Select Page

মোশাররফ করিম অভিনীত প্রিয় পাঁচ (লিংকসহ)

মোশাররফ করিম অভিনীত প্রিয় পাঁচ (লিংকসহ)

বাংলা নাটকের জনপ্রিয়তম অভিনেতা মোশাররফ করিমের অসংখ্য নাটক ব্যক্তিগতভাবে বেশ প্রিয়,অভিনেতা হিসেবে তো তিনি অতুলনীয়। আজ জন্মদিনে উনার অভিনীত আমার প্রিয় অন্যতম পাঁচ নাটক(একক ও টেলিফিল্ম)-

ক্যারাম: টিভি নাটকে মোশাররফ করিমের জনপ্রিয়তার পেছনে যে নাটকটির অনেকখানি অবদান, সেটি ‘ক্যারাম’। শফিক নামের একজন ছেলে, সে প্রায় সবকিছুতেই পারদর্শী, কিন্তু আঙুলের কাজে সেভাবে পেরে উঠে না। শফিক চরিত্রে অভিনয় করে মোশাররফ করিম অভিনয় করে নজর কাড়েন, তাঁর প্রেমিকার চরিত্রে অভিনয় করেন তিশা। আনিসুল হকের কাহিনী নিয়ে নির্মাণ করেন মোস্তফা সরয়ার ফারুকী, মোশাররফ করিমের জনপ্রিয়তার পেছনে এই নাটকে প্রভাব অনেকখানি। পরবর্তীতে এটির সিক্যুয়েল ও বের হয়।

 

বনলতা সেন: নিজের জীবনের উপর বিতৃষ্ণার কারণে আত্মহত্যা করতে যায় মোশাররফ করিম, তবে তাকে বাঁচায় রিচি সোলায়মান। তার আত্মহত্যাকে নিজেদের কোম্পানির প্রচারের কাজে লাগাতে চায় রিচির বস হাসান মাসুদ। এরপর এগিয়ে যায় কাহিনী। ড. মুহম্মদ জাফর ইকবালের লিখা দারুণ এই গল্পকে নাটকে রুপদান দেন অভিনেতা ও নির্মাতা মাহফুজ আহমেদ। প্রধান চরিত্রে মোশাররফ করিমের অসাধারণ অভিনয় দেখেই তার ভক্ত হয়েছিলাম।

হ্যালো: এই নাটকের প্রেক্ষাপট শূন্য দশকের মাঝামাঝি সময়ের পর। যখন মোবাইল অনেকটাই সহজলভ্য হয়ে যায়, আর সিম কোম্পানি কথা বলার জন্য বিশেষে সুবিধা দিতে থাকে। তরুণ শ্রেনীর মধ্যে চালু হয় ইচ্ছে করেই অপরিচিত নাম্বারে ফোন দেওয়া, তেমনি এই গল্পের একজন ব্যাচেলর বাসায় থাকা কাশেম। সে এইসবে আনন্দ পায়। এই দিকে রবিন ও দীপা সদ্য বিবাহিত দম্পতি। রবিনের মোবাইলের প্রতি বিতৃষ্ণা থাকলেও দীপার কারণে কিনতে হয়। দীপার নাম্বারেই শুরু হয় কাশেমের ফোন দেয়া। এটায় বিরক্ত হয়ে রবিন ফোন দিয়ে ভয় দেখায় কাশেমকে। ভীত কাশেম নানা ঘটনা প্রবাহের পর আশ্রয় নেয় রবিনদের বাসাতেই, এরপর ঘটতে থাকে নানা মজার কান্ড!  মোশাররফ করিমেরই গল্প অবলম্বনে রেদওয়ান রনি পরিচালিত অত্যন্ত জনপ্রিয়তা পায় এই নাটক। মূল ভূমিকায় মোশাররফ করিম ও মিশু সাব্বিবের অভিনয় সাথে রেদওয়ান রনির চিত্রনাট্য  এই নাটকের মূল সম্পদ।  তাদেরকে যথাযথ সঙ্গ দিয়েছেন সুমাইয়া শিমু।

ভালোবাসার উল্টোপিঠ: স্বামী-স্ত্রী দুইজনেই চাকুরিজীবী, বাচ্চাকে রেখে গেছেন নতুন আয়ার কাছে। তারা দুইজন গাড়িতে উঠতেই পেছন থেকে পিস্তল দিয়ে ভয় দেখায় এক আগন্তুক, বলে মেয়েকে কিডন্যাপ করেছে। সেই আগন্তুক তাদের ফাঁদে ফেলে নানান কাজকর্ম করে যায়। স্বামী রাজি না হলেও মেয়েকে বাঁচানোর জন্য সব কাজ করে যায় স্ত্রী। সর্বশেষ স্বামীকে পাঠানো হয় একজনকে খুন করতে, কিন্তু গিয়ে দেখে সে অবাক হয়! বেরিয়ে আসে অন্য এক গল্প। বিদেশী গল্প অবলম্বনে রায়হান খানের দারুণ নাটক ‘ভালোবাসার উল্টোপিঠ’।

রহস্যময় আগন্তুকের চরিত্রে মোশাররফ করিমের অভিনয় আপনাকে মুগ্ধ করবেই, আরো ছিলেন তারিন, হিল্লোল, তিশা। যারা মোশাররফ মানেই কমেডি বুঝেন তাদের জন্য অবশ্যই দেখার জন্য অনুরোধ রইলো।

শিক্ষাসফর: পোল্ট্রি ব্যবসায়ী মজিদের আমেরিকার যাবার শখ, অন্যদিকে এতিম তুলি বৃত্তি পেয়েও টাকার জন্য আমেরিকা যাওয়া হচ্ছে না।  অবশেষ কন্ট্রাক্ট ম্যারেজের মাধ্যমে দুইজনের আমেরিকা যাবার ব্যবস্থা হয়। তবে গ্রাম থেকে আসা অশিক্ষিত মজিদের সাথে শহুরে মেধাবী ছাত্রী তুলির সাথে খাপ খাওয়ানো, আমেরিকা যাওয়া নিয়ে বিভিন্ন ব্যস্ততা নিয়েই দারুণ নাটক ‘শিক্ষাসফর’। হাসান মোরশেদকে ভীষন আন্ডাররেটেড নির্মাতা মনে হয়, ভালো ভালো নাটক বানিয়েও অগোচরে থাকেন। মোশাররফ করিম ও অপর্ণার দুইজনেই অভিনয় ভালো করেছেন। নাটকের একদম শেষ দৃশ্যে ‘ও কি কাজল ভ্রমরারে’ গানটা একেবারে মন ছুঁয়ে যায়, তখন মোশাররফ করিমের অভিনয় ছিল চমকে দেয়ার মতো।

বিশেষ:
কাঁটা: শহিদুল জহিরের ছোটগল্প অবলম্বনে অনিমেষ আইচের নাটক ‘কাঁটা’। দেশের ক্রান্তিলগ্নে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গাকে রহস্যময় আকারে উপস্থাপন করা হয়েছিল। প্রচারের পর তুমুল প্রশংসা পেয়েছিল, সম্ভবত মোশাররফ করিমের এই নাটকটিই সমালোচকদের কাছে বেশি সমাদৃত হয়েছিল। আরো ছিলেন দীপান্বিতা, শহিদুজ্জামান সেলিম।

ধারাবাহিক নাটকের ইতিহাসেও উজ্জ্বলতম অধ্যায় মোশাররফ করিম, অনেকেরই তুলনায় তিনি বেশি জনপ্রিয় ধারাবাহিক নাটকের অভিনেতা হয়েছে। সেইখান থেকে অন্যতম প্রিয় পাঁচ ধারাবাহিক হলো- হাউজফুল, সাকিন সারিসুরি, এফ এন এফ, ৪২০ ও ফিফটি ফিফটি। এ ছাড়া অসংখ্য বিশেষ কাজের মধ্যে পিন্টু মিন্টু সিরিজ, ঠুয়া, দেয়াল আলমারি, ভবের হাট, হাড় কিপ্টে, বোধ, সাধাসিধে মানুষের গল্প, দেনমোহর বেশ প্রিয়।


মন্তব্য করুন