Select Page

শৈশবের লজ্জা-ভয় কাটিয়ে এখন দেশের অন্যতম অভিনেতা ফারুক আহমেদ

শৈশবের লজ্জা-ভয় কাটিয়ে এখন দেশের অন্যতম অভিনেতা ফারুক আহমেদ


শৈশব লজ্জা-ভয় কাটিয়ে ও আত্মীয় স্বজনদের নেতিবাচক মনোভাব উড়িয়ে দিয়ে অভিনেতা হবেন- এমনটা ঘুণাক্ষরেও ভাবেননি ফারুক আহমেদ। এই পার্থক্য দেখে তিনি নিজেও অবাক হন।

নিজের ফেসবুক হ্যান্ডেলে ফারুক নিজের সম্পর্কে সবিস্তারে জানিয়েছেন। বাড়িতে কেউ এলে লজ্জায় খাটের নিচে লুকিয়ে পড়তেন- এমন সব ঘটনা নিজেই বলছেন অভিনেতা। ফারুক বলেন, ‘জীবনে ভাবিনি আমি অভিনেতা হব। ছোটবেলায় আমি ছিলাম খুব লাজুকপ্রকৃতির। নিজের খালারা যখন আমাদের বাসায় বেড়াতে আসতেন আমি তখন দৌড়ে দরজার চিপায় অথবা খাটের নিচে গিয়ে লুকিয়ে থাকতাম। খালারা আমার মাকে জিজ্ঞাসা করতেন, ফারুক কই? মা তখন উত্তর দিতেন, কোথায় আবার? দেখ কোন দরজার চিপাচাপায় নয়তো খাটের তলায় লুকিয়ে আছে।’
মাথা হেঁট করে খালাদের সামনে দাঁড়াতেন ফারুক। স্মৃতিচারণা করে অভিনেতা বললেন, ‘আমার খালাতো ভাইয়েরা সঙ্গে সঙ্গে অভিযানে নেমে পড়ত। এঘর-ওঘর খুঁজতে খুঁজতে একসময় আমাকে কোনো এক দরজার চিপা বা খাটের তলা থেকে বের করে নিয়ে আসত। আমি তখন মাথা হেঁট করে খালাদের সামনে এসে এমন ভঙ্গিতে  দাঁড়াতাম যেন আমি বিরাট এক অপরাধী। কী এক অজানা লজ্জায় তখন আমার মরে যেতে ইচ্ছা করত।’

নানা বিব্রতকর প্রশ্নের মুখে পড়তেন জানিয়ে ফারুক বলেন, ‘খালারা আমাকে দেখা মাত্র নানা রকম বিব্রতকর প্রশ্ন করা শুরু করতেন। ‘কী রে তোর এই অবস্থা কেন? তুইতো আগের চেয়ে আরো বেশি কালো হয়ে গেছিস। খাওয়াদাওয়া করিস না? তোকে তো খবিশের মতো লাগছে।’ আমি কোনো কথা বলতাম না। চুপচাপ দাঁড়িয়ে থাকতাম। সব অপমানজনক প্রশ্ন করা শেষ হলে তারা আমাকে তাদের সামনে থেকে চলে যেতে বলতেন। আমি ধীরে ধীরে তাদের সামনে থেকে চলে যেতাম।’

খালাতো ভাইদের কাছ থেকে রেহাই পেতেন না। বললেন, ‘সমবয়সী খালাতো ভাইয়েরা আমাকে সান্ত্বনা দিত, থাক কিছু হবে না। বড়রা তো তোর ভালোর জন্যই বলে। চল মাঠে গিয়ে বল খেলি। আমি তখন তাদের সঙ্গে মাঠে খেলতে চলে যেতাম।’

ফারুক বলেন, ‘এভাবেই নানান ভয়, লজ্জা আর অপমানে আমার শৈশব-কৈশোর কেটেছে। লজ্জা, ভয় কাটিয়ে কখন যে আমি সাহসী হয় উঠলাম নিজেরও মনে নেই। কেন আমার ভেতর অভিনয়ের নেশা চাপল তা-ও বলতে পারব না।  আমি জানি না আমার পথের শেষ কোথায়? শুধু এইটুকু জানি, আমি এখন অভিনেতা। আমাকে মানুষ অভিনেতা হিসেবেই জানে।’


Leave a reply