Select Page

এটা না সিনেমা, না নাটক, না আর কিছু

এটা না সিনেমা, না নাটক, না আর কিছু

কোলকাতার বাংলা ছবি “অটোগ্রাফ”এ দেখা যায় উত্তম কুমার অভিনীত “নায়ক” সিনেমা অবলম্বনে নতুন একটা স্ক্রীপ্ট লিখেছে ইন্দ্রনীল। যদিও সিনেমা বানানোর কোন অভিজ্ঞতা তার নেই তারপরও সে নিজে এটা নিয়ে সিনেমা বানাতে চায়। কিন্তু কোন প্রডিউসার না পেয়ে হতাশ। ঘটনাচক্রে প্রসেনজিৎ তার প্রডিউসার হতে রাজি হয় এবং ইন্দ্রনীল সিনেমাটি বানাতে সক্ষম হয়। যাই হোক, আমি এই সিনেমাটা অসংখ্য বার দেখেছি । এভাবে বার বার দেখে আমার মনে হয়েছে আমিও চাইলে সিনেমা বানাতে পারব। একইভাবে “ভুতের ভবিষ্যৎ” সিনেমা বা হুমায়ুন আহমেদ কিংবা অঞ্জন দত্তের সিনেমা বানানোর গল্প শুনেও এটা মনে হয়েছে। মনে হয়েছে সিনেমা বানানোর জন্য সেন্সিবল একটা মন থাকাই যথেষ্ট।

কিন্তু, না। এটা আসলে এতো সহজ কোন বিষয় নয় যে, কালকে ঘুম থেকে উঠেই আমি লাইট, ক্যামেরা, অ্যাকশন বললেই একটা সিনেমা হয়ে যাবে। দশ বিশটা সিনেমা দেখা, কিছু সিনেমা নিয়ে আলোচনা করা, দু চারবার ফেলিনি, বার্গম্যান, সত্যজিৎ, মাখমালবাফ বলতে পারা আর একটা দৃশ্যের পর আরেকটা দৃশ্য জোড়া দিলেই সিনেমা হয় না। এটা সম্পূর্ণ ভিন্ন একটা দক্ষতা ও যোগ্যতা। এর জন্য পড়ালেখা লাগে, জানাশোনা লাগে, চর্চা লাগে, অভিজ্ঞতা লাগে, ট্যাকনিক্যাল নো হাউ জানা লাগে । সর্বোপরি সিনেমা কি সেটা জানা লাগে।

রিকশা চালাতেও এরকম জানাশোনা লাগে, চর্চা লাগে, ট্রাফিক আইন জানা লাগে, অভিজ্ঞতা লাগে।

কবিতা লিখা ও কবি হয়ে ওঠাও তেমনি ভিন্ন একটা যোগ্যতা ও দক্ষতা। জীবনানন্দ তাইতো বলেছেন,” কেউ কেউ কবি। সবাই কবি নয়।”

সবাই সব জানবেন ও পারবেন এমন মোটেও নয়। সবাইকে সবকিছু পারতেই হবে এমনও নয়। আগ্রহ থাকা ভালো, কিন্তু তাই বলে রিকশাওয়ালাকে দিয়ে প্লেন চালাতে দিলে কি হবে সেটা সহজেই অনুমেয়।

কামরুজ্জামান কামু ভালো কবিতা লিখেন। উনার আগ্রহ আছে সিনেমাতেও। ভালো। কিন্তু তাই বলে উনি প্রয়োজনীয় দক্ষতা ও চর্চা ছাড়াই একটা সিনেমা ডিরেক্ট করে বসবেন! অদ্ভূত!

”ডিরেক্টর” তাঁর বানানো, তাঁর ভাষায় একটা সিনেমা। উনি বলতেই পারেন। কিন্তু এটা না সিনেমা, না নাটক, না আর কিছু। আমি জানি না এটা কি হয়েছে। কিন্তু সিনেমা হয়নি সে বিষয়ে নিঃসন্দেহ। প্রায় দেড় ঘন্টা প্রাণপণে চেষ্টা করেও সেখানে সিনেমা পাইনি। মারজুক, মোশাররফরা এখানে কি করেছেন সেটাও পরিষ্কার না। অভিনয় যে করেননি তা বোঝা যায়।

কামু চেষ্টা করেছেন সিনেমা বানানোর। আমি তাও করিনি। বড় বড় কথা বললাম ওনাকে নিয়ে। জ্ঞান দিতে চাইলাম। ধৃষ্টতা কম নয় আমার। কামুর সাথে আমি তুলনাতে আসাটা হাস্যকর। তথাপি, ওনার কবিতা পড়েছি, ভালোও লেগেছিল।

কবি কামরুজ্জামান কামু’র কাছ হতে আরো অনেক ভালো ভালো কবিতা পাওয়ার আশাবাদ


মন্তব্য করুন