‘জাতীয় পুরস্কারের’ জন্য বছর শেষে সিনেমা মুক্তির তাড়াহুড়ো!
দেড় মাস আগে খুললেও প্রদর্শনের জন্য নতুন সিনেমা পাচ্ছিলেন না হল মালিকেরা। এর মাঝে হুট করে ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহে একসঙ্গে পাঁচের বেশি ছবি মুক্তির ঘোষণা রীতিমতো ‘সাড়া’ ফেলেছে ঢালিউডে।
চলচ্চিত্রসংশ্লিষ্টদের বরাত দিয়ে প্রথম আলো বলছে, এর পেছনে রয়েছে জাতীয় পুরস্কার পাওয়ার চেষ্টা।
পত্রিকাটি এক প্রতিবেদন জানায়, আগামী বছরের জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারের তালিকায় ছবিটি দেখতে অনেকেই বছর শেষে ছবিটি নামকাওয়াস্তে মুক্তি দিচ্ছেন। কারণ, করোনা সংক্রমণের কারণে এ বছর ছবি মুক্তি পেয়েছে কম। জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারের দৌড়ে তাই এগিয়ে থাকার উদ্দেশ্যে বছর শেষে ছবি মুক্তির হিড়িক। কারণ, আগামী বছর জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারের তালিকায় ছবির নাম লেখাতে হলে এ বছরই সিনেমা হলে ছবিটি মুক্তি পেতে হবে।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র প্রদর্শক সমিতির সভাপতি কাজী শোয়েব রশীদ জানান, ‘শুনেছি এই মাসে বেশ কয়েকটা ছবি মুক্তি পাবে। এতগুলো ছবি মুক্তির বিষয়টি আনন্দের। কিন্তু এমনও শুনছি, কেউ নামমাত্র ছবি মুক্তির চিন্তা করছেন। উদ্দেশ্য হতে হবে প্রেক্ষাগৃহ বাঁচানো কিংবা দর্শকদের বিনোদন দেওয়া। তা যদি না হয়, বিষয়টি হবে খুবই দুঃখজনক।’
বিগত ১১ মাসে দেশে মাত্র ১১টি ছবি মুক্তি পেয়েছে। নিউ নরমালে নতুন ছবির অভাবে আবার বন্ধ হয়ে গেছে কিছু সিনেমা হল। এর মাঝে উল্লেখযোগ্য রিলিজ ছিল মাসুদ হাসান উজ্জ্বলের ‘ঊনপঞ্চাশ বাতাস’।
ডিসেম্বরে মুক্তির মিছিলে থাকা ছবির মধ্যে আছে প্রিয় কমলা, বিশ্বসুন্দরী, টুঙ্গিপাড়ার মিয়া ভাই, নবাব এলএলবি, রূপসা নদীর বাঁকে এবং আমি তোমার রাজা, তুমি আমার রানি ছবির নামই বেশি শোনা যাচ্ছে।
এর মধ্যে শাকিব খান, মাহিয়া মাহি ও স্পর্শিয়া অভিনীত নবাব এলএলবি শুধু অনলাইনে মুক্তি পাবে, বাকি ছবিগুলো প্রেক্ষাগৃহ ও টেলিভিশন—দুই মাধ্যমে মুক্তি দেওয়ার সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করেছেন প্রযোজক ও পরিচালকেরা।
কোনো ছবির মুক্তি দেওয়ার জন্য তড়িঘড়ি করে কাজ শেষ করা হচ্ছে। যেমন প্রিয় কমলা ছবিটির কথাই বলি। ১৬ ডিসেম্বর উপলক্ষে দেশের দুটি মাল্টিপ্লেক্স আর চ্যানেল আইয়ে ওয়ার্ল্ড প্রিমিয়ার হবে অপু বিশ্বাস ও বাপ্পী অভিনীত ইমপ্রেস টেলিফিল্মের ছবি প্রিয় কমলা।
সেপ্টেম্বরে ছবিটি নির্মাণের পরিকল্পনা করা হয়। এরপর নায়ক-নায়িকা চূড়ান্ত করেই ১২ নভেম্বর থেকে শুটিং শুরু করেন পরিচালক শাহরিয়ার নাজিম। প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান সূত্র জানিয়েছে, মাত্র ১৮ দিনে ছবিটির পুরো শুটিং শেষ করেছেন পরিচালক।
টুঙ্গিপাড়ার মিয়াভাই ছবির প্রযোজক সেলিম খান জানান, ১৬ ডিসেম্বর উপলক্ষে ছবিটি মুক্তির পরিকল্পনা করে রেখেছেন। সেন্সর ছাড়পত্র এর মধ্যে পেয়ে গেলেই মুক্তি দিয়ে দেবেন। তা না হলে ছবিটি মার্চের আগে মুক্তি দেওয়া হবে না।