Select Page

হাসিনা আ ডটার্স টেল : একটি তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া

হাসিনা আ ডটার্স টেল : একটি তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া

হাসিনা আ ডটার্স টেল’ ডকুফিল্মটা দেখে শেষ করলাম মাত্র। আজকে তিনটা টিভি চ্যানেলে দেখানো হয়েছে খুব সম্ভবত। নির্মাতা জুয়েইরিযাহ  মউয়ের কাছে খবর পেয়ে প্রথমে ভাবলাম আমারতো টেলিভিশন নাই কেমনে দেখি! কিন্তু সহসা মাথায় বুদ্ধি এলো, অনলাইন লাইভ খুঁজে দেখি। তো চ্যানেল আই লাইভ পেয়ে গেলাম। দেখে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া লিখছি এটা। পরে কোনোদিন ইচ্ছে হলে ডিটেইলে যাবো। বিষয় বিশাল। কিন্তু সেই তুলনায় ডিরেক্টর-সহ কলা-কৌশলীগণকে অপেক্ষাকৃত দুর্বল মনে হয়েছে। যেহেতু শেখ হাসিনাকে নিয়েই, যেহেতু আরেকটু গোছানো হতে পারতো। মেকিং অতিশয় দুর্বল। এত বড় বিষয় নিয়ে অভিজ্ঞ এবং আরো ট্যালেন্ট ফিল্মমেকার আসতে পারতেন। সেটা কী কারণে হলো না, তা আমার মাথায় ঢুকছে না।

সিনেমাটোগ্রাফি, কালার, স্ক্রিপ্ট, সিকোয়েন্স সবকিছুতেই ঝামেলা। কিছু কিছু জায়গায় সাবলিলও মনে হয় নাই। ডিরেক্টর হয়তো মনে করেন কিছু ভিডিও ক্লিপ জোড়া দিয়ে আগে পরে টাইটেল দিয়ে দিলেই হয়ে যায়। ডিরেক্টর কেবল কিছু ভিডিও ক্লিপ কালেক্ট করেছেন। আর দুইবোনের সাক্ষাৎকার নিয়েছেন। এরপর কম্পাইল করেছেন। করার সময় হয়তো নিজেকে তারেক মাসুদ ভাবছিলেন। মনে করছিলেন ‘মুক্তির গান’-এর মতো কিছু একটা বানিয়ে ফেলবেন। ভাবছি তানভীর মোকাম্মেল মাপের কেউ বানালে জিনিশটা অন্য রকম হতো। কিন্তু সেইটা হয় নাই।

শেখ হাসিনা আর শেখ রেহেনা প্রায় সমান্তরালে ছিলেন স্মৃতি-চারণে। ফলত নামকরণের সার্থকতাও ব্যাহত হয়েছে। অন্য নাম হতে পারতো সেক্ষেত্রে।

সব থেকে বড় পয়েন্ট হলো একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধের সময়কার নয়মাস বঙ্গবন্ধুর অনুপস্থিতিতে শেখ হাসিনা এবং পরিবারের আর্থসামাজিক-মানসিক অবস্থার তেমন কোনো কথা নেই। আর পনেরো আগস্টের মতো একুশে আগস্টও খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয় জাতির কাছে, আর সেটা এই সিনেমায় ওইভাবে আসেইনি। বলা যায় এক লাইনে শেষ।

তবে সিনেমাটা দেখে মন দ্রবীভূত হয়েছে। সেটা অবশ্যই মেকিং-এর কারণে নয়, বিষয়ের কারণে। বিষয়গুলি যদিও আগে থেকেই জানি, তারপরও আবারও যখন শেখ হাসিনার মুখে শুনলাম খুবই মর্ম স্পর্শ হলো।

এইবার উইকিপিডিয়া থেকে পাওয়া তথ্য যুক্ত করে দিই পাঠকের জানার সুবিধার্থে। ‘হাসিনা আ ডটার্স টেল’ (হাসিনা একজন আত্মজার গল্প), পরিচালক রেজাউর রহমান খান। ২০১৮ সালের বাঙলা পূর্ণদৈর্ঘ্য প্রামাণ্যচিত্র, যা বাঙলাদেশের ১০ম ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জীবনের ওপর ভিত্তি করে নির্মিত। সিনেমাটি যৌথভাবে প্রযোজনা করেছে সেন্টার ফর রিসার্চ অ্যান্ড ইনফরমেশন এবং অ্যাপলবক্স ফিল্মস। এখানে শেখ হাসিনাকে স্বভূমিকায় নামচরিত্রে এবং তার বোন শেখ রেহানাকে তার স্বভূমিকায় দেখা যায়। সিনেমাটিতে ১৯৭৫ সালে হাসিনার পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং তার পরিবারের বেশিরভাগ সদস্যের হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত বিষয়ের উল্লেখ রয়েছে। ১ ঘন্টা ১০ মিনিটের এই সিনেমার সিনেমাটোগ্রাফার সাদিক আহমেদ। এডিটর নবনীতা সেন। মিউজিক দেবজ্যোতি মিশ্র। এখানে আরো দুটি ট্র্যাক রয়েছে, যার মধ্যে একটি পরিচালক পিপলু নিজেই গেয়েছেন। সিনেমাটি ২০১৮ সালের ১৬ নভেম্বর বিশ্বব্যাপী মুক্তি পায়। শেখ হাসিনার ৭১তম জন্মদিন ২০১৮ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর সামাজিক যোগাযোগ সাইটসমূহে এর ট্রেলার মুক্তি পায়।

এইবার আপাতত আমার শেষ কথা বলি, আমাদের দেশে বড় বড় প্লটগুলি পাগল-ছাগল অমেধাবী লোকজন এসে নষ্ট করে দেয়, ফলত মেধাবীরা আর আগ্রহ পায় না একই প্লট নিয়ে কাজ করার। যেমন আজাদের প্লট নষ্ট করেছে করেছে একজন। শুনছি বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে শ্যাম বেনেগাল সিনেমা বানাবেন। এটা যেনো সত্য হয়, নাহয় দেখা যাবে কোনো যদুমধুরামশাম এসে বানিয়ে ফেলেছে একটা বায়োপিক।

(খসড়া)


মন্তব্য করুন