Select Page

১০টি কারণ ‘মায়াবতী’ দেখতেই হবে

১০টি কারণ ‘মায়াবতী’ দেখতেই হবে

১. অরুণ চৌধুরী: ছোট ছোট ঢেউ, অন্ধ শিকারী, আড়াল সহ অনেক সফল নাটকের নাট্যকার, পরিচালকের দ্বিতীয় ছবি ‘মায়াবতী’। প্রথম ছবি ‘আলতাবানু’ নানাবিধ কারণে বক্স অফিস সফলতা না পেলেও বিভিন্ন উৎসবে প্রশংসিত হয়েছিল। এবারের ছবি আমজনতা ও বোদ্ধা সমালোচক দুই পক্ষের জন্যই নিজের সর্বোচ্চ দিয়ে নির্মাণ করেছেন, লিখেছেন, প্রযোজনা করেছেন অরুণ চৌধুরী।

২. আনোয়ার আজাদ: টরন্টো ফিল্ম ফেস্টিভ্যালসহ কানাডার বিভিন্ন চলচ্চিত্র উৎসবে তিনি একটি প্রধান নাম। ভালো ছবির পরখ করতে তিনি জানেন। দীর্ঘদিন চলচ্চিত্রের সাথে জড়িত থাকলেও নিজের অর্জিত অভিজ্ঞতা নিয়ে এবারই প্রথম চলচ্চিত্র প্রযোজনায় পা রেখেছেন তিনি। প্রতিজ্ঞা করেছেন, এখন থেকে প্রতি বছর বাংলা ছবি নির্মাণ করবেন। প্রযোজক বাঁচিয়ে রাখার জন্য হলেও ‘মায়াবতী’ দেখতে হবে।

৩. গল্প: সারা বিশ্বেই #Metoo নিয়ে মুভমেন্টের কথা আমরা শুনেছি। পাশের দেশ ভারতেও পিঙ্ক সহ বেশ কিছু চলচ্চিত্র আমরা দেখেছি। তবে আমাদের দেশে এমন সংবেদনশীল বিষয় নিয়ে মূলধারার কোনো চলচ্চিত্র নির্মাণ হবার কথা শোনা যায়নি এর আগে। এ ছবিতে বাংলাকে খুজে পাওয়া যাবে, বাংলাদেশকে খুঁজে পাওয়া যাবে, নারীদের নানা প্রতিকূলতার পরও উঠে দাঁড়াবার গল্প জানা যাবে।

৪. নুসরাত ইমরোজ তিশা: তিশা তার প্রজন্মের অভিনেত্রীদের মধ্যে শ্রেষ্ঠ এটি হয়তো তার নিন্দুকরাও স্বীকার করবেন। তিশা এর আগে প্রয়াত তারেক মাসুদ, মোস্তফা সরয়ার ফারুকী, তৌকির আহমেদ থেকে অনন্য মামুন, শামীম আহমেদ রনীর সাথে কাজ করেছেন। মূলধারা থেকে একটু অন্যধারা/ স্বাধীন ছবি-সব ছবিতেই স্বচ্ছন্দ পদচারণা ছিল তিশার। সেই তিশা এবার নাম ভূমিকায় অভিনয় করছেন। তার চরিত্রের ওপরই দাঁড়িয়ে আছে পুরো ছবি। নতুন কুঁড়ি, জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার, রেকর্ড ১২টি মেরিল প্রথম আলো সহ আন্তর্জাতিক পুরস্কার জেতা একজন তিশা যে একটি ছবি নিজের ঘাড়ে তুলে নিতে সক্ষম, সে বিশ্বাস থেকে হলেও আমরা ‘মায়াবতী’ দেখতে যাবো।

৫. ইয়াশ রোহান: যারা ‘স্বপ্নজাল’ চলচ্চিত্র দেখেছিলেন কিংবা সর্বশেষ ‘আমাদের সমাজ বিজ্ঞান’ টেলিফিল্ম দেখেছেন, তারা একবাক্যে স্বীকার করবেন ইয়াশ রোহান তার প্রজন্মের অভিনেতার মধ্যে অনেকের চেয়ে এগিয়ে। ভীষণ সাবলীল। অনেক যাচাই বাছাইয়ের পর দ্বিতীয় চলচ্চিত্র হিসেবে ‘মায়াবতী’ নির্বাচনের পেছনে নিশ্চয়ই কারণ রয়েছে। সেই কারণটি খুঁজতে হলেও আমরা ‘মায়াবতী’ দেখবো।

৬. ফজলুর রহমান বাবু: এ ছবিতেই আছেন দেশের সেরা অভিনেতাদের একজন ফজলুর রহমান বাবু। ছোট পর্দা ও মঞ্চে উজ্জ্বল বাবু চলচ্চিত্রে যেন একটু বেশিই আলো ছড়ান। অজ্ঞাতনামা, স্বপ্নজাল, শঙ্খনাদ, আহা, মেয়েটি এখন কোথায় যাবে ইত্যাদি ছবিগুলোতে তার অভিনয় আমরা কি কখনো ভুলতে পারবো? এই অভিনয়শিল্পীদের অভিনয় দেখার জন্য হলেও ‘মায়াবতী’ দেখতে হবে।

৭. আরো মেধাবী অভিনয়শিল্পীদের সম্মিলন: আমরা প্রায়ই বলি চলচ্চিত্র কিংবা নাটক সুপারস্টার কিংবা জনপ্রিয় তারকাদের ছাড়া অন্য অভিনয়শিল্পীদের প্রাধান্যই থাকে না। তবে অরুণ চৌধুরী তার এই ছবিতে তিশা, ইয়াশের পাশাপাশি অভিনয় করিয়েছেন রাইসুল ইসলাম আসাদ, মামুনুর রশীদ, দিলারা জামান, ওয়াহিদ মল্লিক জলি, নরেশ ভুঁইয়া, আব্দুল্লাহ রানা, অরুনা বিশ্বাস, তানভীর হোসেন প্রবাল, অবিদ রেহান, আগুন, শিশুশিল্পী মীম সহ আরো অনেককে।

৮. সংগীত: চিরকুট এর আগে আয়নাবাজি, টেলিভিশন, ডুব চলচ্চিত্রে গান করেছেন। এবং প্রতিটি গানই মানুষের মুখে মুখে ফিরেছে। এবারও চিরকুটের করা গান ‘আটকে গেছে মন’ বড় পর্দায় শোনা ও চিত্রায়ণ দেখার লোভ কি আমরা সামলাতে পারবো? তাছাড়া ‘মধু হই হই বিষ খাওয়াইলা’র মত প্রচলিত গানের নতুন চিত্রায়ণ গল্পের সাথে কতটুকু মানানসই হয়, তা জানার জন্য হলেও দেখতে হবে।

৯. লোকেশন বৈচিত্র্য: বিএফডিসি নয়, কোক স্টুডিও নয়, দেশের বাইরের পাহাড়-সমুদ্র-বরফ ঘেরা কোনো লোকশনে নয়। ‘মায়াবতী’ শুটিং হয়েছে দেশের আনাচে কানাচে। গ্রাম বাংলায়। সবুজাভ গ্রাম, নীল আকাশ, থৈ থৈ জলে ভরা পুকুর, গ্রাম্যবালা-পুরো বাংলার চিত্র খুঁজে পেতে চাইলে ‘মায়াবতী’ দেখতে হবে।

১০. কারিগরী দিক: তানভীর আনজুম এ সময়ের কিছু সফল বিজ্ঞাপনচিত্র ও নাটক/ টেলিফিল্মের নির্মাতা। ‘মায়াবতী’র চিত্রগ্রহণের পুরো দায়িত্বটি আধুনিকতার স্পর্শে সামলিয়েছেন তিনি। রঙ বিন্যাস কিংবা শব্দ প্রকৌশলরাও পরিচালককে যোগ্য সঙ্গত দিয়েছেন। এসব দেখতে হলেও ‘মায়াবতী’ দেখতে হবে।


মন্তব্য করুন