একমাত্র জসিমই সাধারণ মানুষের সাথে রিলেট করতে পেরেছিলেন
বাঙলাদেশের একটা সিনেমার নাম ছিলো ওমর আকবর। খুব সম্ভবত ১৯৯০ সালে মুক্তি পেয়েছিলো সিনেমাটা। কিন্তু আমি দেখেছি ১৯৯৪ সালে গ্রামের একটা সিনেমা হলে।
তখন আমার বয়স দশের মতো। রুবেলের ভক্ত। সেই সিনেমায়ও রুবেল ছিলো, তাই দারুণ উত্তেজনা নিয়ে সিনেমায় গিয়েছি। তো সেইদিন ছিলো ঈদের দিন। আমাদের গ্রাম থেকে ৫ কিলোমিটার দূরে এক গ্রামের সিনেমাহলে আমি আর ভাইজান (ফুফাতো ভাই) এই সিনেমা দেখতে যাই, বিকেলে।
সিনেমাহল মানে বড় একটা ঘর, পেছনে কাঠের বেঞ্চি, সামনে খড় বেছানো। ঈদের দিন হল ভর্তি মানুষ। কাঠের বেঞ্চির এক কোণায় বসে সিনেমা দেখে ফেলি। সিনেমায় রুবেলের সাথে নায়ক জসিম বা জসিমের সাথে নায়ক রুবেল ছিলো। জসিমকে নিয়ে আমি দুই একটা কথা বলে ফেলতে চাই। আমার মনে হয়, বাঙলাদেশের সিনেমায় জসিমই একমাত্র নায়ক যে কিনা অতি সাধারণ মানুষের সাথে রিলেট করতে পেরেছিলো।
অতি সাধারণ বলতে আমি বোঝাতে চাচ্ছি মুদি দোকানদার, বাসের ড্রাইভার, শহরের মাছ বিক্রেতা ইত্যাদি জনদের। ফলত সিনেমায় তার কষ্টগুলো সাধারণ মানুষের কষ্টই হয়ে উঠতো। আর জসিম যখন ফার্স্ট ক্লাস ফার্স্ট হয়ে যেতো ডিগ্রি পরীক্ষায়, তখন স্কুল শেষ না করা সেই লোকটাও যেন পাশ করে ফেলতো জীবনের সব পরীক্ষায়। কিংবা জসিম যখন ধনী হয়ে উঠতো কোন লটারি পেয়ে অথবা ছোট্ট একটা কারখানায় কাজ করতে করতে, তখন এইসব মানুষও জসিমের সাথে সাথে মনে মনে ধনী ফিল করতো সিনেমা দেখতে দেখতে।
জসিমের অ্যাকশান ছিলো তার মতো সহজ সরল, রুবেলের মতো প্যাঁচ ছিলো না, জাস্ট ঘুষি। জসিম চিরকাল আমাদের সেই ভাইটি যে সকল প্রতিবন্ধকতা সহ্য করে পরিবারের বোঝা বইতে বইতে ক্লান্ত এক প্রাণ, সুখের পাখিকে খুঁজে বেড়ায়। ‘পাখিরে তুই দূরে থাকলে, কিছুই আমার ভালো লাগে না….’
যাইহোক, বলছিলাম ওমর আকবরের কথা। সিনেমার গল্প নবাবী আমলের। দুষ্টু নবাবের অত্যাচারে অতিষ্ট মানুষ, মুক্তির পথ খোঁজে। কেউ নবাবের বিরুদ্ধে কথা বললে, তাকে মেরে ত্রাসের সৃষ্টি করে যেন আর কেউ নবাবের বিরুদ্ধে কথা বলার সাহস না পায়। বাই দ্য ওয়ে, আপনারা নিশ্চয়ই শুনেছেন, কাঁচা ধান কাটার ভিডিও যিনি করেছিলেন, তিনি কিন্তু গ্রেফতার হয়েছেন!