয়টস, ওয়ানটেড, তারে জামিন পার, ডন টু এবং কাভি খুশি কাভি গাম। কিন্তু বাংলা ছাড়া এতে অন্তর্ভুক্ত নয়টি হিন্দি চলচ্চিত্রের এলসি সরকারি নিষেধাজ্ঞার পর অর্থাৎ ২৩ জুন ২০১০ সালে খোলায় আদালত এই নয়টি চলচ্চিত্র সেন্সরের অনুমতি দেয়নি। প্রতিষ্ঠানটি ১২টি চলচ্চিত্র সেন্সরের জন্য যে রিট পিটিশন দাখিল করেছিল তার নম্বর হচ্ছে ৯৯৩৮/২০১০ এবং ১০ অক্টোবর এক পত্রে প্রতিষ্ঠানটি দাবি করে প্রথম তিনটি বাংলা চলচ্চিত্র আমদানির জন্য ঋণপত্র খোলা হলেও ১ জুন ২০১০ সালে ঋণপত্রটি সংশোধন করে নয়টি হিন্দি চলচ্চিত্র আমদানির বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত করা হয়। এতে যুক্তি উত্থাপন করে বলা হয়, সংশোধনটি ১৭ জুন ২০১০ সালের থাকলেও বিজি প্রেস থেকে উক্ত গেজেট ছাপা হয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে আসে ২৫ নভেম্বর ২০১০ সালে। কিন্তু ব্যাংক থেকে সংগৃহীত এলসির রেকর্ড অনুযায়ী এলসি সংশোধনীর মাধ্যমে অতিরিক্ত নয়টি চলচ্চিত্র এলসিভুক্ত করা হয় আমদানি নিষিদ্ধের পর ২৩ জুন ২০১০ এবং ২৫ সেপ্টেম্বর ২০১০ সালে। আমদানি নিষিদ্ধের প্রায় দুই বছর পর ৩০ জুন ২০১২ সালে ইন উইন এন্টারপ্রাইজ নয়টির মধ্যে চারটি হিন্দি চলচ্চিত্র আমদানি করে এবং ১২ সেপ্টেম্বর ২০১২ তারিখে সেন্সর বোর্ডের এনওসির জন্য আবেদন করে। এতে সেন্সর বোর্ড অস্বীকৃতি জানায় এবং আইন মন্ত্রণালয়ের কাছে পরামর্শ চায়।। মূলত সেন্সর বোর্ডের কঠোর অবস্থানের কারণেই তখন হিন্দি ছবিগুলো প্রদর্শনে ব্যর্থ হয় আমদানিকারকরা। আইন মন্ত্রণালয় ৯৯৩৮/২০১০ রিট পিটিশন সম্পর্কিত আদালতের আদেশ ভ্যাকেট করার পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য তথ্য মন্ত্রণালয়কে পরামর্শ দেয়। এতে দরখাস্তটির ওপর শুনানির জন্য মামলাটি কজলিস্টে আসে এবং আংশিক শুনানি সম্পন্ন হয়। মামলার কার্যক্রম বর্তমানে মুলতবি রয়েছে। এ অবস্থায় মন্ত্রণালয় ৩ নভেম্বর উল্লেখিত চারটি হিন্দি চলচ্চিত্র প্রদর্শনে অনুমোদন দিয়ে পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য তথ্য মন্ত্রণালয়ে ফাইলটি প্রেরণ করে।

এদিকে এ সিদ্ধান্তের তীব্র সমালোচনা করে চলচ্চিত্র পরিবারের আহবায়ক শহীদুল ইসলাম খোকন বলেন,’এ কিসের আলামত, কার স্বার্থে হিন্দি ছবি প্রদর্শনের অনুমতি দেওয়া হলো, এতে কারা লাভবান হবে। চলচ্চিত্র শিল্প যখন আবার মাথা তুলে দাঁড়াচ্ছে তখনই দেশীয় শিল্পকে ধ্বংসের জন্য আবারও ষড়যন্ত্রকারীদের পাঁয়তারা শুরু হয়েছে। চলচ্চিত্র পরিবারের সদস্যরা বুকের রক্ত দিয়ে এই ভিনদেশি অপসংস্কৃতির আগ্রাসন রোধ করবে।

সূত্র: বাংলাদেশ প্রতিদিন


মন্তব্য করুন