Select Page

জিরো ডিগ্রীঃ একটি নতুন কবিতা

জিরো ডিগ্রীঃ একটি নতুন কবিতা

Zero Degree (1)

জানি আমি তুমি রবে-আমার হবে ক্ষয়
পদ্মপাতা একটি শুধু জলের বিন্দু নয়।
এই আছে, নেই-এই আছে নেই-জীবন চঞ্চল;
তা তাকাতেই ফুরিয়ে যায় রে পদ্মপাতার জল
বুঝেছি আমি তোমায় ভালোবেসে।

…… একটি পুরনো কবিতা। জীবনানন্দ দাসের।  পুরনো ভাল লাগাকে সঙ্গী করে নতুনের অপেক্ষায় চেয়ে থাকা অবিরত।  সেই অপেক্ষার অবসরেই এক টুকরো আনন্দের অনুভূতি জাগানিয়া জিরো ডিগ্রী দেখতে বসে প্রথম পলকের ভিজুয়্যালাইজেশনে বলতে হলো বাহ! এটা আসলেই আলাদা।  টাইটেল অ্যানিমেশনে যত্নের ছাপ দেখে তাই মনে বদ্ধমূল ধারনা হলো পুরো ছবি নির্মানে আন্তরিকতার কোন কমতি হয় নি।

আমাদের দৈনন্দিন জীবন, সামাজিক মুল্যবোধের অবক্ষয়, প্রেম আর প্রতারণার মত বিষয়গুলোই উঠে এসেছে কাহিনীতে, তবে তা সিনেমায় বলেই একটু বেশি মাত্রায় সিনেমাটিক। পরিচালক অনিমেষ আইচের পরিচালনায় একটি নাটকই দেখেছিলাম আগে, “ফেরার পথ নেই, থাকে না কোন কালে”।  তা দেখে যে প্রত্যাশা ছিল সেটা পুরণ করেছে “জিরো ডিগ্রী“।  তবে প্রযোজক মাহ্ফুজের যে দাবি ছিল, এই ছবি একবার কেউ দেখতে বসলে তাকে পুরোটা দেখতেই হবে, এটা মেনে নেয়া যায় না এ জন্য যে ছবির গল্পে সেই জোরটা নেই।  রুহীকে নাকি পাঁচ রূপে দেখা গেছে এই ছবিতে। আমি খুঁজে পেলাম না অবশ্য যদি পোষাক পরিবর্তনকেই বোঝানো হয় তবে হয়তো আরো বেশি রুপেই দেখা গেছে। সবার অভিনয় ছিল সাবলীল।  রাতের ঢাকা সহ ক্যামেরার প্রত্যেকটি কাজই দৃষ্টিনন্দন। সম্পাদনাও চমকপ্রদ। সবচেয়ে বাজে আর বিরক্তিকর লেগেছে শেষাংশে পুলিশের তদন্ত কাজ। সব রহস্যই যখন দর্শকদের জানা শুধু শুধু কতগুলো সময় তারা নষ্ট করলেন। এছাড়া অনেক জায়গাতেই দর্শকদের ধৈর্য্য পরীক্ষা দিতে হয়েছে শ্লথ গতির কারনে।

তারপরও আমাদের চলচ্চিত্রের দুরাবস্থায় জিরো ডিগ্রী একটি নতুন মাত্রা তো বটেই, কোণ টা ০থেকে ঘুরে ১৮০ হয়ে ৩৬০ ডিগ্রী  পর্যন্ত পৌঁছে  যাবে অচিরেই সে প্রত্যাশারও। ছবির শেষাংশে আনন্দধারা বহিছে ভুবনে গানের ব্যবহার যেমন চিত্তাকর্ষক ও প্রশংসার দাবিদার তেমনি অন্য একটি অংশে আবার পরিচালকের প্রিয় একটি রবীন্দ্রসংগীতের দৃষ্টিনন্দন উপস্থাপন শুনতে দর্শকদের চার মিনিট বাধ্য করা শাস্তিস্বরুপও। হয়তো তা নান্দনিকতা প্রকাশে সহায়ক কিন্তু নান্দনিকতার অপর নাম তো শুধু নিরানন্দ নয়।


মন্তব্য করুন