Select Page

প্রথম আলো বিরোধী শত সংস্কৃতিসেবীর মাঝে আছেন পরিচিত অভিনয়শিল্পীরাও

প্রথম আলো বিরোধী শত সংস্কৃতিসেবীর মাঝে আছেন পরিচিত অভিনয়শিল্পীরাও

কিছুদিন আগে প্রথম আলোর বিরুদ্ধে মানববন্ধনে অংশ নিয়ে আলোচনায় এসেছিলেন তারিন, সুইটি, উর্মিলা, রিয়াজের মতো পরিচিত অভিনয়শিল্পীরা। তবে পত্রিকাটির দিকে তোড় দাগার মতো শিল্পী যে কম নেই, তা বোঝা গেল ৩ এপ্রিলের আরেকটি বিবৃতিতে। যেখানে মহান স্বাধীনতা দিবসে প্রথম আলোর ‘রাষ্ট্রবিরোধী ষড়যন্ত্রমূলক’ সংবাদ প্রচারের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন দেশের শত সংস্কৃতিসেবী।

একুশে পদকপ্রাপ্ত ও স্বাধীনতা পুরস্কারপ্রাপ্ত নাট্যজন আতাউর রহমানের পাঠানো বিবৃতিতে বলা হয়, লাখো শহীদের আত্মত্যাগে অর্জিত স্বাধীনতা ও গণতন্ত্রকে অর্থবহ করে তুলতে, আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা ও জবাবদিহি নিশ্চিত করতে এবং জনগণের অধিকার সুনিশ্চিত করতে সংবাদমাধ্যমের ভূমিকা অনস্বীকার্য।

বিবৃতিতে তারা বলেন, আমাদের স্বাধীনতা সংগ্রাম থেকে শুরু করে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার সংগ্রাম, অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ বিনির্মাণের সংগ্রাম ও যুদ্ধাপরাধীদের বিচার আন্দোলনে এদেশের সংবাদ মাধ্যম যথেষ্ট সাহসী ও অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছে এবং করে যাচ্ছে। বিভিন্ন সময় স্বৈরশাসনের রক্তচক্ষুকে উপেক্ষা করে এদেশের গণমাধ্যমকর্মীরা যথেষ্ট সাহসিকতা ও সততার সঙ্গে তাদের পেশাগত দায়িত্ব পালন করেছেন।

কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে আমরা গভীর উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ্য করেছি যে, দৈনিক প্রথম আলো নামের পত্রিকাটি ২৬ মার্চ মহান স্বাধীনতা দিবসে একটি বিভ্রান্তিকর সংবাদ ও ছবি প্রকাশ করেছে, যেখানে আমাদের মহান স্বাধীনতা, স্বাধীনতার অঙ্গীকারকে হেয় এবং প্রশ্নবিদ্ধ করা হয়েছে। সংবাদ প্রকাশের নামে কেউ যদি আমাদের রাষ্ট্রের মূলভিত্তি নিয়ে প্রশ্ন তোলে, সেটি কখনোই গ্রহণযোগ্য হতে পারে না।

ইতোমধ্যে প্রমাণিত হয়েছে— প্রকাশিত সংবাদটি নিছক ভুল নয় বরং সুস্পষ্টভাবে প্রতীয়মান হয়েছে যে, এটি উদ্দেশ্যমূলকভাবে প্রকাশ করা হয়েছে। এই পত্রিকাটির এ ধরনের উদ্দেশ্যমূলক সংবাদ প্রকাশের ঘটনা আমরা আগেও প্রত্যক্ষ করেছি।

বিভিন্ন সময় বাংলাদেশকে একটি অকার্যকর ও ব্যর্থ রাষ্ট্র হিসেবে প্রমাণে দেশি-বিদেশি অপতৎপরতা চলেছে। যেকোনও ইস্যুকে কেন্দ্র করে অনেকেই আমাদের স্বাধীনতা নিয়ে প্রশ্ন তোলে। দুঃখজনক হলেও সত্য, প্রথম আলো পত্রিকাটিকেও বিভিন্ন সময়ে সেই ধরনের একটি ভূমিকায় অবর্তীণ হতে দেখা যায়। আমার দ্ব্যর্থহীন কণ্ঠে এই ধরনের অপতৎপরতা ও জঘন্য কাজের তীব্র নিন্দা ও ক্ষোভ জানাই।

আমরা সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতায় বিশ্বাসী। দেশ ও জনগণের প্রতি সংবাদ মাধ্যমের দায়িত্বশীলতা ও দায়বদ্ধতা অনেক। কিন্তু সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতার নামে সেই দায়িত্বশীলতা ও দায়বদ্ধতা অস্বীকার করার কিংবা প্রশ্নবিদ্ধ করার কোনও সুযোগ নাই।  অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টির উদ্দেশ্যে বানোয়াট তথ্য পরিবেশন কোনোক্রমেই সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা হতে পারে না।

তাই দায়িত্বশীল নাগরিক হিসেবে আমরা নিম্ন স্বাক্ষরকারী ব্যক্তিবর্গ যথাযথ তদন্ত সাপেক্ষে এই  ধরনের ষড়যন্ত্রমূলক কর্মকাণ্ডের মূলোৎপাটন করে জড়িতদের আইনের আওতায় আনার দাবি জানাচ্ছি। পাশাপাশি প্রকাশিত সংবাদটিতে একজন শিশুকে ব্যবহার করার বিষয়টি সংবাদপত্র প্রকাশের নীতিমালা পরিপন্থী কিনা, সেটি খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি করছি। একইসঙ্গে সৎ ও বস্তুনিষ্ঠ সাংবাদিকতাকে উৎসাহিত করতে ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্টসহ কোনও আইনের যেন অপপ্রয়োগ না হয়, সেটিও নিশ্চিত করা প্রয়োজন বলে মনে করছি।

বিবৃতিতে নিম্নলিখিত সংস্কৃতিসেবীরা  সই করেন—অভিনেতা এ এম আলমগীর, পীযূষ বন্দোপাধ্যায়,  ফেরদৌস আহমেদ, রিয়াজ আহমেদ, আজিজুল হাকিম,সাজু খাদেম, তুষার খান, ফারুক আহমেদ, প্রাণ রায়, শংকর শাঁওজাল, মানস বন্দোপাধ্যায়, ফজলুর রহমান বাবু, এহসানুল হক মিনু, আহমেদ রুবেল, জায়েদ খান, তারানা হালিম, রোজিনা, মনিরা ইউসুফ মেমী, মোমেনা চৌধুরী, মেহের আফরোজ শাওন, সুজাতা আজিম, আফসানা মিমি, লাকী ইনাম, চিত্রলেখা গুহ, অরুনা বিশ্বাস, শমী কায়সার, রোকেয়া প্রাচী, পুর্ণিমা, অপু বিশ্বাস, সুবর্ণা মুস্তাফা, আফরোজা বানু, ফাল্গুনী হামিদ, শামীমা ইসলাম তুষ্টি, নিপুণ, মাহিয়া মাহী, তারিন, জ্যোতিকা জ্যোতি ও মাহমুদ কলি।

কণ্ঠশিল্পী শাহীন সামাদ, বীর মুক্তিযোদ্ধা ও একাত্তরের শব্দসৈনিক একুশে পদকপ্রাপ্ত কণ্ঠশিল্পী মনোরঞ্জন ঘোষাল, বুলবুল মহলানবীশ, তিমির নন্দী, এস ডি রুবেল, আবদুল কুদ্দুস বয়াতী, অরুপ রতন চৌধুরী, ফাতেমাতুজ জোহরা, ফকির শাহাবুদ্দিন, কিরণ চন্দ্র রায়, মমতাজ বেগম, মুজিব পরদেশী, নকুল কুমার বিশ্বাস, পথিক নবী, আলম দেওয়ান, লিয়াকত আলী লাকী, লিলি ইসলাম,  চন্দনা মজুমদার, খায়রুল আনাম শাকিল, অদিতি মহসীন, মলয় কুমার গাঙ্গুলী, আবিদা সুলতানা, সংগীতশিল্পী রফিকুল আলম, এ এম এম মহীউজ্জামান চৌধুরী ময়না, শুভ্র দেব, নৃত্যশিল্পী অনীক বসু, মিনু হক, নাট্যকার জিনাত হাকিম, ম. হামিদ, ঝুনা চৌধুরী।

আবৃত্তিশিল্পী শিমুল মুস্তাফা, আহকাম উল্লাহ,ড. শাহাদাৎ হোসেন নিপু, নির্মাতা বদরুল আনাম সৌদ, কবি নির্মলেন্দু গুণ, মুহাম্মদ নুরুল হুদা, অসীম সাহা, মুহাম্মদ সামাদ, তারিক সুজাত, রবীন্দ্র গোপ, জাফর ওয়াজেদ, আসলাম সানী, মিনার মনসুর, শিহাব শাহরিয়ার, কথাসাহিত্যিক হরিশংকর জলদাস, সংস্কৃতিজন গোলাম কুদ্দুছ, আসাদুজ্জামান নূর, চিত্রশিল্পী হাশেম খান, আবুল বারক আলভী, মো. মনিরুজ্জামান, নিসার হোসেন, ফয়জুল আলম পাপ্পু, নির্মাতা মাসুদ পথিক, চলচ্চিত্র সম্পাদক জুনায়েত হালিম।

চিত্রশিল্পী হামিদুজ্জামান খান, দুলাল চন্দ্র গাইন,  জামাল আহমেদ, কামাল পাশা চৌধুরী, সঞ্জীব দাস অপু, ছড়াকার আমিরুল ইসলাম, শিশুসাহিত্যিক আনজীর লিটন এবং উপস্থাপক আনজাম মাসুদ।

/সূত্র: বাংলা ট্রিবিউন ও নিউজ বাংলা


মন্তব্য করুন