প্লট, বাজেট ও অভিনেতা মিলিয়ে সম্ভাবনা ছিল ‘রুমি’র
ভিকি জাহেদের কনটেন্টের সমালোচনা করি ঠিক, তবে তার কনটেন্ট শুনলেই দেখার আগ্রহ জাগে। অস্বীকার করার উপায় নেই, তার চিত্রনাট্য কিছুটা স্লো ও কিছু অংশ ফোর্সড মনে হলেও শেষের টুইস্টের জন্য শেষ পর্যন্ত অডিয়েন্সের আগ্রহ থাকে। আর তার এবারকার ওয়েব সিরিজ ‘রুমি’তে অভিনয় করেছেন আরেক প্রিয় অভিনেতা চঞ্চল। তাই আগ্রহ বেশি ছিল।
ভিকি জাহেদের প্রিয় জনরা থ্রিলার, রুমিও থ্রিলারধর্মী গল্প নিয়ে নির্মিত। একজন সিআইবি অফিসার রুমির কেইস সলভ ও পাশাপাশি তার জীবনে ঘটে যাওয়া কিছু অতিপ্রাকৃতিক ঘটনা নিয়ে গল্প এগিয়েছে। গল্প ও প্লট বেশ ইন্টারেস্টিং ও ইউনিক। তাই প্রায় ৩ ঘন্টার কনটেন্ট পুরোটায় মনযোগ ধরে রাখে।
ভারত-বাংলাদেশ দুই দেশের বেশ কিছু কনটেন্টের মত এটিতেও চাকরি হারানো অফিসার কেস সলভ করে। মূল চরিত্রে অভিনয়কারী চঞ্চল বরাবরের মতো ভালো করেছেন, ভালো লেগেছে তার বেশ কটি আঞ্চলিক ভাষায় সাবলীল সংলাপ দেখে। আরেক মূল চরিত্র শিমুর অভিনয়ও ভালো।
তবে বিরক্ত লেগেছে আরেক সিআইবি অফিসার সজলের অভিনয়। বিগত বেশ কটা কনটেন্টে তার বাচনভঙ্গি বিরক্তির উদ্রেক করছে। সজল বেশ অভিজ্ঞ অভিনেতা, উনার বোঝা উচিৎ নেতিবাচক চরিত্র মানেই কণ্ঠ পরিবর্তন করে কর্কশ ভঙ্গিতে কথা বলা না। ইন্টারোগেশনে আসামি তার জবানবন্দি দিচ্ছে, অথচ তার এবং আসামি কারো এক্সপ্রেশন দেখে মনে হয়নি এটা কোনো ইন্টারোগেশন চলছে।
বাকিদের অভিনয় ও কনটেন্টের সিনেমাটোগ্রাফি বেশ ভালে লেগেছে, বিশেষ করে একেবারে প্রথম সিনে চোখ আটকে যায়। শেরে বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে বেশ কিছু সিন আছে, সেগুলোও বেশ ভালো৷ আরেকটা ব্যাপার ভাল লেগেছে তা হচ্ছে অনেক জায়গায় মাওলানা রুমির সাহিত্যের লাইন ব্যবহার।
তবে রুমির অন্যতম নেতিবাচক দিক মূল কেইসটির বেশ কটা অংশ ফোর্সড লেগেছে। সিন ধরে বললে বেশ কিছু লোপ হোলও বলা যায়(স্পয়লার বলে বললাম না)৷ পাশাপাশি ৩ ঘন্টার কনটেন্টেও সজল ও চঞ্চলের মধ্যকার উষ্ণ সম্পর্কের বিল্ডআপ পাওয়া যায়নি।
সবমিলিয়ে দুর্দান্ত একটি প্লট, ভালো বাজেট ও প্রথিতযশা কজন অভিনয় শিল্পী থাকলেও রুমি প্রত্যাশা অনুযায়ী ভালো হয়নি। ১০ এ হয়তো ৬ পাবে। তবে সিরিজে বেশি কিছু ব্যাপার অমিমাংশিত রয়েছে, সেগুলো সম্ভবত দ্বিতীয় সিজনের জন্য রাখা হয়েছে। সেগুলো ভালোভাবে গাঁথা গেলে খুব চমৎকার দ্বিতীয় সিজন বানানো সম্ভব।