হুমায়ূনের জীবনী নিয়েই কি ডুব? শুনুন পার্নোর বক্তব্য
শুক্রবার মুক্তি পাচ্ছে মোস্তফা সরয়ার ফারুকীর সিনেমা ‘ডুব’। এর মাধ্যমে বাংলা ছবিতে প্রথমবার দেখা যাবে বলিউড অভিনেতা ইরফান খানকে। এই ছবিতে অভিনয় করেছেন টলিউড অভিনেত্রী পার্নো মিত্র। সম্প্রতি কলকাতার এ অভিনেত্রীর সাক্ষাৎকার প্রকাশ করেছে স্থানীয় সংবাদমাধ্যম ২৪ ঘণ্টা। জেনে নিন সেখানে কী বলেছেন পার্নো—
ইরফান খানের মতো এমন একজন অভিনেতার সঙ্গে কাজ করার অভিজ্ঞতা কেমন ছিল?
পার্নো : ইরফান খানের সঙ্গে অভিনয় করাটা আমার কাছে একটা নতুন অভিজ্ঞতা। অনেক কিছু শেখার ছিল বলতে পারো। আমি তো পুরোপুরি অ্যাক্টিং স্কুলে যাওয়ার মতো করে নিয়েছিলাম ব্যাপারটা। ‘ডুব’-এ কাজ করার অফার আসতেই আমি হ্যাঁ করে দিয়েছিলাম। চিত্রনাট্য আমার ভীষণ পছন্দ হয়েছিল।
আর যখন আমি শুনলাম ইরফান খানের মতো অভিনেতা এখানে কাজ করছেন তখন তো আর আমার উৎসাহের অন্ত ছিল না। আমি তো শুনেই বললাম, হ্যাঁ, এই সিনেমায় আমায় যে চরিত্রই দাও না কেন, আমি করব। এই সুযোগ কেউ ছাড়ে না। অন্য কেউ হলেও ছাড়তে না, আমিও ছাড়িনি (হাসতে হাসতে)। যাকে আমি ছোট থেকে টিভিতে দেখেছি, তার সঙ্গে কাজ করাটা সৌভাগ্যের বিষয়। দারুণ একটা অভিজ্ঞতা বলতে পারো।
৫০ বছরের একটা মানুষের সঙ্গে ১৯ বছরের একটা মানুষের প্রেম, এই গল্পে তোমার চরিত্রটার যদি একটু আভাস দাও…
পার্নো : আমার চরিত্রটা (একটু ভেবে) ভীষণই জটিল একটা চরিত্র। গল্পে জাভেদের মেয়ে সাবেরির (নুসরাত ইমরোজ তিশা) বেস্ট ফ্রেন্ড নীতু। আর এই গল্পে নীতুর চরিত্রেই আমি অভিনয় করেছি। সাবেরি আর নীতু সবসময় একসঙ্গে স্কুলে পড়েছে। ওরা খুব ভালো বন্ধু, তবুও কোথাও গিয়ে নীতুর মনে হয়েছে সাবেরি ওর থেকে এগিয়ে। কারণ, ওর নামের সঙ্গে জাভেদের নাম রয়েছে। তাই কোথাও গিয়ে নীতুর মধ্যে একটা হীনমন্যতা কাজ করে। মনে হয় ওর বন্ধু, ওর থেকে সব লাইমলাইট কেড়ে নিচ্ছে। তখনই সে কোথাও একটা গিয়ে জেলাস ফিল করে, একটা ইমম্যাচিওরিটি রয়েছে। এই সব নিয়েই আমার চরিত্র।
ছবি নিয়ে অনেক বিতর্ক রয়েছে, অনেকে বলছেন হুমায়ূন আহমেদের জীবনী ফুটে উঠেছে। এইসব বিতর্ক কীভাবে সামলেছো?
পার্নো : না, এ ধরনেরর কারোর জীবনী নিয়ে ছবি বলে তো আমাদের কখনো বলা হয়নি। কারণ, কারোর জীবনী নিয়ে কোনো ছবি হলে পরিচালক অবশ্যই বলেতেন। ফারুকী এ ধরনের কোনো কথাই বলেনি। তাই যখন বিষয়টা শুনলাম আমি খুব অবাক হলাম। তখন আমার হঠাৎ মনে পড়ল তাহলে তো ‘নিঃশব্দ’ বলে এরকম এক সিনেমা হয়েছিল। একটা বয়স্ক লোকের সঙ্গে অল্পবয়স্ক মেয়ের প্রেমের সম্পর্ক। কিন্তু এখানে তো বাবা-মেয়ের সম্পর্কের কথা বলা হয়েছে। সেখানে আমি কারোর জীবনীর সঙ্গে সিমিলারিটি আমি কোথাও খুঁজে পায়নি।
কোথাও একটা ভুল বোঝাবুঝি হচ্ছে। এটা একটা শিল্প। এখানে কারোর জীবনী নিয়ে করা হয়নি। কোথাও সিমিলারিটি থাকতেই পারে, তবে তো সেটা অনেকের জীবনের সঙ্গেই থাকতে পারে।
ইরফানের সঙ্গে অনস্ক্রিন রোম্যান্স করতে হয়েছে কতটা?
পার্নো : এই একটুখানি করতে হয়েছে, বেশি করতে হয়নি (হাসতে হাসতে)। তবে প্রচুর ঝগড়া করতে হয়েছে। বললাম না, আমার চরিত্রটা ভীষণ ইমম্যাচিওর। বাচ্চাদের মত সে সবকিছু চায়। কারণ সে এখনো সাবেরি বা জাভেদের প্রথম স্ত্রীর জায়গাটা চায়, কিন্তু কোনওভাবে পায় না। এধরনের প্রচুর জটিলতা আছে।
পরিচালক ফারুকীর সঙ্গে কাজ করার অভিজ্ঞতা কেমন?
পার্নো : ফারুকীর সঙ্গে কাজ করার অভিজ্ঞতাও বেশ ভালো। আসলে ওর কাজ করার ধরনটা তো একটু অন্যরকম। ও খুব মুডি। হয়ত স্ক্রিপ্টে কিছু লেখা আছে, কিন্তু হঠাৎ করে সেটে এসে বলল, না এটা করব না। তারপর খুব ইন্টারেস্টিং একটা কিছু ভাবল। আমিও সেটাই করলাম। বেশ ভালো। খুব মজা লেগেছে কাজ করে।
অভিনেতা-অভিনেত্রীদের মুডের সঙ্গে মানিয়ে কাজ করাটাও তো গুরুত্বপূর্ণ। সেটা কতটা পেয়েছ?
পার্নো: আর, অনেকসময়ই এমন হয় যে আমাদের কোনো কিছু করতে ভালো লাগছে না, হয়ত সারাদিন কাজ করার পর খুব ক্লান্ত লাগছে, তখন কোনো শট দিতে গেলে সেটা হয়ত অতটা ভালো হবে না। কিন্তু আমাদের তবুও করতে হয়। তবে ফারুকীর সিনেমায় আমরা অনেক রিল্যাক্স করে কাজ করেছি। আমাদের মুড বুঝে কাজ করা হয়েছে।