শিকারী: শাকিবের কাছে নতুন কিছু
বাংলাদেশের নামকরা কন্ট্রাক্ট কিলার সুলতান (শাকিব)। বড় ধরণের মিশন ছাড়া তেমন কাজ করেনা। একজন বিখ্যাত ব্যাক্তিকে খুন করার জন্য ভারতে আসে। অনেক সুক্ষ্ম ভাবে সুলতান ঐ ব্যাক্তিকে খুন করে। এটি নজরে পড়ে ভারতের একজন কুখ্যাত সন্ত্রাসীর। সে সুলতানকে মিশন দেয় জাজ মি. রুদ্র কে খুন করার। কিন্তু মিশনটিতে বারবার ব্যার্থ হচ্ছে সুলতান। আবার ডোনারের কাছে বুলি কপচাচ্ছে সে কোন টার্গেট মিস করেনা।
সে রুদ্র সাহেব (সব্যসাচি) কে খুন করার উদ্দেশ্যে রুদ্র সাহেবের বাড়ির চাকর তিন কুড়িকে ফাঁদে ফেলে সুলতান তার বাড়িতে আশ্রয় নেয়। বাড়িতে থেকেই খুন করতে চায় রুদ্রকে কিন্তু সুলতান এবারো ব্যার্থ হয় বাড়িতে থাকা শ্রাবন্তীর জন্য।
সে রুদ্র সাহেব (সব্যসাচি) কে খুন করার উদ্দেশ্যে রুদ্র সাহেবের বাড়ির চাকর তিন কুড়িকে ফাঁদে ফেলে সুলতান তার বাড়িতে আশ্রয় নেয়। বাড়িতে থেকেই খুন করতে চায় রুদ্রকে কিন্তু সুলতান এবারো ব্যার্থ হয় বাড়িতে থাকা শ্রাবন্তীর জন্য।
শিকারী নিঃসন্দেহে একটি ভাল মানের ছবি। কিন্তু এ ছবির কিছু মাইনাস পয়েন্ট আছে। ছবি শুরুর দিকে শাকিব যখন পুলিশের কাছ থেকে পালিয়ে যাচ্ছিল তখন দৌড়ের সময় দেখা যাচ্ছিল তার পা সমান্তরাল না পড়ে এলোমেলো ভাবে পড়ছে। (একই রকম দৃশ্য দেখা গিয়েছিল মুসাফিরে সেখানে ফাইটিং ডিরেক্টর রোমেলের সাথে শুভর দৌড়টি) এখানে যেহেতূ শাকিবের পা জোড়া বাকা দেখা যাচ্ছিল তাই যদি শুধু হাটুর উপর থেকে বডিটা দেখাত তাহলে হয়ত দৃশ্যটি আরো ভালো লাগত বা দুর্বলতাও কম থাকত।অভিনয়: এ ছবিতে অভিনয় করেছেন ঢালিউডের কিং খান শাকিব। তার সাথে প্রথমবারের মত জুটি বেধেছেন টালিউডের মিষ্টি মেয়ে শ্রাবন্তী। পার্শ্বচরিত্রগুলোতে অভিনয় ফেলুদাখ্যাত সব্যসাচী চক্রবর্তী, কচুপোড়াখ্যাত খরাজ মুখার্জী।
শাকিব খান: দেশের ছবিতে তাকে অনেকটা ওভার অ্যাক্টিং করতে দেখা গেলেও এছবিতে তার ওভার অ্যাক্টিং এর ছাপটা অনেক কম ছিল। দুএকটি সিকোয়েন্স বাদে তাকে দেখা গেছে খুব সাবলিল। তবে তার অঙ্গভঙ্গিতে কিছু সিকুয়েন্সে মনে হচ্ছিল জোর করে করছেন।
শ্রাবন্তী: তিনি অভিনয়ে যথেষ্ঠ পারদর্শী। অভিনয় করেছেন তার নিজের মত করেই। বর্ষীয়ান হলেও তার শিশুসুলভ লুক বা আচরণ পছন্দ করেনা এমন দর্শক কমই আছে। তিনি দুষ্ট মিষ্টি চুটকি চরিত্রটি অনেক ভালকরেছেন।
সব্যসাচী চক্রবর্তী: ভারতের অভিনেতাদের মধ্যে তপেন চট্টোপাধ্যায়ের পরেই তিনি আমার প্রিয়। ফেলুদা খ্যাত এই বর্ষীয়ান অভিনেতা বরাবরের মতই ভাল করেছেন। সাধারণত দেখা যায় যারা নীতিবান চরিত্রের অভিনয় করে তাদের বেশির ভাগ ক্ষেত্রে গলাবাজি করে বলে “আমি সৎ ও নীতিবান” কিংবা “আমাকে কিনতে পারবেনা” এসব সংলাপে তিনি কোন রূপ গলাবাজি না করে অনেক সাবলীল ছিলেন।
খরাজ মুখার্জী: খরাজ মুখার্জী নিঃসন্দেহে বাংলার (পশ্চিমবঙ্গের বর্তমান নাম) সেরা কমেডিয়ান। তিনকড়ি চরিত্রে তিনি বেশ ভাল অভিনয় করেছেন। প্রায় প্রতিটি ছবিতে তার একটি কমন ডায়লগ থাকে এতেও তার ব্যাতিক্রম হয়নি “ড্যাং ড্যা ড্যাং” বলে তার কথা শুরু করতেন। শাকিবের সাথে তার কম্বিনেশনটা ভাল ছিল।
ভুল:
১। শাকিব যখন এন্ট্রি নেয় তখন দেখা গেল সে সিগারেট টানছে। শাকিব একটা অদ্ভুত যাদু জানে সে সিগারেটে একবার টান মারলে সিগারেট ছোট হয়। আবার টান দিলে সিগারেট বড় হয়। তারমানে সে একটা সিগারেট সারজীবন টানতে পারবে।
২। রুদ্র সাহেবের বাড়িতে থাকা সিকুউরুটি গার্ডকে পুলিশ বলা হয় ।
৩। বাংলাদেশের ডায়গনস্টিক সেন্টারে এক্সরে মেশিনের দরকার নাই। শাকিবের চোখে এক্সরে আছে। যার মাধ্যমে শাকিব এক জায়গায় দাড়িয়ে বাড়ির ছাড়, উঠোন, ঘরের ভিতরে থাকা চুটকি রূপি শ্রাবন্তীকে দেখতে পায়।
৪। শাকিবের কান বাডুড়ের মত শার্প। ঘরে বসে গুণগুন করা গানে শ্রাবন্তি যেখানে থেমে গেছে তা ঠিক পরের লাইন থেকে গাওয়া শুরু করেছে।
৫। রুদ্র সাহেবের গাড়ি ওয়ালা গণক। তিনি আগেই জানতে পারেন রুদ্র সাহেব এখন গাড়ি থামাতে বলবেন। তা নাহলে রাস্তার মাঝখানে কেন থামতে বলার আগেই গাড়ি থামাবেন?
৬। শাকিব গ্রামীণফোনের ইনটারনেটের মত সুপার ফাস্ট। একই সাথে এসে তার পরিবার বিয়ে অনুষ্ঠানে পৌছার আগেই তার কাপড় চেঞ্জ করে আবার অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়। শাকিবের সাথে থেকে থেকে শ্রাবন্তীও হয়ে যান সুপারওম্যান। সেও চোখের পলকে সাজ পাল্টায়ে নাচতে শুরু করে।
৭। শেষ ফাইটিং দৃশ্যে শাকিব ও রাহুল দেব যেখানে মারামারি করছিলেন সেখানে তাদের পায়ের নিচে ছিল শক্ত কয়লা। অথচ কিছুক্ষণের মধ্যেই দেখানো হলো তাদের পায়ের নিচে নরম বালু! কয়লা থেকে বালু বের হয়?