Select Page

এ ভীষণ ‘হাওয়া’!

এ ভীষণ ‘হাওয়া’!

তোমরা হয়তো দেখতে পাও অথবা শুনতে,

আর আমি বলছি চোখ বন্ধ কর

কানটাকেও রেখোনা সজাগ

সম্পর্কের ভিতরে যেতে আরেকটু নিবিড় হও

নিঃশ্বাসে ভরে নাও হাওয়া…

এ’কটা লাইন দিয়ে কী বোঝাতে চেয়ে মেজবাউর রহমান সুমন? জনপ্রিয় টিভি ফিকশন নির্মাতার প্রথম ছবি ‘হাওয়া’র পোস্টার অনলাইনে রিলিজ করে এ কথা বললেন। যেন নতুন কিছু শোনাবেন তিনি। আসলেই? পোস্টারও বলছে তা-ই।

একটি মাছ ধরার ট্রলারে কিছু প্রান্তিক মানুষ ঝড়ের কবলে পড়েছেন। দমকা খাওয়ায় তাদের উড়ে যাবার উপক্রম। এর মাঝে একজন অজ্ঞান অবস্থায়। তার কলার ধরে রেখেছেন অন্যজন। পিছন থেকে একজন টর্চ লাইটের আলোয় তাকে দেখছেন। নৌকায় একজন নারীও আছেন। সবাই মিলে যেন দমকা হাওয়াকে থামাতে চাচ্ছেন।

জানা গেছে, এ পোস্টারের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিক প্রচারণা শুরু করেছে ‘হাওয়া’। চলতি মাসে জমা পড়বে সেন্সরে। ছাড়পত্র মিললেই তবে মুক্তির ঘোষণা আসবে। তবে ঈদে মুক্তি পাচ্ছে না বলে জানালেন নির্মাতা সুমন। তিনি বলেন, ‘দুই ঈদের কোনো ঈদেই আমাদের ছবিটি মুক্তি পাবে না। এমন কি দুই ঈদের মাঝেও না। তবে কোরবানির ঈদের পর মুক্তির ইচ্ছে রয়েছে।’

‘হাওয়া’র গল্প সম্পর্কে সুমন বলেন, ‘হাওয়া হচ্ছে এ কালের রূপকথার গল্প। যে রুপকথার প্রধান উপাদান সমুদ্র, ঢেউ আর একটি ট্রলার। আবহমান কাল ধরে চলে আসা যে রুপকথা আমরা শুনে এসেছি ‘‘হাওয়া’’ সেই রুপকথা নয়, তবে এই চলচ্চিত্রে রুপকথা স্বয়ং নিজে এসে আধুনিক রুপে হাজির হয়। এই সময়ে যে অস্থিরতা তা থেকে বেরিয়ে এসে এক ধরনের ধ্যানমগ্ন নির্মল যাত্রার নাম হাওয়া।’

আরো বলেন, ‘সম্পর্ক, প্রতিশোধ এবং মৃত্যুকে উপজীব্য করে এই গল্প নির্মাণ করা হয়েছে। এটি মাটির গল্প নয় বরং পানির গল্প। সমুদ্র পাড়ের মানুষ প্রধান উপজীব্য হলেও সমুদ্র পাড়ের গল্প নয় বরং সমুদ্রের গল্প। সমুদ্র এমন এক বিশালতার নাম যার পাড়ে বসে আমরা সাধারণ মানুষ এর সৌন্দর্য দেখি, রোমান্টিসিজমে ভুগি কিন্তু জানতে পারিনা সমুদ্রের ভেতরের গল্প। সমুদ্র পাড়ের মানুষগুলোর গল্প জানলেও সমুদ্রে চলাচলরত মানুষগুলোর সমুদ্রের ভেতরের গল্প জানি না। সমুদ্র থেকে ফেরার গল্প আমরা জানি কিন্তু না ফেরার গল্প আমরা ক’টা জানি? এই না জানা মৌলিক গল্পটিই আমি আমার এই সিনেমার মাধ্যমে জানাতে চাই।’

সেন্ট মার্টিন দ্বীপে চিত্রায়িত ‘হাওয়া’র বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেছেন শরিফুল রাজ, নাজিফা তুষি, চঞ্চল চৌধুরী, সোহেল মন্ডল। এর চিত্রগ্রহণ শুরু হয়েছিলো ২০১৯ সালে। চিত্রগ্রহণ করেছেন কামরুল হাসান খসরু। এটি প্রযোজনা করেছে সান কমিউনিকেশন।

মেজবাউর রহমান সুমন টেলিভিশন নাটক নির্মাণে এসেই করেছিলেন বাজিমাত। ২০০৬ সালে তার প্রথম নাটক ‘দখিণের জানালাটা খোলা, আলো আসে-আলো ফিরে যায়’। এরপর ‘তারপরও আঙ্গুরলতা নন্দকে ভালোবাসে’, ‘পারুলের দিন’, জ্যোৎস্না নদী ও রফিকের কিছু কল্পদৃশ’, ‘সুপারম্যান’, ‘কফি হাউজ’ নাটকগুলো মেজবাউর রহমান সুমনকে করে তুলেছে অনন্য ও ব্যাতিক্রম। এরপর প্রায় দীর্ঘ নয় বছর তাকে নাটক নির্মাণে দেখা যায়নি, ২০১০ সালের পর থেকে নিজেকে গুটিয়ে নেন। থিতু হন বিজ্ঞাপণ নির্মাণে। বর্তমানে তার হাতে রয়েছে জয়া আহসান প্রযোজিত সরকারি অনুদানের ছবি ‘রইদ’।


মন্তব্য করুন