![অনুদান পাওয়ার সাত বছর পর মুক্তি পাচ্ছে ‘আজব কারখানা’](https://i0.wp.com/bmdb.co/wp-content/uploads/2024/06/ajob_karkhana1_bmdb_image.jpg?resize=150%2C150&ssl=1)
বেলি ফুলের মালা পরে: কী চমৎকার গানের দিন ছিল
বাংলাদেশের গানের ভাণ্ডারে এন্ড্রু কিশোর নামের যে মহারাজ ছিলেন সেই কিশোরদা গানের ভুবনে মহারাজা হওয়ার পেছনে রেডিওর ভূমিকা ছিলো অপরিসীম। কারণ টেলিভিশন ও অডিও ক্যাসেটের সময়ে একটা প্রজন্ম বেড়ে উঠেছিল, তাকে চিনেছিল শুধু রেডিওতে।
![](https://i0.wp.com/bmdb.co/wp-content/uploads/2022/05/beporwa_ilias_khanchan_diti_bmdb_image.jpg?resize=852%2C501&ssl=1)
এন্ড্রু কিশোর গান গাইতেন চলচ্চিত্রে পর্দার আড়ালে আর সেই সব গানগুলো প্রতিদিন প্রতিবেলায় রেডিওতে বাজতো বা প্রচার হতো। সকাল, দুপুর, বিকেল, সন্ধ্যা, রাত থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত এমন কোন গানের আসর হতো না যেখানে এন্ড্রু কিশোরের কোন না কোন গান প্রচার হতো না। সে সময় মফস্বল থেকে গ্রাম-গঞ্জে মধ্যবিত্ত, নিম্ন মধ্যবিত্ত মানুষগুলোর বিনোদনের প্রধান মাধ্যম ছিল রেডিও আর রেডিওতে প্রচারের গানগুলো বেশিরভাগই ছিল চলচ্চিত্রের নতুন পুরাতন গান।
স্বাধীনতা পরবর্তী বাংলাদেশের সকল লিজেন্ডারি কণ্ঠশিল্পী, গীতিকার, সুরকার, সংগীত পরিচালকদের ক্যারিয়ার গঠনে বাংলাদেশ রেডিওর অবদান ছিল। তবে এন্ড্রু কিশোরের ঘটনাটা একটু আলাদা। গানের ভুবনে তার সেরা ১৫টি বছর কেটেছে পর্দার আড়ালে, যা তার সমসাময়িক ও পরবর্তী কোন কণ্ঠশিল্পীর বেলায় ঘটেনি। রুনা, সাবিনা, খুরশিদ আলম, সৈয়দ আব্দুল হাদী ও অন্যান্যরা মাঝে-মধ্যে হলেও টেলিভিশনে গান গাইতেন। কিন্তু ১৯৮৪-১৯৯৯ পর্যন্ত এন্ড্রু কিশোরকে টেলিভিশনের পর্দায় দেখা যায়নি।
এন্ড্রু কিশোরের প্রসঙ্গটা এ জন্যই আনলাম যে ২০০৫ সাল থেকে এদেশে এফএম রেডিওর একটা হিড়িক পড়েছিল, কিন্তু এতগুলো রেডিও থেকে একটা নতুন কোন কন্ঠ আমরা পাইনি যাকে নিয়ে আমরা গর্ব করতে পারি। সেসব এফএম রেডিও থেকে আমরা পেয়েছিলাম উদ্ভট বাংলিশ ভাষায় কথা বলা কিছু আরজে আর ভূতের গল্প শোনানো কিছু ভূত!
ভিডিওতে যে গানটি দেখতে পাচ্ছেন সেটা হলো ৯০ দশকে বাংলাদেশ রেডিওতে প্রচারিত এন্ড্রু কিশোরের জনপ্রিয় গানগুলোর একটি, যা ছিলো কবির আনোয়ারের ‘বেপরোয়া’ চলচ্চিত্রের গান। বাংলা চলচ্চিত্রের দর্শক নন এমন শ্রোতাদের কাছেও গানটি মুখে মুখে ফিরতো শুধু রেডিওতে প্রচারের মাধ্যমে।
নারীবাদী নারী আজ যেমন এই সমাজে বহুলাংশে চোখে পড়ে ঠিক তেমনি আজ থেকে ৩০ বছর আগেও ছিল, শুধু বেশি আর কম এইটুকু পার্থক্য। নারীবাদী নারীকে উদ্দেশ্য করেই একজন পুরুষের বলা ‘বেলি ফুলের মালা পরে, এক প্রেমিক প্রিয়াকে ঘরে তুলেছে… যারা পুরুষকে মন্দ বলে, তারা এমন পুরুষ কি দেখেছে?’ অর্থাৎ পুরুষ বিদ্বেষী এক নারীবাদী নারীর প্রতি এক পুরুষের দৃষ্টিভঙ্গি বদলানোর আকুতি পুরো গান জুড়ে। অথচ নারীবাদী নারীদের দৌরাত্ম সেদিন আজকের মতো এত ছিল না তবু্ও একজন পরিচালক কতটা দূরদর্শী হলে গল্পের প্রয়োজনে এমন দারুণ একটি গান সৃষ্টি করতে পারেন, যা আজ ৩০ বছর পর এসেও খুবই প্রাসঙ্গিক। আজ যেখানে নাটক, চলচ্চিত্রে, গল্প, কবিতায় নারীবাদী নারীদের আরও বেশি পুরুষ বিদ্বেষী করে তোলার পক্ষে সেখানে এমন আরেকটা সৃষ্টির আশা করা বৃথা। আজ সেই সুন্দর সময়টা নেই সুন্দর মনের মানুষগুলোও নেই! সময়টাকে বড্ড মিস করি!
১৯৯২ সালে মুক্তি পাওয়া ‘বেপরোয়া’ ছবির জন্য গানটি লেখেন পরিচালক কবির আনোয়ার। সুর ও সংগীত করেন আলম খান।