Select Page

অমল বোস পরিচালিত সিনেমার নাম ‘কেন এমন হয়’

অমল বোস পরিচালিত সিনেমার নাম ‘কেন এমন হয়’

শুধু অভিনেতা হিসেবেই অমল বোসকে চিনে কয়েক প্রজন্ম। বিশেষ করে শেষ দিকে ‘ইত্যাদি’র নানা চরিত্রে সমাধিক পরিচিতি ছিলেন। এক সময় তিনি মঞ্চে নাটক করেছেন, ছিলেন নির্দেশকও। তবে তার সিনেমার নির্মাণের কথা বেশির ভাগ দর্শকেরই অজানা।

সিনেমায় অভিনয় শুরুর এক দশকের মাথায় ১৯৭৫ সালে ‘কেন এমন হয়’ নামে একটি ছবি পরিচালনা করেন অমল বোস। অভিনয়ের ছিলেন ববিতা, উজ্জ্বল, গোলাম মুস্তফা ও রওশন জামিলের মতো নামি সব মুখ।

অমল বোসের জন্ম ১৯৪৩ সালের ১১ অক্টোবর ফরিদপুরের বোয়ালমারীতে। ২০১২ সালের ২৩ জানুয়ারি ঢাকায় মারা যান তিনি।

শক্তিমান অভিনতা হিসেবে তিনি ছিলেন খুবই জনপ্রিয়। কৌতুক অভিনেতা, ভিলেন বা ভালো মানুষ; এ সব চরিত্রে দেখা গেছে অমল বোসকে। নিয়মিত অভিনয় করেছেন মঞ্চ, বেতার, টেলিভিশন ও বিজ্ঞাপনচিত্রে।

তার জীবন শুরু হয় মঞ্চ নাটকে অভিনয়ের মাধ্যমে। ১৯৬৩ সাল থেকে ক্লাব-থিয়েটারের মঞ্চ নাটকে অভিনয় শুরু করেন। মঞ্চনাটকে অভিনয়ের পাশাপাশি নাটক পরিচালনাও করতেন। তার নির্দেশনায় নুরুল মোমেনের ‘আলো ছায়া’ নাটক দারুণ জনপ্রিয়তা পায়। অবসর, সপ্তরূপা, শৈবাল ও রংধনু নাট্যগোষ্ঠীর হয়ে অসংখ্য নাটকে অভিনয় করেছেন।

নাতি-নানা শওকত আলী তালুকদার নিপু ও অমল বোস

ইবনে মিজান পরিচালিত ‘একালের রূপকথা’ (১৯৬৫) ছবিতে অভিনয়ের মাধ্যমে চলচ্চিত্রে আত্মপ্রকাশ করেন অমল বোস। এরপর কয়েকশ সিনেমার মাধ্যমে পরিচিত মুখে পরিণত হন।

উল্লেখযোগ্য হলো- রাজা সন্ন্যাসী, নীল আকাশের নীচে, পাতালপুরীর রাজকন্যা, আলোর মিছিল, মহুয়া, বাদী থেকে বেগম, এখনই সময়, রাজকন্যা, মহানায়ক, আমি কার, ফুলশয্যা, স্বামী-স্ত্রী, গুনাই বিবি, চন্দন দ্বীপের রাজকন্যা, সোনালী আকাশ, অবিচার, অস্বীকার, রাজলক্ষ্মী ও শ্রীকান্ত, দুই জীবন, বেদের মেয়ে জোসনা, জলপরী, রঙ্গীন নবাব সিরাজউদ্দৌলা, সাক্ষী, স্বার্থপর, হিংসা, শেষ উপহার, অন্ধ প্রেম, বাংলার বধূ, সুখের মিলন, অবুঝ সন্তান, প্রেম প্রীতি, স্বপ্নের পৃথিবী, স্বজন, অজান্তে, প্রিয় তুমি, দমকা, অনন্ত ভালোবাসা, গরীব কেন কাঁদে, জীবন সঙ্গী, আজকের প্রতিবাদ, বাংলার মা, আমি তোমারি, অচল পয়সা, অপরাধ জগতের রাজা, সন্তান যখন শত্রু, স্বপ্নের ঠিকানা, হঠাৎ বৃষ্টি, লঙ্কাকান্ড, রক্তের অধিকার, কে অপরাধী, মুক্তি চাই, অধিকার চাই, বাপের টাকা, আমার দেশ আমার প্রেম, মৃত্যুদাতা, মন মানে না, বাবা কেন চাকর, স্বামী কেন আসামী, মিলন হবে কত দিনে, সাগরিকা, মায়ের স্বপ্ন, জল্লাদ, রাঙা বউ, মধু পূর্ণিমা, এরই নাম দোস্তী, সুন্দরী বধূ, হাছনরাজা, বড়লোকের জামাই, এক টাকার বউ, তোমাকেই খুঁজছি, নীতিবান অফিসার, অন্ধকার জীবন, আখেরী রাস্তা, আক্কেল আলীর নির্বাচন, প্রিয়া আমার প্রিয়া, এরই নাম ভালোবাসা, কাল সকালে, মন মানে না, শ্বশুর বাড়ী জিন্দাবাদ, রং নাম্বার, কুসুম কুসুম প্রেম, হৃদয়ের বাঁশী, দুঃখিনী জোহরা, রাক্ষুসী, বস্তির মেয়ে, কঠিন শাস্তি, অবুঝ বউ, আমি সেই মেয়ে, কাজের মেয়ে, বিয়ের ফুল, কোটি টাকার কাবিন, তোমার জন্য পাগল ও গ্রামগঞ্জের প্রীতি। এর মধ্যে চাষী নজরুল ইসলাম নির্মিত ‘আজকের প্রতিবাদ’ ছবিতে শ্রেষ্ঠ পার্শ্ব অভিনেতা হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করেন।

সৈয়দ মহিদুল ইসলাম ও অমল বোস

বাংলাদেশ টেলিভিশনের দুর্গাপূজা উপলক্ষ্যে প্রতি বছর বিশেষ নাটিকায় ‘অসুর’ চরিত্রে অভিনয় করে ‘জাতীয় মহিষাসুর’ হিসেবে ব্যাপক পরিচিতি লাভ করেন অমর বোস। দীর্ঘ ৩৮ বছর যাবত ওই চরিত্রে অভিনয় করে গেছেন তিনি। এছাড়া হানিফ সংকেতের ‌‘ইত্যাদি’র ‘নানা-নাতি’ পর্বে ‘নানা’ ভীষণ জনপ্রিয়তা পান।

ব্যক্তিজীবনে অভিনেতা স্বাতী বোসের সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। তাদের একমাত্র মেয়ে মন্দিরা বোস। অভিনয়ের পাশাপাশি অমল বোস জুট মিলস্‌ কর্পোরেশনের সিনিয়র অফিসার হিসেবে কর্মরত ছিলেন। তিনি ১৯৯৫ সালে চাকরিজীবন থেকে অবসর গ্রহণ করেন।

তথ্য ও ছবি ঋণ: আজাদ আবুল কাশেম


মন্তব্য করুন