Select Page

বাংলা চলচ্চিত্রের সালতামামি ২০১৫

বাংলা চলচ্চিত্রের সালতামামি ২০১৫


saltamamiস্নিগ্ধ রহমান, বিএমডিবি: ২০১৪ যদি বাংলাদেশী চলচ্চিত্রের জন্য আশার বছর থাকে, তবে ২০১৫-কে বলা যায় হতাশার বছর। এই বছরে বিভিন্ন স্বাদের নানা ছবি মুক্তি পাওয়া সত্ত্বেও, বেশিরভাগ ছবিই দর্শক টানতে পারেনি। ফলস্বরূপ ব্যবসায়িক মানদণ্ডে ব্যর্থ হয়েছে। সুসংবাদের বদলে বরং সারা বছর নানা নেতিবাচক কারণে শিরোনামে এসেছে প্রিয় ঢালিউড।

২০১৫ সালে যৌথ প্রযোজনাসহ মোট ৬৫টি বাংলা চলচ্চিত্র মুক্তি পেয়েছে। ২০১৪ সালে এই সংখ্যা ছিল ৭৬, ২০১৩ সালে ৫৩ এবং ২০১২ সালে ৫১, ২০১১ সালে ৪৮। দেখা যাচ্ছে, প্রতি বছর সংখ্যাটি বাড়লেও, এ বছর কমে এসেছে। জানুয়ারীর প্রথম সপ্তাহে মুক্তিপ্রাপ্ত মার্ডার ২গেইম এ বছরের প্রথম দুই ছবি। ডিসেম্বরের চতুর্থ সপ্তাহে নবাগত দুই পরিচালকের লালচর স্বর্গ থেকে নরক দিয়ে শেষ হয় ২০১৫ সাল। এ বছর বেশ কয়েকটি হিন্দি ও বাংলা ভাষার ভারতীয় ছবি মুক্তি পায়। উপমহাদেশীয় চলচ্চিত্র প্রদর্শন বন্ধের দাবিতে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র ঐক্যজোট  মানববন্ধন করে, কাফনের কাপড় পরে রাস্তায় নামে। সুখবর হল মুক্তিপ্রাপ্ত কোন ভারতীয় ছবিই ভালো ব্যবসা করতে পারেনি। তবে এটাও উল্লেখ্য যে, মুক্তিপ্রাপ্ত সব কয়টি ছবিই বেশ পুরনো। তাই এখনি তৃপ্তির ঢেকুর তোলার সুযোগ নেই।

সূচিপত্র
১. ২০১৫ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ছবি
২. হিসেব নিকেশ
৩. নতুনের কেতন
৪. চলচ্চিত্রের আদম সুরত
৫. মুক্তির কথা
৬. ‘যৌথ’ প্রযোজনা
৭. না’ প্লাজা
৮. ডিসগাস্টিং কাউচ
৯. পোস্টার সমাচার
১০. সরবে ফেসবুকে

২০১৫ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ছবি

মার্ডার ২গেইম, পুত্র এখন পয়সাওয়ালা, রোমিও বনাম জুলিয়েট, কমিশনার, বিগ ব্রাদার, জিরো ডিগ্রি, ভালোবাসা সীমাহীন, কার্তুজ, এইতো প্রেম, হৃদয় দোলানো প্রেম, পাগলা দিওয়ানা, হরিযুপিয়া, গুণ্ডা, ছুঁয়ে দিলে মন, চিনিবিবি, ওয়ার্নিং, বোঝেনা সে বোঝে না, আয়না সুন্দরী, অ্যাকশন জেসমিন, অচেনা হৃদয়, ঘাসফুল, সুতপার ঠিকানা, দুই বেয়াইয়ের কীর্তি, ইউটার্ন, ভালোবাসার চ্যালেঞ্জ, মনের অজান্তে, দুই পৃথিবী, পদ্ম পাতার জল, লাভ ম্যারেজ, অগ্নি টুঅমি ও আইসক্রিমওয়ালা, নদীজন, প্রার্থনা, ভালো আমাকে বাসতেই হবে, ব্ল্যাকমানি, আরো ভালোবাসবো তোমায়, ব্ল্যাকমেইল, লাভার নাম্বার ওয়ান, দ্য স্টোরি অব সামারা, ভালোবাসতে মন লাগে, মা বাবা সন্তান, জালালের গল্প, গাড়িওয়ালারাজাবাবু, আশিকী, সুরিনগর, ছেলেটি আবোল তাবোল মেয়েটি পাগল পাগল, রান আউট, নগর মাস্তান, আজব প্রেম, ভালোবাসার গল্প, অশান্ত মেয়ে, চুপি চুপি প্রেম, অন্তরঙ্গ, পাকড়াও, আই লাভ ইউ প্রিয়া, মহুয়া সুন্দরী, গ্যাংস্টার রিটার্নস, ব্ল্যাক, এপার ওপার, শোভনের স্বাধীনতা, অনিল বাগচীর একদিন, নয় ছয়, বাপজানের বায়েস্কোপ, লালচর, স্বর্গ থেকে নরক

হিসেব-নিকেশ

দেশে যেহেতু এখনো ছবিগুলোর আয় জানার কোন নিয়মানুগ উপায় নেই, তাই টেবিল কালেকশন, হল সংখ্যা, বুকিং এজেন্টদের কথার ভিত্তিতে হিট-ফ্লপের বিচার করতে হয়। সে হিসেবে এ বছর মাত্র পাঁচটি ছবি ব্যবসাসফল হয়েছে, দশটি ছবি কোনমতে আয় ব্যয়ের সমতা রক্ষা করতে পেরেছে। বাণিজ্যিক ছবিতে নকল গল্প ও বিকল্প ধারার ছবিতে ভালো গল্পের অভাব দর্শক খরার অন্যতম কারণ বলে সকলে মনে করছেন।

এ বছরের উল্লেখযোগ্য ছবিগুলো হল – জিরো ডিগ্রি, এই তো প্রেম, ছুঁয়ে দিলে মন, অচেনা হৃদয়, ঘাসফুল, সুতপার ঠিকানা, ইউটার্ন, পদ্মপাতার জল, লাভ ম্যারেজ, অগ্নি-২, আরো ভালবাসবো তোমায়, জালালের গল্প, রাজাবাবু, আশিকী, ছেলেটি আবোল তাবোল মেয়েটি পাগল পাগল, রানআউট, চুপি চুপি প্রেম, অন্তরঙ্গ, গাড়িওয়ালা, মহুয়া সুন্দরী, গ্যাংস্টার রিটার্নস, বাপজানের বায়োস্কোপ

গত বছরের মত এ বছরেও সর্বাধিক চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছে মিশা সওদাগর, সর্বাধিক চলচ্চিত্রের নায়ক শাকিব খান তবে সর্বাধিক চলচ্চিত্রের নায়িকা মাহিয়া মাহি নন। তার স্থান দখল করেছেন নবাগত পরী মনি

শাকিব খানের এ বছর পাঁচটি ছবি মুক্তি পেয়েছে (এই তো প্রেম, দুই পৃথিবী, লাভ ম্যারেজ, আরও ভালোবাসবো তোমায় ও রাজা বাবু)। বছরের ব্যবসাসফল ছবিগুলোও তারই। এবারও শাকিবের ঠিক পেছনেই আছেন গত বছরে সাত ছবির নায়ক ইমন (পুত্র এখন পয়সাওয়ালা, অচেনা হৃদয়, পদ্মপাতার জল ও অন্তরঙ্গ)। তালিকায় যৌথভাবে দ্বিতীয় স্থানে থাকা নামটা একটু বিস্ময় জাগাবে- আনিসুর রহমান মিলন (ভালোবাসা সীমাহীন, ব্ল্যাক মেইল, ভালোবাসার গল্প ও লালচর)।

তার পরে তিনটি ছবি নিয়ে আছেন আছেন গত বছরের ছয় ছবির নায়ক বাপ্পী চৌধুরী (গুণ্ডা-দ্য টেরোরিস্ট, লাভার নাম্বার ওয়ান ও আজব প্রেম)। তার কোন ছবিই এবার ব্যবসা করতে পারেনি। বছরের অন্যতম ফ্লপ ছবি “আজব প্রেম” তেলেগু আরিয়া-২ থেকে নকল করে বানানো, যে গল্প নিয়ে ইতোমধ্যে আরও একটি ছবি হয়ে গিয়েছে (আমি শুধু চেয়েছি তোমায়)। তবে জন্মদিনে একই সাথে তিনটি ছবি সাইন করে ফিরে আসার ইঙ্গিত দিয়েছেন বাপ্পীসাইমনের তিনটি ছবি (অ্যাকশন জেসমিন, ব্ল্যাকমানি ও চুপি চুপি প্রেম) মুক্তি পেলেও কোনটিই বক্স অফিসে সুবিধা করতে পারেনি। বছরের শেষ মাসে নায়ক ফেরদৌসের তিনটি ছবি মুক্তি পায়। (নয় ছয়, শোভনের স্বাধীনতা ও স্বর্গ থেকে নরক)। এছাড়া ফেরদৌস একটি মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক চলচ্চিত্র প্রযোজনার ঘোষণা দিয়েছেন। হঠাৎ হৃদরোগে আক্রান্ত না হলে রিয়াজকেও এ বছর রূপালী পর্দায় পাওয়া যেত। মেহের আফরোজ শাওনের পরিচালনায় কৃষ্ণপক্ষ ছবিতে রিয়াজের বিপরীতে অভিনয় করেছেন মাহিয়া মাহি। সদ্য বিবাহিত আরেফিন শুভ’র এ বছর দুটি ছবি (ওয়ার্নিং ও ছুঁয়ে দিলে মন) মুক্তি পায়। এর মাঝে ছুঁয়ে দিলে মনকে ২০১৫ সালের মাইলফলক ছবি হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে।

Mahi-Aziz-HOME

বছরজুড়ে পর্দার বাইরের ঘটনার জন্যই বেশি আলোচনায় ছিলেন মাহিয়া মাহি

নায়িকাদের মাঝে এবছর সবচে বেশি ছয়টি (ভালোবাসা সীমাহীন, পাগলা দিওয়ানা, আরো ভালোবাসবো তোমায়, লাভার নাম্বার ওয়ান, নগর মাস্তান ও মহুয়া সুন্দরী) ছবি মুক্তি পেয়েছে পরীমনির। ছবি মুক্তির সংখ্যায় তিনি ছাড়িয়ে গেছেন শাকিব খানকেও। মিথ্যা সংবাদ প্রকাশের অভিযোগে একটি ওয়েব পোর্টালের বিরুদ্ধে ১০ কোটি টাকার মানহানির মামলা করেন তিনি। যদিও এখন দু পক্ষের মাঝে আপস হয়ে গিয়েছে। চারটি ছবি (রোমিও বনাম জুলিয়েট, বিগ ব্রাদার, ওয়ার্নিং এবং অগ্নি-২) মুক্তি পেলেও, বছরজুড়ে পর্দার বাইরের ঘটনার জন্যই বেশি আলোচনায় ছিলেন মাহিয়া মাহি। ভিডিও স্ক্যান্ডাল, চলচ্চিত্র ছাড়ার এবং মাস পেরোবার আগেই ফিরে আসার ঘোষণা, প্রেম-বিয়ের গুঞ্জন ছাড়াও পুরো বছর জুড়ে একবার জাজ মাল্টিমিডিয়ার সাথে সম্পর্কচ্ছেদ, ফিরে আসা, না ফেরার ঘোষণা ও সবশেষে আবারও নতুন ছবিতে চুক্তিবদ্ধ হওয়া নিয়ে প্রহসন সারা বছর ভরপুর বিনোদনের যোগান দিয়েছে। মাহির যৌথ প্রযোজনার দুই ছবি ভালো ও অন্য দুই ছবি অ্যাভারেজ ব্যবসা করেছে।

তিনটি ছবি মুক্তি পেয়েছে অপু বিশ্বাসের (দুই পৃথিবী, লাভ ম্যারেজ ও রাজা বাবু)। অনুমিতভাবেই অপু বিশ্বাসের সবকয়টি ছবির নায়ক ছিলেন শাকিব খান এবং তিনটি ছবিই ভালো ব্যবসা করেছে। এই তো প্রেম সিনেমার গানটি বাদ দিলে এ বছর তিনটি ছবিতে (কার্তুজ, শোভনের স্বাধীনতা ও স্বর্গ থেকে নরক) দেখা যায় চিত্রনায়িকা নিপুণকে। নবাগত মৌসুমী হামিদেরও তিনটি ছবি (ব্ল্যাকমানি, ব্ল্যাক মেইল ও জালালের গল্প) মুক্তি পেয়েছে। প্রথম দুটোর জন্য সমালোচিত হলেও, জালালের গল্পে মৌসুমীর অভিনয় সকলের প্রশংসা কুড়ায়। এ বছরই অভিষেক হয় নুসরাত ফারিয়ার। তার আশিকী তুলনামূলকভাবে কম ব্যবসা করলেও, ফারিয়ার পারফর্ম্যান্স নজর কাড়ে। এছাড়া বলিউডের এমরান হাশমির সাথে একটি ছবিতে তার চুক্তিবদ্ধ হওয়ার সংবাদের মাধ্যমেও আলোচনায় আসেন নুসরাত ফারিয়া। শাবনূরের কোন ছবি মুক্তি না পেলেও, পপি (দুই বেয়াইয়ের কীর্তি) ও মৌসুমীর (আশিকী) একটি করে ছবি মুক্তি পেয়েছে। এ বছর অনন্ত-বর্ষার কোন ছবি মুক্তি পায়নি।

পরিচালকদের মাঝে সাফি উদ্দিন সাফির সর্বাধিক তিনটি চলচ্চিত্র (ব্ল্যাকমানি, বিগ ব্রাদার ও ওয়ার্নিং) মুক্তি পেয়েছে। দুটি করে ছবি মুক্তি পেয়েছে অনন্য মামুন, ওয়াজেদ আলী সুমন, ইফতেখার চৌধুরী ও তন্ময় তানসেনের

নতুনের কেতন

এ বছরের মুক্তিপ্রাপ্ত ৬৫টি চলচ্চিত্রের মধ্যে নবাগত পরিচালক ছিলেন ত্রিশজন। যার মাঝে অনিমেষ আইচ, বাপ্পারাজ, সোহেল আরমান, শিহাব শাহীন, এস আই খান, আলভী আহমেদ, তন্ময় তানসেন, রিকিয়া মাসুদো, আকরাম খান, প্রসূন রহমান, শাহরিয়ার নাজিম জয়, সাইফ চন্দন, শামীম আরা নীপা, নাদের চৌধুরী, রাফায়েল আহসান ও রিয়াজুল রিজু উল্লেখযোগ্য। ২০১৫ সালে ৩১টি নতুন মুখ যোগ দিয়েছে নায়ক/নায়িকা হিসেবে। এর মাঝে পরী মনি, অমৃতা খান, মৌসুমী নাগ, নুসরাত ফারিয়া, আলিশা প্রধান, মৌসুমী হামিদ, সজল, সুমন, অপূর্ব, মোহনা মীম ও ব্যান্ড তারকা বিপ্লবের কথা আলাদাভাবে বলা যেতে পারে।

চলচ্চিত্রের আদম সুরত

khbpfhti

আদম পাচারের অভিযোগে দক্ষিন আফ্রিকার বিমানবন্দরে চলচ্চিত্র অভিনেতাদের আটকে থাকা দেশিয় ইন্ডাস্ট্রির গায়ে কলঙ্ক লেপন করে

বছরের প্রথমে আদম পাচারের কলঙ্ক জোটে ইন্ডাস্ট্রীর গায়ে। জানুয়ারির ৬ তারিখে মিশন আফ্রিকা চলচ্চিত্রের শুটিংয়ের জন্য দক্ষিণ আফ্রিকার গিয়েছিলেন চিত্রনায়ক রুবেল, ইমন, টিভি অভিনেতা সিদ্দিকুর রহমান ও চিত্রনায়িকা অমৃতা খানসহ ২৯ জনের ইউনিট। জোহানেসবার্গ বিমানবন্দরের ১৮ ঘণ্টা আটকে থাকতে হয় তাদের। জানা যায় তাদের সাথের অন্তত ১৯ জন চলচ্চিত্র কর্মী নন। ধারণা করা হয়, শুটিংয়ের নামে তাদের দক্ষিণ আফ্রিকায় নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। এসময় পরিচালক ও প্রযোজকের সাথে বিভিন্ন ভাবে যোগাযোগের চেষ্টা করে ব্যর্থ হন তারা। পরে তারা নিজ খরচে দেশে ফিরে আসেন। অভিনেত্রী অমৃতা আদম পাচার কি সেটাই জানতেন না বলে জানান।

মুক্তির কথা

এই বছর মুক্তি পাওয়া মুক্তিযুদ্ধের চলচ্চিত্রগুলোর মধ্যে আছে সোহেল আরমানের এই তো প্রেম, গোলাম মোস্তফা শিমুল পরিচালিত হরিযুপীয়া, মোরশেদুল ইসলামের অনিল বাগচীর একদিন, মানিক মানবিক পরিচালিত শোভনের স্বাধীনতা ও রিয়াজুল রিজু পরিচালিত বাপজানের বায়োস্কাপ।

“যৌথ” প্রযোজনা

গত বছরের ব্লকবাস্টার আমি শুধু চেয়েছি তোমায় এর ব্যাপক সাফল্যর কারণে ২০১৫ সালে যৌথ প্রযোজনায় চারটি ছবি মুক্তি পায়। এগুলো হল-রোমিও বনাম জুলিয়েট, অগ্নি-টু, আশিকী ও ব্ল্যাক সিনেমা মুক্তি পায়।

কিন্তু কোন চলচ্চিত্রই বক্স অফিসে প্রত্যাশানুযায়ী ঝড় তুলতে পারেনি। ঝাঁ চকচকে ক্যামেরা ও লোকেশনের ছবিগুলোর শুধুমাত্র ইউটিউব হিট বাড়িয়েছে, প্রেক্ষাগৃহে নয়। বেশ কয়েকটি চলচ্চিত্রে দেশীয় শিল্পী-কুশলীরা শুধুমাত্র নামসর্বস্ব বা গানসর্বস্ব হিসেবে ছিলেন। অনেকে তাই যৌথ প্রযোজনাকে যৌথ প্রতারণা বলে অভিহিত করেছেন। সারা বছর যৌথ প্রযোজনার বিরুদ্ধে বক্তব্য দিয়ে আসা চিত্রনায়ক শাকিব খান, বছরের শেষদিকে নিজেই একটি যৌথ প্রযোজনার চলচ্চিত্রের অভিনয় করবেন বলে জানা যায়।

”না” প্লাজা

কয়েকবার মুক্তির তারিখ ঘোষণা ও প্রচরাণার পরেও এবছরেরও নজরুল ইসলাম খানের আলোচিত ছবি রানা প্লাজা মুক্তি পায়নি। ইতোমধ্যেই সেন্সর বোর্ডের নির্দেশে ছবিটির সংবেদনশীল অংশগুলো বাদ দেওয়া হয়েছে।

ডিজগাস্টিং কাউচ

বছরজুড়েই আলোচনায় ছিল কাস্টিং কাউচ। চার অভিনেত্রী নীড়, প্রিয়ন্তী, সাদিয়া আফরিনপিয়া বিপাশা আপত্তিকর পোশাক বা আপত্তিকর প্রস্তাবের অভিযোগ আনেন প্রযোজক ও পরিচালকের বিরুদ্ধে, যা আরেকবার চলচ্চিত্র সংশ্লিষ্টদের আরেকবার লজ্জায় ডোবায়। পরবর্তীতে পরিচালক বদিউল আলম খোকন ও চিত্রনায়ক শাকিব খান ও কিছু নব্য পরিচালকের অসদাচরণ ও দুরভিসন্ধি নিয়ে বিরক্তি প্রকাশ করেন।

পোস্টার সমাচার

বছরজুড়ে আলোচনার জন্ম দিয়েছে বেশ কয়েকটি ছবির পোস্টার। অগ্নি-২ এর পোস্টারে ছবিটিকে দুই বাংলার সবচে ব্যয়বহুল ছবি হিসেবে দাবি করা হয়। রাজা বাবু সিনেমার মাথা সর্বস্ব পোস্টার যেমন হাস্যরসের যোগান দিয়েছে তেমনি ছেলেটি আবোল তাবোল মেয়েটা পাগল পাগল সিনেমার “রগরগে” পোস্টার জন্ম দিয়েছে সমালোচনার। মূল অভিনেত্রীর বদলে আইটেম গার্লকে পোস্টারে রাখা ও “১৮+” জুড়ে দিয়ে আলোচিত হয় তন্ময় তানসেনের রানআউট।

এত পোস্টারের মাঝে বছরের শেষে অন্য এক পোস্টার এসে আশার জন্ম দেয়। আহসিফ খানের শর্টফিল্ম পোস্টার মুম্বাইয়ে শর্ট ফিল্ম কন্টেস্টে ৪০৭টি ছবির মাঝে বিচারকদের রায় এবং দর্শক ভোটে বিজয়ী হয়।

সরবে ফেসবুকে

পর্দায় না থেকলেও বছর জুড়ে ফেসবুকের মাধ্যমে নিজের উপস্থিতি ও নতুন ছবির আপডেট জানান দিয়েছেন মোস্তফা সরয়ার ফারুকী। ফেসবুকের মাধ্যমে চলচ্চিত্র ছাড়ার ঘোষণা দেন মাহি। পরে অবশ্য সে সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসেন। ভারতীয় সংবাদ মাধ্যমে দেওয়া বক্তব্যকে কেন্দ্র করে অনলাইনে চলচ্চিত্র সংশ্লিষ্টদের তোপের মুখে পড়েন  নুসরাত ফারিয়াপরীমনি ও একটি ওয়েবপোর্টালের বিভাগীয় সম্পাদকের পাল্টাপাল্টি স্ট্যাটাসও আলোচনার জন্ম দেয়। অপর এক ওয়েব পোর্টালকে একটি দীর্ঘ সাক্ষাৎকার দিয়ে তীব্র সমালোচনার জন্ম দেন চিত্রনাট্যকার আব্দুল্লাহ জহির বাবু। পরবর্তীতে এক স্ট্যাটাসে সাক্ষাৎকার দেওয়া বক্তব্য থেকে সরে আসেন বাবু। এক ফেসবুক স্ট্যাটাসের মাধ্যমে পরিচালনা থেকে সড়ে দাঁড়ানোর ঘোষণা দেন তন্ময় তানসেন। বছরজুড়ে আলোচনা-সমালোচনার কেন্দ্রে ছিল নায়লা নাইমের আইটেম সং আর জয়া আহসানের রাজকাহিনীর ভাইরাল হয়ে ওঠা এক ভিডিও ক্লিপ।

এই বছরে পেয়েছি জিরো ডিগ্রির মত সাইকোলজিক্যাল থ্রিলার আবার ইউ টার্নের মত গডফাদারের দেশীয় অ্যাডাপ্টেশন অথবা ঘাসফুলের মত এক্সপ্রেশনিস্ট ফিল্ম। হারিয়েছি চাষী নজরুল ইসলামকে। অর্ধশত ফেস্টিভ্যাল ঘুড়ে দেশে এসেছে গাড়িওয়ালা আবার দর্শকনন্দিত হয়ে অস্কারে যাত্রা করেছে জালালের গল্প। ছুঁয়ে দিলে মনের মত ছবি জানান দিচ্ছে দর্শক উন্মুখ হয়ে আছে ভালো ছবির আশায়।

অনেক হতাশার মাঝেও আশার আলো দেখাচ্ছে আগামী বছর। মুক্তির মিছিলে আছে মেন্টাল, মুসাফির, সুইটহার্ট, সম্রাট, অস্তিত্ব, পূর্ণদৈর্ঘ্য প্রেম কাহিনি-২, ঢাকা অ্যাটাক, লিডার, রাজনীতি, আয়নাবাজি, পরবাসিনী, পাঠশালা, আইসক্রীম, সত্তা – ভয়ঙ্কর সুন্দরের মত আশা জাগানিয়া সব নাম। প্রতি বছরের মত এবারও চলচ্চিত্রপ্রেমীরা স্বপ্ন দেখছে, এবার নিশ্চয়ই হবে!


১ Comment

Leave a reply