পরবাসিনী – অন্যরকম কিছু হতে যাচ্ছে!
বাংলাদেশে যখন লালটিপ সিনেমাটা বেড়ল, সহব্লগার দুর্যোধন সিনেমাটা দেখে এসে এক রিভিউ লিখল। সেই রিভিউ এত বিখ্যাত হল যে, মানুষতো বলতেই লাগল, দুর্যোধনের লালটিপ। লালটিপ যে স্বপন আহমেদ বানিয়েছেন এ কথা প্রায় সকলে ভুলে গেল। সিনেমাটা অতটা সুন্দর হয়নি রিভিউটা যতটা সুন্দর হয়েছিল।
উপমহাদেশীয় ফিল্মমেকারদের মধ্যে আশুতোশ গৌরিকরের নাম খুব শোনা যায়। তিনি লাগান, স্বদেশ, যোধা আকবরের মতো বড় ক্যানভাসের সিনেমা বানিয়ে দর্শককে অবাক করে দিতে ভালোবাসেন। কিন্তু এই আশুতোশের প্রথম দুটি ছবি পেহলা নেশা এবং বাজি- বক্স অফিসে প্রচুর হিট হলেও ছবি দুটো খুব অনুন্নত এবং ইংরেজি কাল্ট ফিল্ম থেকে কপি পেষ্ট।
সেখানে কোন মেধার পরিচয় নেই, আছে শুধু বলিউডে একটু জায়গা করে নেবার জন্য এক তরুন পরিচালকের আপ্রান চেষ্টা।পর পর বিখ্যাত ওই তিনটি সিনেমা বানাবার পর, আশু আবার কিছু সিনেমা বানালেন, যে দুটো দেখার একদমই অযোগ্য।
এরকম হয়,আমি দেখেছি, খুব ভালো ভালো ডিরেক্টর এমন এমন সিনেমা বানান এরা যে ভালো সেটা বিশ্বাস করতেই ইচ্ছে হয়না। একটা মানুষ যদি জানে, তবে তার জানার একটা প্রভাব সব কাজেই থাকে, কিন্তু কিছু কিছু সিনেমা দেখে এর পেছনে কোন জ্ঞান আছে বলে আমার মনে হয় না। অথচ ঐ পরিচালক কিন্তু সত্যি জ্ঞানী।
লালটিপের পরিচালক স্বপন আহমেদের নতুন সিনেমা আসছে পরবাসিনী। বাংলাদেশের প্রথম সায়েন্স ফিকশান আর তাছাড়া আমার আগ্রহের অন্যতম কারন ছিল মেহজাবিন চৌধুরি। বর্তমান সময়ের নায়ক ইমনের খুব ভক্ত আমি। মেহজাবিন এই সিনেমা থেকে সড়ে দাড়ালেন,আমি কিছুটা আহত হলাম।
সিনেমাটার একটা টিজার মুক্তি পেয়েছে। টিজারটি দেখে আমার খুব ভালো লাগল। বাংলাদেশী মিডিয়া সমন্ধে আমার ধারনা আছে। যে সিস্টেমের মধ্যে দিয়ে আমরা প্রতিনিয়ত দিন কাটাই, ঢাকাই চলচ্চিত্রের যে অবস্থা, তাতে এর থেকে ভালো কিছু আশা করাটা অন্যায়। টিজারটাতে যে একটা আবহের সৃষ্টি হয়েছে, এটা যদি গোটা সিনেমাতে ধরে রাখা সম্ভব হয় তাহলে এই ছবি মানুষের খুব ভালোলাগবে। দুর্যোধনের লালটিপ স্বপন আহমেদের লালটিপ হয়ে যাবে। শুধু ওই আবহাওয়াটা।
বাংলা চলচ্চিত্রের বিভিন্ন কমিউনিটিতে ঘুরে এবং বাংলা চলচ্চিত্র বিষয়ক দু একটা আড্ডায় অংশগ্রহন করে বুঝতে পারলাম, এই ছোট টিজারটাই মানুষের মনে বেশ আশার সঞ্চার করেছে। গ্রাফিক্সের কাজটা বেশি একটা ভালো হয়নি কিন্তু একটা অন্যরকম কিছু হতে যাচ্ছে।
এই টিজার দেখে আমিও আশাবাদী হয়েছে, আমার ভালো লাগছে এরকম সিনেমা বাংলায় হচ্ছে তাই দেখে। তাছাড়া আশিকি দেখে মানুষের যে মানসিক দন্দ্ব সৃষ্টি হয়েছে, সেটা যে পরবাসিনি দেখে হবেনা তা বুঝতে পারছি। পাশাপাশি রয়েছে, সেই ভরাট কন্ঠ, যেই কন্ঠ একটা অসাধারন রহস্যের কথা বলে প্রত্যেকবার, ফেলুদাখ্যাত সব্যসাচীর ভয়েজওভার এই টিজারের প্রধান আকর্ষন। স্বপন আহমেদের রুচি আমাকে তার কাজ সমন্ধে আগ্রহী করে তুলেছে।
পুনশ্চঃ টিজারটা লিক হয়েছে। এই লিঙ্ক রেফারেন্স দিয়ে লেখা উচিত নয়। কাজটা সৎ মনে এবং সিনেমার স্বার্থেই করলাম। ভালো লাগা আটকে রাখা যায় না।