![অনুদান পাওয়ার সাত বছর পর মুক্তি পাচ্ছে ‘আজব কারখানা’](https://i0.wp.com/bmdb.co/wp-content/uploads/2024/06/ajob_karkhana1_bmdb_image.jpg?resize=150%2C150&ssl=1)
গল্প চুরির জবাবে যা বললেন ‘জেকে ১৯৭১’ পরিচালক
বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে সহায়তা করার জন্য ফ্রান্সের অর্লি বিমানবন্দরে পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইনসের (পিআইএ) একটি বিমান ছিনতাই করেছিলেন ফরাসি যুবক জ্যঁ কুয়ে। তার সেই বীরত্বগাঁথাকে ঘিরেই ফাখরুল আরেফিন খান নির্মাণ করেছে ‘জেকে ১৯৭১’। মুক্তির আট দিনের মাথায় ছবিটির বিরুদ্ধে গল্প ‘চুরি’র অভিযোগ এনেছেন নির্মাতা ও সংগীতশিল্পী অমিত মল্লিক।
![](https://i0.wp.com/bmdb.co/wp-content/uploads/2023/03/amit_mallick_fakhrul_arifeen_khan_bmdb_image.jpg?resize=819%2C446&ssl=1)
গতকাল শনিবার (১১ মার্চ) রাতে সোশ্যাল হ্যান্ডেলে অমিত জানান, এই ঘটনা নিয়ে তিনিই প্রথম সিনেমার প্রস্তুতি নিয়েছিলেন। যেটার নাম ‘পশ্চিম থেকে পূর্ব’। তার চিত্রনাট্য, কপিরাইটের সনদ, ফাখরুল আরেফিন খানকে পাঠানো ইমেইলের ছবি শেয়ার করেছেন।
সেই সঙ্গে অভিযোগ, “২০১৫ থেকে ২০১৭, দুই বছরের পরিশ্রম আমাদের টিমের। কিচ্ছু বলতে ইচ্ছে করছে না। কাউকে ছোট করতেও ইচ্ছে করছে না। সবাই তো চেনা মানুষ। আমরা গিয়েছিলাম অগ্রজ হিসাবে টেকনিক্যাল বিষয়গুলোর বিষয়ে পরামর্শ নিতে। ফলাফল, সিনেমা বানিয়ে রিলিজ অব্দি হয়ে গেলো! ওহ, যারা বোঝেননি, আমি গত ৩ মার্চ রিলিজ হওয়া ‘জেকে ১৯৭১’ সিনেমার কথা বলছি। তবে আমার বানানো নয়। আমার কষ্ট, আমার ভাবনা, আমার ব্রেইন চাইল্ড কেন এভাবে হারাতে হবে?’
তিনি ২০১৮ সালেই এই গল্পের চিত্রনাট্যে কপিরাইট করিয়েছিলেন। সেই চিত্রনাট্য ২০১৭ সালের ৩০ ডিসেম্বর ফাখরুল আরেফিন খানকে ইমেইলে পাঠিয়েছিলেন।
বিষয়টি নিয়ে বাংলা ট্রিবিউনকে অমিত মল্লিক জানান, আইনি জায়গা থেকে বিষয়টি নিয়ে কিছু করার নেই। মূলত নৈতিকতার জায়গা থেকে অভিযোগটি সামনে এনেছেন।
অমিত বললেন, “আমি তখন একটা টিভি চ্যানেলে চাকরি করি। ওই সময়ে শহীদুল ইসলাম ছুট্টু ভাই আমার কাছে গল্পটা নিয়ে আসেন। এই ঘটনাটি আমারও জানা ছিলো না। জানার পর মনে হয়, এটা অসাধারণ একটা গল্প এবং এটা নিয়ে সিনেমা করা যেতে পারে। একটা ভিন্ন অ্যাঙ্গেল থেকে মুক্তিযুদ্ধকে দেখা। এরপর আমরা দুই বছর গবেষণা করেছি, ফরাসি দূতাবাসের সঙ্গে আলাপ করেছি। তো একদিন ছুট্টূ ভাই-ই বললেন, ‘চলো আমরা একটু ফাখরুলের সঙ্গে কথা বলি। ও টেকনিক্যাল বিষয়গুলো ভালো জানে।’ এরপর আমরা ওনার (ফাখরুল আরেফিন খান) অফিসে যাই এবং তিনিও কিছু পরামর্শ দেন। এরপর তিনি বলেন, আরও বিস্তারিত কাজ করা যেতে পারে, আপনি আমাকে চিত্রনাট্যটা ইমেইলে দিয়েন। কথামতো সেটাও করলাম।”
অমিত জানান, এরপর চাকরির সূত্রে টেকনাফে চলে যান তিনি। মাঝে মহামারি করোনা হানা দেয়। বাজেট সংক্রান্ত সংকটেও ছিলেন। সবমিলিয়ে তিনি কাজটি শুরু করতে পারেননি। কিন্তু এর মধ্যেই দেখলেন, ফাখরুল আরেফিন খান এই ঘটনা নিয়ে সিনেমা বানাচ্ছেন।
তার ভাষ্য, ‘তিনি ঘোষণা দেওয়ার পর ছুট্টু ভাই তার কাছে গিয়েছিলেন। জানতে চান, বিষয়টি কেমন হলো! কিন্তু তিনি পুরোপুরি অস্বীকার করলেন। আমাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ, চিত্রনাট্য নিয়ে আলোচনা কিছু মনেই করতে পারছিলেন না!’
![](https://i0.wp.com/bmdb.co/wp-content/uploads/2023/03/jk_1971_bmdb_image-1.jpg?resize=856%2C494&ssl=1)
অভিযোগের জবাবে বাংলা ট্রিবিউনকে ফাখরুল আরেফিন খান বলেন, ‘এই ভদ্রলোককে আমি চিনিই না। তিনি হয়ত একদিন আমার অফিসে এসেছিলেন। চিত্রনাট্য নিয়ে আমার কাছে তো অনেকেই আসে। তাদেরকে আমরা চিত্রনাট্য রেখে যেতে বা ইমেইল করতে বলি, তিনিও হয়ত করেছেন। কিন্তু আমরা সেটা খুলেও দেখিনি। একটা জিনিস ঠিক, তিনি আমাদের আগে হয়ত সিনেমাটা নিয়ে ভেবেছেন। আমরা ২০১৫ সালে সিনেমাটি নিয়ে ভেবেছিলাম, কিন্তু করিনি। ২০২০-এ অবশেষে কাজে হাত দিলাম।’
অভিযোগের বিষয়ে ফাখরুলের স্পষ্ট বক্তব্য, ‘তিনি যে এই প্রশ্ন করছেন, আমরা তো গোপনে সিনেমা বানাইনি। ২০২০ সালেই আমরা ঘোষণা দিলাম, এরপরের বছর ঘটনাটির পঞ্চাশ বছর পূর্তি উদযাপন করলাম, শুটিংয়ের স্থিরচিত্র শেয়ার করলাম। বিভিন্ন গণমাধ্যমে সেসব নিয়ে নিউজ হয়েছে, পরবর্তীতে টিজার, ট্রেলার, সেন্সরের খবরও প্রকাশিত হয়েছে। সেগুলো কি তিনি দেখেননি?’
অমিত মল্লিক কি আপনার সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন? এমন প্রশ্নের জবাবে ফাখরুল আরেফিন খান বলেন, ‘আমার সঙ্গে ব্যক্তিগতভাবে যোগাযোগ করেনি কেউই। আমার তো দুঃখ লাগছে যে, শুনলাম মানুষটা ভদ্রলোক। তিনি নাকি নাট্যচর্চা করেন। আমার কাছে মনে হয়, একজন ভদ্র মানুষের উচিত কোনও অভিযোগ বা দাবি করার আগে যোগাযোগ করা, কথা বলা। দরকার হলে আমার সঙ্গে কথা বলে রেকর্ড করতে পারতো। সবচেয়ে বড় কথা, তার তো কপিরাইট করা আছে। তিনি তো আমার নামে মামলা করতে পারতেন। ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে সব্যসাচী চক্রবর্তী (জেকে ১৯৭১ ছবির অভিনেতা) এসে উদ্বোধনী প্রদর্শনী করে গেলেন, সবাই নড়েচড়ে বসলো ছবিটা নিয়ে। পুরস্কার পেলো। উনি কি তখনও ঘুমাচ্ছিলেন? তিনি উৎসব কর্তৃপক্ষের কাছে কিংবা সেন্সরে একটা চিঠি লিখে দিলেও তো হতো।’
‘জেকে ১৯৭১’র কেন্দ্রীয় চরিত্রে অভিনয় করেছেন কলকাতার সৌরভ শুভ্র দাশ। এছাড়াও আছেন যুক্তরাষ্ট্রের অভিনেতা ফ্রান্সিসকো রেমন্ড, রুশ অভিনেত্রী ডেরিয়া গভ্রুসেনকো, অভিনেতা নিকোলাই নভোমিনাস্কি, পশ্চিমবঙ্গের সব্যসাচী চক্রবর্তী, ইন্দ্রনীল প্রমুখ।