![অনুদান পাওয়ার সাত বছর পর মুক্তি পাচ্ছে ‘আজব কারখানা’](https://i0.wp.com/bmdb.co/wp-content/uploads/2024/06/ajob_karkhana1_bmdb_image.jpg?resize=150%2C150&ssl=1)
ডিপজল কমপ্লেক্স
ডিপজলকে সাইকোলজিক্যাল অ্যাঙ্গেল থেকে ভাবলে তার কমপ্লেক্সের বিষয়টাই মুখ্য হয়ে ওঠে। সেটা হচ্ছে তার নিজেকে জানানোর ক্রাইসিস বা প্রবল ইচ্ছা। যে-কোনোভাবেই হোক তার অস্তিত্ব তাকে জানান দিতেই হবে সিনেমার পর্দায় এটাই তার কমপ্লেক্সকে তুলে ধরে।
![](https://i0.wp.com/bmdb.co/wp-content/uploads/2018/01/dipjol.jpg?resize=750%2C390&ssl=1)
জসিমের ‘হাবিলদার’ ছবিতে যখন লিমার নায়ক ছিল তখন তার নায়ক হয়ে সিনেমায় নিজেকে জানানোর প্রবল ইচ্ছা কাজ করত। তারপর ভয়ঙ্কর নৃশংসতার পথ বেছে নিয়ে অশ্লীল দৃশ্য, সংলাপে ভরপুর খিস্তিখেউরের মাধ্যমে নিজেকে দর্শকের সামনে লাইমলাইটে নিয়ে এসেছিল। কারণ দর্শক এত পরিমাণ নৃশংসতা সিনেমায় তার আগে দেখেনি। যেটা আগে কেউ দেখেনি তখন যে সেটা দেখাতে পারে সে জনপ্রিয় হয়ে যায় যদিও ডিপজলের ক্ষেত্রে তা চিপ পপুলারিটির পর্যায়ে পড়েছিল। হুমায়ুন ফরীদি, রাজিব, এটিএম শামসুজ্জামানদের ক্লাসকে স্পর্শ করতে না পারার ব্যর্থতা। সেজন্য তাঁদের ক্লাসের তুলনায় ডিপজল টিপিক্যাল ভিলেন। তাঁদের পর্যায়ে নিজেকে নিতে পারবে না সেজন্যই একজন ডিপজলের সহজ উপায়ই ছিল পর্দায় এমন কিছু করা যা আগে কেউ করেনি। সেজন্য কথায় কথায় গলা কাটার দৃশ্য, অশ্লীল সংলাপ (খাড়াও ভাতিজা যন্ত্রটা দেখাইতেছি মাগার চোখ বন্ধ করার পারবা না), অশ্লীল অঙ্গভঙ্গি এসবই ছিল তার লাইমলাইটে আসার একমাত্র উপায় এবং এসবে সফলও শতভাগ। তার সেই সফলতা আমাদের ইন্ডাস্ট্রিকে অন্তত দশ বছর পিছিয়ে দিয়েছে যেটা হয়তো সচেতন দর্শক উপলব্ধি করে, সবাই করে না।
![](https://i0.wp.com/bmdb.co/wp-content/uploads/2024/05/habildar_dipjol_bmdb_image.jpg?resize=571%2C860&ssl=1)
এরপর ডিপজল কমপ্লেক্সের পরের ধাপ ছিল প্রযোজক হয়ে ওঠা যেটাকে অনেকে বিশাল কিছু মনে করে। এতে ইন্ডাস্ট্রির কিছু লাভ যে হয়নি তা নয় কিন্তু গাছের গোড়া কেটে আগায় পানি ঢালা খুব বড় কিছুকে মিন করে না। তাই প্রযোজক ডিপজলের আড়ালেও অশ্লীল সময়ের রাজত্ব করা ডিপজলকে দর্শক ভুলে যায় না বরং সেটাই তার মূল ইমেজ হিসেবে দর্শকের কাছে প্রতিষ্ঠিত হয়ে যায়। প্রযোজক ডিপজল সিনেমায় প্রথমে নায়কের বড়ভাই, কারো চাচা, স্বামী, কাজের মানুষ ইত্যাদি ভূমিকায় থেকে পরে আবার নায়কের ভূমিকায় চলে আসে। কিন্তু জসিম আমলে সাইড নায়ক থাকা ডিপজল আর জোর করে অশ্লীলতা পরবর্তী সময়ে নায়ক হতে চাওয়ার মধ্যে বড় পার্থক্য ধরা পড়ে। এর মাধ্যমে ডিপজলের এই সময়ের নায়ক হয়ে ওঠার যে পালাবদল সেটি আপগ্রেড জেনারেশনের কাছে আর গ্রহণযোগ্যতা পায়নি তাই ট্রলে ভেসে যায়। কিন্তু ডিপজল তাতে দমে যায় না। নিজের অস্তিত্বকে জানান দিতে তার সে কার্যক্রম অব্যাহত থাকে।
![](https://i0.wp.com/bmdb.co/wp-content/uploads/2024/05/dipjol_bmdb_image.jpg?resize=748%2C900&ssl=1)
![](https://i0.wp.com/bmdb.co/wp-content/uploads/2024/05/dipjol1_bmdb_image.jpg?resize=640%2C816&ssl=1)
ডিপজল কমপ্লেক্স এভাবে একটি চলমান প্রক্রিয়া যার থাকাটা থেকেই যাবে সিনেমাটা সিনেমা হয়ে উঠল কিনা সেটা এখানে কোনো ম্যাটারই না, ম্যাটার হলো তার সিনেমায় থেকে যাওয়াটা। ২০২৪ সংখ্যাটাও তার কাছে ম্যাটার না, ম্যাটার না এই সালে দাঁড়িয়ে সিনেমা আসলে কেমন হওয়া উচিত, তারটা যে সিনেমা হয়ে উঠতে পারছে না এ সময়ে সেটাও ম্যাটার করে না তার কাছে কারণ তার মনস্তত্ত্বে এটা তার সময়ের ২০০৪। এটাকে আপনি চেষ্টা ভাবলে চেষ্টা, ছেলেমানুষি ভাবলে ছেলেমানুষি আরো কিছু ভাবলে আরো কিছু। ২০২৪-এ দাঁড়িয়ে শাকিব খান আমলের রাজত্বের সময়েও ডিপজল তার সিনেমা নিয়ে ঠিকই হাজির হয় কারণ একটাই নিজেকে সিনেমার পর্দায় কোনো না কোনোভাবে রাখা, দর্শককে বুঝিয়ে বা জানিয়ে দেয়া যে দেখো আমি আছি। এই ‘আছি’ পরিচয়ই ডিপজলের সবচেয়ে বড় কমপ্লেক্স যার কোনো শেষ নেই।